বাঙালি জাতির ইতিহাসে আরেক কলঙ্কিত দিন রক্তক্ষরা জেলহত্যা দিবস। স্বাধীন বাংলাদেশের যে কয়টি দিন চিরকাল কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে, তার একটি ৩ নভেম্বর। বাঙালী জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ জাতির চার মহান সন্তান, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম পরিচালক, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ ঘনিষ্ঠ সহচর, জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এমন জঘন্য, নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ অষ্ট্রেলিয়া সভপতি আসমা আলম কাশফীর সভাপতিত্বে এবং সহ-সভাপতি রওশন পারভীনের সঞ্চালনার মাধমে গত ৫ই নভেম্বর ২০২৩, রোজ রবিবার অষ্ট্রেলিয়ার গ্লেনফিল্ডে এই শোক সভার আয়োজন করা হয়, পবিত্র কোরান তেলায়াতের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং তার ঘনিষ্ঠ সহচর মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামী সংগঠক জাতীয় চার নেতাকে জেলে নৃশংস হত্যার তীব্র নিন্দা এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মিনিট নিরবতা পালন ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ।
অনুষ্ঠানে আলোচক-বৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিডনীর প্রতিথজসা ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্ট সমাজ সেবিকা সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা খালেদা কায়সার, সিডনির জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ও সংগঠনের সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা আরফিনা মিতা, অত্র সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রগতীশীল ও নির্ভিক কন্ঠস্বর পড়ুয়ার আসরের উদ্যোক্তা রোকেয়া আহমেদ, মুক্ত-মনা ও বিশিষ্ট সামাজ কর্মী সহ সভাপতি রওশন পারভিন এবং অত্র সংগঠনের সহ-সভাপতি বিশিষ্ট সমাজ সেবিকা আমাদের বাংলা কমিউনিটির প্রিয় মুখ আমাদের বিপদের সাথী হয়ে আছেন সকলের পাশে আজিজা সাদাত, অন্যান্য বক্তাদের মাঝে ছিলেন আমাদের সবার প্রিয় আপু শামিমা আলমগীর আরো ছিলেন শামশুন নাহার বিটু প্রমুখ। বক্তাগন তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্টের ঘৃন্য পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ ছিল ৩ নভেম্বরের জেল হত্যা দিবস। এই নৃশংস মৃত্যুর মাধমে অসাস্প্রদায়িক চেতনার দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়, রুদ্ধ হয় বাংলাদেশের প্রগতীশীল ও
গনতান্ত্রিক রাজনীতির অগ্রযাত্রা, বক্তাগন বলেন যে, আগামী প্রজম্মকে আমাদের সত্য ইতিহাস তুলে ধরতে হবে, তাদের কাছে আমাদের দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সহ এই চার নেতার কি ভুমিকা ছিল তা তুলে ধরতে হবে, নতুন প্রজম্মকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুসহ চার-নেতার জীবনীর উপর বিভিন্ন ধরনের রিসার্স বা প্রজেক্ট তৈরী করার প্রকল্প হাতে নিতে হবে, যাতে করে তারা আমাদের জাতীয় নেতাদের দেশ গঠনে অবদান বুঝতে পারে এবং তা বিশব্যাপি ছড়িয়ে দিতে পারে। তারা আরো উল্লেখ করেন যে, বর্তমান সরকার প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের আরো সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। বিরোধীদল গুলো যেভাবে মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের সকল উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাঁধাগ্রস্থ করছে, সেখানে আমরাই পারি সত্য-সংবাদ প্রচারনার মাধমে দেশের অগ্রগতি তুলে ধরতে। পরিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে গনতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুনভাবে শপথ নেয়ার অংগীকার জানিয়ে আলোচনা সভার সমাপ্তি হয়।