বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের ইতিহাসে কঞ্জুস নাটকটি একটি মাইলফলক । ফরাসী নাট্যকার মলিয়্যর এর স্যাটায়ার ধর্মী হাসির নাটক ‘ দ্য মাইজার ’ অবলম্বনে বাংলা অনুবাদ করেছেন তারিক আনাম খান । মলিয়্যর এর হাসির নাটকের ধারা অনুযায়ী অভিনেতা – অভিনেত্রীদের ব্যাঙ্গবিদ্রুপের হাসির সংলাপ , শারীরিক অভিব্যক্তি এবং ঢাকাইয়া ভাষার ব্যবহারে নাটকটিকে দর্শকদের কাছে উপভোগ্য করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে ।
সিডনীর মঞ্চে আবার নতুনভাবে ‘ কঞ্জুস ’ নাটকটি উপস্থাপন করতে পেরে ‘সখের থিয়েটার‘ এর আমরা সবাই ভিষন আনন্দিত ।
কাহিনী সংক্ষেপঃ পুরানো ঢাকার ষাট বছরের এক হাড়কিপ্টে বুড়োর গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছে এই নাটকের কাহিনী । এই কৃপন লোকটার নাম হায়দার আলী । তার পুএের নাম কাযিম আর কন্যার লাইলী । লাইলী ভালবাসে তাদের খাঁস নোকর বদি মিয়াকে যার সাথে পরিচয় হয়েছিল এক সমুদ্রতীরে । শুধু প্রেমের কারনেই নিজের পরিচয় গোপন করে বদি মিয়া লাইলীদের বাড়ীতে চাকরের কাজ নেয় । অন্যদিকে পুএ কাযিম প্রেমে পড়ে যায় পাশের মহল্লার মর্জিনার সঙ্গে । কিন্তু সমস্যা বাধেঁ তখন যখন কঞ্জুস হায়দার আলী পুএের প্রেমিকাকে বিয়ে করার জন্য ঘটকালির দায়িত্ব দেয় গোলাপজানকে ।
অপরদিকে নিজের পুএের বিয়ে ঠিক করে এক বিধবার সঙ্গে এবং যৌতুকের টাকা বাঁচানোর জন্য কন্যা লাইলীর জন্য পাএ ঠিক করে তারই বন্ধু পঞ্চাশ বছর বয়সী আসলাম বেগের সঙ্গে । ঘটনা তুঙ্গে উঠে তখন,যখন কঞ্জুস হায়দার আলীর মাটির নীচে লুকিয়ে রাখা বিশ হাজার টাকা চাকর লাল মিয়া চুরি করে তারই পুএ কাযিমের হাতে তুলে দেয় । আরেক চাকর কালা মিয়া চুরির অপরাধে ফাঁসিয়ে দিতে চায় খাঁস নোকর বদি মিয়াকে । হায়দার আলী টাকার শোকে পাগল হয়ে পুলিশের কাছে নালিশ জানায় । ঘটনাস্থলে উপস্হিত হয় আসলাম বেগ । পরিশেষে জানা য়ায় লাইলীর প্রেমিক বদি ও কাযিমের প্রেমিকা মর্জিনা প্রকৃতপক্ষে আসলাম বেগেরই সন্তান । একসময় কাযিম জানায় যে সে চুরি যাওয়া টাকার হদিস জানে । যদি হায়দার আলী মর্জিনার সাথে তার বিয়েতে রাজি হয় তাহলে সে সমস্ত টাকা ফিরিয়ে দেবে । হায়দার আলী সন্তানদের বিয়েতে কোন টাকা খরচ করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়, অবশেষে আসলাম বেগ বিয়েতে খরচের জন্য সমস্ত টাকাপয়সা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বদি- লাইলী এবং কাযিম – মর্জিনার বিয়ের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নাটকটির আনন্দময় পরিসমাপ্তি ঘটে ।