বাংলাদেশে পুলিশের আইজি শহিদুল হক বিবিসিকে জানিয়েছেন, বনানী ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান দুই আসামীকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এরা হলেন – শাফাত আহমেদ এবং সাদমান সাকিফ। এরা দুজনেই ধনী পরিবারের সন্তান।
শাফাত আহমেদ ঢাকার নাম করা একটি গহনার দোকানের মালিকের ছেলে। সাদমান সাকিফের বাবার ঢাকার এক অভিজাত এলাকায় একটি রেস্তরাঁয় মালিকানা রয়েছে।
আইজি জানান, রাত নটার দিকে সিলেট শহরে ঘোরাফেরার সময় পুলিশ তাদের আটক করে। তাদের ঢাকার নিয়ে আসা হচ্ছে।
বাতি তিনজন অভিযুক্তকে পুলিশ এখনো খুঁজছে।
তবে সিলেট থেকে সংবাদদাতা আহমেদ নূর বলছেন, সিলেটের জালালাবাদের লন্ডন প্রবাসী একজন ব্যক্তির বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বাড়িটির তত্ত্বাবধায়ক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে,বৃহস্পতিবার রাতে একজন পরিচিত ব্যক্তি তাদের এই বাড়িতে নিয়ে আসে। রাত ৭টার দিকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দ্রুত নিয়ে চলে যায়।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকা থেকে আসা একটি টিমের সঙ্গে মহানগর পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে সহায়তা করে।
রাতেই তাদের নিয়ে ঢাকায় রওনা হয়ে যায় সদর দপ্তরের ওই পুলিশের দলটি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান বিবিসিকে জানান, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল যে, তারা সিলেটে রয়েছে। সেসব তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। তাদের ঢাকায় নিয়ে আসার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি জানান, বনানী থাকায় তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা রয়েছে, সেই মামলাতেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকায় আনার পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে তাদের রিমান্ডের আবেদন করবেন। রিমান্ডে এনে তাদের পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
ঘটনার প্রায় এক মাস পর এ মাসের ৬ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ঢাকার বনানী পুলিশের কাছে গিয়ে ঐ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। তারা দুজন আজ বিচারকের সামনে জবানবন্দী দিয়েছেন।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এই অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে এই জবানবন্দী নেয়া হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২২ ধারায় এই জবানবন্দী নেয়া হয়। পিপি মি আবু বলেন, এই জবানবন্দী তদন্তের ক্ষেত্রে শক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসাবে বিবেচিত হবে।
ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান বিবিসিকে বলেছেন, সংশ্লিষ্ট হোটেল সহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখে-শুনে, কথা বলে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা তারা পেয়েছেন।
বনানী পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতে গড়িমসি করেছিলো, অভিযোগ পেয়েও অভিযুক্তদের কজন ধনী পরিবারের হওয়ায় তাদের আটকে গড়িমসি করায় তারা পালিয়ে যেতে পেরেছে – সোশ্যাল মিডিয়াতে এসব সন্দেহ নিয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক চলছিলো।
দুই আসামীর গ্রেপ্তারে সেই ক্ষোভ হয়তো কিছুটা প্রশমিত হবে। (বিবিসি বাংলা)