অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে গত ২১ আগস্ট ও ২২ আগস্ট উদুল আজহা উৎযাপিত হয়েছে। এই বছর বাঙালিদের বেশিরভাগই ২২ সে আগস্ট ঈদ উৎযাপন করেছেন। সাপ্তাহিক থাকার কারণে বিভিন্ন ঈদ জামাতে উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। অস্ট্রেলিয়ায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয় খেলার মাঠ, মসজিদ, মাসাল্লা, ইসলামিক সেন্টার, কনভেনশন হলে বা কমিউনিটি সেন্টারে। ঈদুল আজহা মানে আমরা কোরবানির ঈদ বলে থাকি সব সময়. কোরবানির ঈদের আমেজ বাংলাদেশের মোট নাই কিন্তু ঈদের আনন্দের কোন কমতি নাই অস্ট্রেলিয়ায়।
অস্ট্রেলিয়া সারা পৃথিবীতে গরু, ভেড়া রূপ্তানি করে বছরে ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি কিন্তু এই বছর রপ্তানি কিছুটা ভাটা পরবে কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায় এই বছর ভয়াভহ খরার কবলে আক্রান্ত। তার প্রভাবে এইবছর যারা কোরবানি দিয়েছেন তাদেরকে গুনতে হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ডলার।
কোরবানি দেয়ার যে ধারাবাহিক নিয়মে বাঙালিরা অভ্যস্ত, সেই নিয়ম কিন্তু একটু ভিন্ন বিদেশের মাটিতে। আবাসিক বাড়িতে কোরবানির পশু কিনে এনে কোরবানি দেয়ার চিন্তাটা ১০০% বাদ দিয়ে কোরবানি দিতে হয়। কারণ একাধিক, প্রথমত: কোন পশুকে জনসম্মুক্ষে জবাই করা অথবা হত্যা করা অমানবিক এবং দণ্ডনীয় অপরাধ , দ্বিতীয়ত: পরিবেশ দূষণ। আর এই দুইটা আইন পালনের দিক থেকে অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর প্রথম সারির একটি দেশ হিসেবে সুপরিচিত। তাই আইন মেনে চলা ছাড়া কোন উপায় নেই।
অস্ট্রেলিয়াতে কোরবানি দিতে মুসলমানরা কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। বেশিরভাগই তাদের কাছাকাছি মুসলিম এসোসিয়েশন/ গ্রোসারী দোকান থেকে আয়োজিত কোরবানির তালিকায় নাম লেখান (যার নামে কোরবানি হবে, খাসি/গরু/ ভেড়া কোনটাতে অংশ নিবেন ইত্যাদি) এবং অস্ট্রেলিয়ান রেজিস্টার করা ‘কসাই খানাতে’ কোরবানির ব্যবস্থা করা হয়। কসাই খানাগুলো, নামের তালিকা ধরে হালাল ভাবে পশু কোরবানি দেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিৎ করে এবং একই দিন অথবা পরের দিন সেই কোরবানির মাংস সরবরাহ করে থাকে। আবার খুব অল্প সংখ্যক বাঙালি/অবাঙালি মুসলমান নিজেদের উদ্দ্যোগে ‘ফার্ম হাউজে’ গিয়ে পশু কিনে অস্ট্রেলিয়ান নিয়ম মেনে কোরবানি করেন এবং ঐখানেই মাংস কেটে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এই কাজটি করেছেন এমন কয়েকজনের মতামত থেকে জানা যায়, ফার্ম হাউজগুলো শহর থেকে অনেক দূরে এবং কাজটি খুবই কষ্টকর হলেও দেশি আমেজ আছে বলেই তারা উৎসাহী হয়ে এই কাজটি করেন।
সিডনিতে বাংলাদেশি মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সংগঠন অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম ওয়েলফেয়ার প্রতিবছরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কোরবানির ব্যবস্থা করে থাকেন। এই বছর তারা মোট ২০৮ জনের জন্য কোরবানির ব্যবস্থা করেছেন এবং এই সংগঠনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ডঃ আনিস আফছার জানান, এই কাজটি সফল করতে তাদের কার্যকরী সদস্যের বাইরেও অনেকের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার করে থাকেন বলেই কাজটি সহজেই সম্ভব হয়।