অমর্ত্য অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রখ্যাত সাংবাদিক ফজলুল বারীর প্রথম ছেলে। আজ পঁচিশ আগষ্ট বৃহস্পতিবার তৌকির তাহসিন বারী অমর্ত্যর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে কুলাউড়ার গ্রামের বাড়িতে, উন্দালে, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুরে গ্রামের বায়তুর তৌকির অমর্ত্য জামে মসজিদে, গাজীপুরের অমর্ত্য ফাউন্ডেশন গরিবের হেঁসেলে কোরানখানি, মিলাদ মাহফিল ও দোয়া হবে। ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমর্ত্য ২০২০ সালের ২৫ আগষ্ট মাত্র ২১ বছর মারা যান। সিডনির রুকউড সিমেট্রিতে অমর্ত্যর শেষশয্যা যেন এক খন্ড বাংলাদেশ। এফিটাফে খোদাই করা আছে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা। সেখানে অমর্ত্যর নামটি বাংলাও লেখা।
তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় চালু রয়েছে অমর্ত্য ফাউন্ডেশন।শোকার্ত পরিবার এরপর থেকে নিজেদের সব চ্যারিটি কার্যক্রম অমর্ত্য ফাউন্ডেশনের ব্যানারে পরিচালনা শুরু করা হয়েছে। সারাদেশে অভাবী মানুষদের সহায়তার চালু করা হয়েছে নানান কার্যক্রম।
মানুষের পাশে অমর্ত্য ফাউন্ডেশন যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আদিবাসীসহ দূর্বল জনগোষ্ঠির পক্ষে দাঁড়ানো, তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা, দেশের অভাবী পরিবারগুলোর সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, সক্ষম অথবা প্রতিবদ্বী যুবকদের কর্ম সংস্থানে সহায়তা করা, গরিব মানুষদের খাবারের পাশাপাশি কাপড় জুতো, বাচ্চাদের শিক্ষা উপকরন কিনে দেয়া, অমর্ত্য ফাউন্ডেশন এবং অন্যদের সহায়তায় তাকে একটি দোকান করে দেয়া হয়েছিল। গড়ে দেয়া হয়েছে পেঁপে আর আনারসের বাগান পাঁচশ টাকায় এক পরিবারের এক সপ্তাহের খাবার শ্লোগানে নিয়মিত খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। কুলাউড়ায় উন্দাল, বরিশালে চালু করা হয় অমর্ত্য ফাউন্ডেশন কমিউনিটি পাকের ঘর। এরকম ঢাকা, ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালু রয়েছে বিনামূল্যে খাবার ঘর।
এরমাঝে গড়া হয়েছে ৪০ টি নলকূপ। খাবার পানির নলকূপ প্রকল্প চলমান থাকবে। কারন বাড়ির উঠোনে নিজস্ব একটি নলকূপ একটি পরিবারকে আরও মর্যাদাসম্পন্ন আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর গ্রামে গড়া হয়েছে স্মৃতির মিনার অমর্ত্য মসজিদ। সেখানে অমর্ত্য পাঠশালা, অমর্ত্য ডাক্তারখানা স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরমাধ্যমে গ্রামবাসীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সহায়তা দেয়া হবে। আমরা সারাদেশের বাচ্চাদের শিক্ষা উপকরন দেই। ঈদে উৎসবে গ্রামবাসীদের নতুন কাপড়ের সাথে স্যান্ডেলও দেয়া হয়। কারন কাপড়, শীতে কম্বল দেবার সময় আমরা দেখেছি অনেক দরিদ্র গ্রামবাসীর স্যান্ডেল নেই। গত দু’বছর ধরে কুরবানির ঈদে দরিদ্র গ্রামে আমরা গরিবের কুরবানি শিরোনামে নতুন একটা ধারা চালু করেছি। এই কুরবানির মাংসের পুরোটা দরিদ্র গ্রামবাসীর মধ্যে বিলি করা হয়।
দরিদ্র মানুষজনের ঘর বানিয়ে দেয়া, ব্যবসার পুঁজির ব্যবস্থা করা, অভাবী পরিবারের মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থায় সহায়তা আমাদের অন্যতম পছন্দের কয়েকটি প্রকল্প। পাঁচশ টাকায় এক পরিবারের এক সপ্তাহের খাবার আমাদের পছন্দের একটি উদ্যোগ। আমরা কিছু দরিদ্র ছাত্র, অস্বচ্ছল মুক্তি যোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী দেই। আমাদের ফ্রি খাবার ঘর উন্দাল, অমর্ত্য ফাউন্ডেশন গরিবের হেঁসেলে প্রতিদিন শতাধিক ব্যক্তির খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। আমরা আরও নানান ইস্যুতে মানুষকে সহায়তার স্বপ্ন দেখি। অমর্ত্য ফাউন্ডেশনের সব প্রকল্পে দেশবিদেশের অনেক মানুষের দান জড়িত। আমাদের অভিজ্ঞতা কোন একটি কাজ শুরু করে দিলেই সেখানে সাহায্য চলে আসে। আমাদের কাজে তৎপরতায় মানুষের সহায়তায় আমরা অভিভূত। অমর্ত্যের পরিবারের পক্ষ থেকে তার আত্মার শান্তি কামনায় দেশবাসীর দোয়া চাওয়া হয়েছে।