কাউসার খান:অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে সড়ক দূর্ঘটনায় এক যাত্রীর মৃত্যুতে বাংলাদেশি উবার চালক নজরুল ইসলাম বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার সিডনির স্থানীয় আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গাড়ী চালানোতে অবহেলা এ দায়ে মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঘটনায় প্রকাশ, নজরুল ইসলাম নামের ৩১ বছর বয়সী এক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি একজন উবার চালক। তিনি গত বছর ১৭ জুন উবারের মাধ্যমে তিনজন যাত্রী নিয়ে গন্তব্য পৌঁছানোর সময় সিডনির এলিজাবেথ স্ট্রিটে এ দূর্ঘটনাঘটে। রাত ৩ টার দিকে দুই রাস্তার মোড় পার হওয়ার সময় লাল ট্রাফিক বাতি দেখে গাড়ি থামিয়েছিলেন নজরুল। সবুজ বাতি জ্বলে ওঠার কয়েক সেকেন্ড আগে পেছনের আসনে থাকা যাত্রী যুক্তরাজ্যের নাগরিক স্যামুয়েল থমাস গাড়ির দরজাখুলে বাইরে নামার চেষ্টা চালান। সবুজ সংকেত দেখে গাড়ির গতি বাড়ানোর ফলে থমাস রাস্তায় পড়ে যান এবং অপর পাশ থেকে আসা একটি বাসের চাপায় দূর্ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি।
এ দূর্ঘটনায় গাড়ি চালানোতে অবহেলা এ অভিযোগে নজরুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে স্থানীয় পুলিশ। প্রায় এক বছর পর এ মামলার শুনানি শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার।নজরুল ইসলাম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতে আর্জি করেছেন। আদালত দুর্ঘটনায় জড়িত বাসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান লিপিবদ্ধ করেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে বলা হয়, নজরুল ইসলাম গাড়ির গতি বাড়ানোর পরক্ষণেই থমাস রাস্তায় পরে যান এবং একটি বাসের নিচেপিষ্ট হন। তবে উবার ও বাস দুটোয় সাথে সাথে থেমে যায়। গাড়িতে থাকা থমাসের সহযাত্রী তার সহকর্মীদের একজন স্টিফেন রনিং বলেন, ‘সবুজ বাতি জ্বলে ওঠার আগে দরজা খোলার শব্দ পেয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখি থমাস গাড়ি থেকেনামার চেষ্টা করছে। আর এর মধ্যে গাড়ি চলতে শুরু করলে আমি থামার কথা বলতে বলতেই থমাস নিচে পড়ে যায় আর একটা কিছু ফাঁটার শব্দ হয়।’ রনিং নিশ্চিত করে যে, থমাস নামার আগে কিছুই বলে নি। বরং তিনি শব্দ করে থামার কথা বলতেই সেকেন্ডে উবার থামিয়ে ফেলেন চালক।
নজরুল ইসলাম তার বয়ানে বলেন, ‘আমি না কোনো শব্দ পেয়েছি না কিছু দেখেছি। আমি শুধু শুনলাম যাত্রীরা থামাও, থামাও বলে চিৎকার করছে আর আমি সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক চাপি। সবকিছু ৫ মিটার জায়গার মধ্যেই ঘটে গেল। তারপরআমরা বাইরে গেলাম আর একটা মৃত দেহ দেখলাম। আমি পুলিশে ফোন করলাম।’
নজরুল আদালতে আরও বলেন, তিনি ১৬ জুন সকাল ৬টায় উবার চালানো শুরু করেন এবং পরেরদিন ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে এ দীর্ঘ সময় উবার চালানোর সময় তিনি দু’বার বিরতি নিয়ে কয়েক ঘণ্টা করে ঘুমিয়েছেন।
এদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আলী চিমা আদালতে বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা কিন্তু তার মক্কেলের কোন অবহেলা ছিল না।