গত ১০ই সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ান যুবক ইহসাস খান (তখন তার বয়স ছিল ২২) কতৃক “আল্লাহু আকবর ! আল্লাহু আকবর !!” বলতে বলতে তখন ৫২ বয়স্ক ওয়েন গ্রিনহালগের উপর ছুরি দিয়ে একের পর এক আঘাত হানতে থাকে।
প্রতিদিনের মতই ,শনিবার সকালে ওয়েন তার পোষা কুকুরকে নিয়ে হাটতে বের হয়েছিল। ওয়েন তার হাটা শেষ করে যখন ফিরে আসছে তখনই ইহসাস খান হঠাতই তার শরীর বরাবর একটি ছুরি চালিয়ে দিল। তারপর একের পর এক ছুরি চালিয়ে যাচ্ছিলো ইহসাস খান, জীবন বাঁচানোর জন্য ওয়েন দৌড়ে পাশের সেলুনে গেলেও সে আবারও আঘাত হানার চেষ্টা করে। সেলুনের দরজায় এসে আঘাত করা শুরু করে দেয়। মনে হচ্ছিল যেন সে দরজা ভেঙ্গেই ফেলবে। ভিডিওঃ ফুটেজ দেখলেই বাকিটা ধারণা করা যাবে :
পুলিশে এসে টেসার দিয়ে তাকে বস করে ছুরি সহ গ্রেফতার করে এবং পুলিশকে জবান বন্দিতে বলে, সিরিয়া এবং ইরাকে মুসলমান হত্যার প্রতিশোধ নিতেই সে অস্ট্রেলিয়ান এবং আমেরিকানদের উপর তার এই প্রতিক্রিয়া।
মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ থাকায় ,ইহসাস খানের প্রাথমিক রায়ে তাকে আইসিস কিংবা অন্য কোন সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে যুক্ত আছে বলে প্রমান পায়নি এবং হত্যার জন্যই ছুরি চালিয়েছে -এই দুইটি অভিযোগের একটিও প্রমান করা যায়নি।
গত মঙ্গলবার বিচারক জেফ্রে বেল্লেও এই বিচার কার্যক্রম শুরু করার আগে বলেন, এই বিষয়ে কোন বিতর্ক নেই যে ছুরি দিয়ে ওয়েন গ্রিনহালগের উপর আঘাত করা হয়েছে।
কোর্টে ইহসাস খানেই পক্ষে আইনি লড়াই করছেন ট্রায়ো অ্যান্ডারসন এবং বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন মিস ডেভেনপোর্ট।
উল্লেখ্য যে আইনজীবীদের লড়াই চলার সময়ে বেরিয়ে আসে , যে ইহসাস খান ২০১২ সালে এইচ এস সি পরীক্ষায় মেধার স্বাক্ষর রেখে ৯৬.৩ স্কোর করে ফার্মেসী বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ছিল।কিন্তু ২০১৫ সালে ব্রেস্ট ক্যান্সারে মায়ের মৃত্যুর পর সে মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে যায় এবং ইন্টারনেটে বিভিন্ন কার্যক্রম দেখে ও পড়ে ধীরে ধীরে তাকে মানসিক ভাবে এতটাই উগ্র হয়ে গিয়েছিল তারই প্রতিফলন ঘটেছিল ১০ই সেপ্টেম্বর ২০১৬ । যুক্তিতর্কের এক পর্যায়ে ও বেরিয়ে আসে যে , ইহসাস খান ঘটনা ঘটার সময়কালীন ক্যাম্পবেলটাউন হসপিটালে মানসিক রোগী হিসেবে ভর্তি হয়েছিল এবং তার চিকিৎসা চলছিল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় অনিয়মিত ছিল।
বর্তমানে কোর্টে জুরির বোর্ডের সামনে এই বিচার কার্যক্রম চলছে এবং এই কার্যক্রম আরও দুই সপ্তাহ চলবে।
তথ্যসূত্রঃ নিজডটকম, চ্যানেল নাইন