যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী প্রাথমিক অবস্থায় থাকা মানুষের ভ্রুণের সমস্যা দূর করায় সফল হয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছেন৷ ফলে ভবিষ্যতে বংশগত রোগমুক্ত শিশু জন্মদানের পথে বিজ্ঞানীরা আরেকটু এগোলেন বলে মনে করা হচ্ছে৷
বিশেষজ্ঞরা মার্কিন বিজ্ঞানীদের এই সাফল্যের প্রশংসা করেছেন৷ তবে মানুষের ডিএনএ পরিবর্তন করা ঠিক কিনা, তা নিয়ে আরও বিতর্কেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা৷ কারণ জিন সম্পাদনায় বিজ্ঞানীদের সফলতার মানে হচ্ছে, ভবিষ্যতে মানুষ হয়ত এমন কোনো ‘ডিজাইনার’ শিশু অর্ডার করতে পারে, যে (শিশু) ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী চুল কিংবা অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হবে৷
গবেষণা প্রক্রিয়া
গবেষণার লক্ষ্যে বিজ্ঞানীরা এক ব্যক্তির কাছ থেক সমস্যাপূর্ণ শুক্রাণু জোগাড় করেন৷ আর এক নারীর কাছ থেকে নেন স্বাস্থ্যবান ডিম্বানু৷ তারপর গবেষণাগারে ৫৮টি ভ্রুণের জন্ম দেন, যেগুলোর প্রায় অর্ধেক ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার কথা৷ এই ত্রুটিগুলো দূর করতে বিজ্ঞানীরা ‘ক্রিসপার-কাস৯’ নামের একটি জেনেটিক কাঁচি ব্যবহার করেন৷ কাঁচি দিয়ে তাঁরা ডিএনএ-র সমস্যাগুলো শনাক্ত করে ছেঁটে ফেলতে সক্ষম হন৷ ফলে ৫৮টির মধ্যে ৪২টি, অর্থাৎ প্রায় ৭২ শতাংশ ভ্রুণ সুস্থ হয়ে ওঠে৷
ক্রিসপার-কাস৯ কাঁচি কীভাবে কাজ করে, তা একটি ভিডিওর মাধ্যমে তুলে ধরেছে এমআইটি৷
মার্কিন বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা ‘নেচার’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে৷
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ‘ওরেগন হেল্থ অ্যান্ড সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়’-এর পাওলা আমাতো বলেন, তাঁদের গবেষণার ফলকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে৷ এ জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন৷ তাহলে এই পদ্ধতি হয়ত ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বংশগত রোগের হাত থেকে মুক্তি দিতে পারে’, বলেন তিনি৷
ক্রিসপার-কাস৯ কাঁচি দিয়ে ডিএনএ-র সমস্যা দূর করার সাফল্যের হার শতভাগ করা সম্ভব হলেই কেবল, এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে গর্ভাবস্থায় প্রয়োগ করা উচিত, বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা৷
(ডিজি)