আজ সকাল ১০ টায় অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বিশেষ জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয় মিন্টোতে অবস্থিত সেন্টারের নিজস্ব ভবনে। সংবিধান অনুযায়ী ১০% স্থায়ী সদস্য রিকইজিশন সভার জন্য আবেদন করতে পারে কমিটির কাছে। ৩০ দিনের মধ্যে কমিটি সভা আহবান করতে হবে। সেই আবেদন অনুযায়ী আজ বর্তমান কমিটির সভাপতি ড.আনিসুল আফছার সকাল ১০ টায় বিশেষ জরুরী সভা ডাকেন সেন্টারের সকল সদস্যদের নিয়ে।
বিশ্লেষণ করলে আজকের জরুরী সভার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ,”এই সংগঠনের কোন স্থায়ী সদস্য এই সংগঠনে সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদক পদে যদি সর্বমোট তিনবার দায়িত্ব পালন করে থাকেন, তাহলে সেই ব্যক্তি পুনরায় তার জীবদ্দশায় আর কমিটিতে নির্বাচনের জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচ্য হবেন না। “
অস্ট্রেলিয়ায় বাঙ্গালী মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সংগঠনটি সিডনির মিন্টোতে অবস্থিত যেখানে স্থায়ী সদস্য রয়েছে প্রায় এক হাজারের মতো এবং অস্থায়ী সদস্য প্রায় পাঁচ শত। এই সেন্টারের নিজস্ব ৫ একর জায়গার উপর রয়েছে বিশাল একটি সেন্টার যেখানে রীতিমতো ধর্মীয় ও অন্যান্য চ্যারিটেবল কার্যক্রম চলে। তাই এই সংগঠনকে নিয়ে সিডনির বাঙ্গালীদের একটু উৎসাহ উদ্দীপনাও ব্যাপক।
সংবিধানের সংশোধনী বিষয়ে আলোচনার শুরুতে ইমাম আব্দুল হাদি তানভীর কোরান থেকে তেলোয়াত করে বাংলায় তর্জমা করেন। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর ভূঁইয়া সভার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর জন্য সভাপতিকে আহবান করেন।
সভাপতি সভা শুরুর সাথে সাথেই পর্যায়ক্রমে কাওছার আহমেদ ও মনসুর আহমেদ সভার আমন্ত্রণ পত্র ইমেইলে দেওয়ার সাংবিধানিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে জনাব আনিস ব্যাখ্যা প্রদান করার সময় কয়েকজন সদস্য বাক বিতন্ডে জড়িয়ে পড়লে সকলের চেষ্টায় সভাটি কিছুক্ষনের মধ্যেই স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনা হয় ।
১০% স্থায়ী সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে প্রাক্তন সভাপতি করিম ইকবালের আবেদনের প্রেক্ষিতেই এই বিশেষ জরুরী সভা ডাকা হয়েছিল। সভায় করিম ইকবালও এই সভার আমন্ত্রণ পত্রটি ইমেইলে পাঠানো অসাংবিধানিক বলে মতামত দিয়েছেন। একই গ্রুপের আরেক প্রাক্তন সভাপতি ডাঃ মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, ২০১৫ সালে খরচের কথা ভেবে ডাক চিঠির পরিবর্তে ইমেইলের মাধ্যমে সদস্যদের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেন এবং পরবর্তীতে সেটাই প্রচলিত হয়ে যায় কিন্তু সেই সেই সময়ের আনা সাংবিধানিক পরিবর্তন যেহেতু ফেয়ার ট্রেডিং এ জমা না দেয়ার জন্য সেটা কার্যকরী হয়নি তাহলে ইমেল এর মাধ্যমেও আমন্ত্রণ কতটা বৈধ।
আলোচনায় অংশ নেন ড. মাকসুদুল বারী , মামুনুর রশিদ , আব্দুল জলিল , সফিকুল আলম ,জাকির হোসেন,কাউন্সিলর ইব্রাহিম খলিল মাসুদ , আবুল সরকার সহ আরো কয়েক জন গন্যমান্য সদস্য। আলোচনা শেষে অনুপস্থিত সদস্যদের মতামত যাকে প্রক্সি ভোট ও উপস্থিত স্থায়ী সদস্যদের নিয়ে আনীত সাংবিধানিক সংশোধনীর উপর ভোটাভোটি অনুষ্ঠিত হয়।
মোট প্রক্সি ভোট ছিল ৬৭২ টি যার মধ্যে ২২০টি প্রক্সি ভোট পরে সাংবিধানিক পরিবর্তনের পক্ষে আর বিপক্ষে পরে ৪৫২ টি।
সশরীরে উপস্থিত ৭২ জন ভোটারদের মধ্যে ১৬ জন পক্ষে এবং বিপক্ষে ৫৬ জন ভোট প্রদান করেন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৭৪৪ ভোটারেরা মধ্যে ২৩৬ জন পক্ষে এবং ৫০৮ জন বিপক্ষে রায় প্রদান করেন। আনীত সাংবিধানিক পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন ৫৫% ভোটের কিন্তু হিসেবে অনুযায়ী ৩১.৭২% রায় পক্ষে আসে আর বিপক্ষে ভোট পরে ৬৮.২৮% .
এই নির্বাচন কার্য পরিচালনায় সহায়তা করেন কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী , কাউন্সিলর ইব্রাহিম খলিল মাসুদ, আবু রেজা আরেফিন, ড.বোরহান উদ্দিন।
নির্বাচনেই রায় শেষ করার সাথে সাথেই কমিটির সভাপতি ড.আনিসুল আফছার সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে সভাটির পরিসমাপ্তি টানেন।