বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামে অস্ট্রেলিয়ার ফুয়াশন কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে একধরণের শোষণমূলক উৎপাদন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের অস্ট্রেলিয়া শাখা গত সোমবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। ডেইলি সাবাহ, রয়টার্স
সংস্থাটি জানায়, ৪৭০ জন বাংলাদেশী গার্মেন্টস শ্রমিক যারা অস্ট্রেলিয়ায় বিখ্যাত ফ্যাশন ব্রান্ড টার্গেট, কে-মার্ট এবং কটন অনেই জন্য কাপড় সিলাই করে তাদের সাক্ষ্য থেকে জানা যায় বাংলাদেশের প্রতি ১০ জন গার্মেন্টস শ্রমিকের মাঝে ৯জনই দারিদ্রের মাঝে বসবাস করে। ভিয়েতনামে এই সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ। এরপরেও অস্ট্রেলীয়ার কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে মজুরি বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। তারা প্রতি ঘণ্টায় এই দুই দেশের শ্রমিকদের মাত্র ৫৫ অস্ট্রেলিয়ান সেন্ট (বাংলাদেশী টাকায় ৩০টাকা ঘন্টায়) মজুরি দেয়। এই কারণে অধিকাংশ গার্মেন্টস শ্রমিক যাদের অধিকাংশই আবার নারী প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নেয়ার সুযোগ পায়না। এমনকি তারা প্রয়োজনীয় ও স্বাস্থ্যকর খাবার কেনার অর্থেরও যোগান দিতে পারছেনা।
এই বিষয়ে অক্সফাম অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার পরামর্শক জয় কিরাসুউ বলেন, ‘খুব শীঘ্রই এই অবস্থার পরিবর্তন হবে এমনটা আমরাও আশা করিনা। দারিদ্র এবং অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে যারা ফ্যাশন শিল্প পরিচালনা করছে এমনকি নতুন করে দারিদ্রের জন্ম দিচ্ছে এমন শোষণমূলক ফ্যাশন শিল্পের বিরুদ্ধে আমরা সচেতনতা তৈরির কাজ অব্যাহত রাখব। ’
সিডনি থেকে থমসন রয়টার্স ফাইন্ডেশনকে দেয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, ‘অনেক নারী শ্রমিক খাদ্যের অভাবে ভুগছেন এবং স্বেচ্ছায় অনাহারে থাকছেন এমন চিত্র আমরা আগামী দিনেও দেখতে থাকব। সবচাইতে দুঃখের বিষয় হলো অনেক নারী শ্রমিক তাদের শিশু সন্তানকে কাছে রাখতে পারেন না। কারণ সন্তানের দেখাশোনা করার জন্য প্রয়োজনীয় সময় বা তাদের শিক্ষা ও সাস্থ্যসেবা দেয়ার মতো প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সামর্থ তাদের নেই।’
কিরাসুউ জানান, অস্ট্রেলিয়ায় বিখ্যাত ফ্যাশন ব্রান্ড কটন অন, টার্গেট, কে-মার্ট এই পরিস্থিতির উন্নয়নে শ্রমিকদের মজুরিবৃদ্ধিসহ তাদের জীবন-যাত্রার মান উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম থেকে অস্ট্রেলিয়ার সাপ্লাই চেইনগুলো ২ হাজার ৩শ কোটি ডলারের ফ্যাশন পন্য উৎপাদন করে।
কে- মার্ট এবং টার্গেটের মূল মালিকানা স্বত্ব ওয়েসফার্মার নামক একটি অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানির। অক্সফাম প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় একজন ওয়েসফার্মার মুখপাত্র বলেন, এই ধরনের অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে আমরা সরবরাহকারী, শ্রমিক এবং সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছি। তবে এতে বিদ্যমান পরিস্থিতির কোন উন্নয়ন হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেন নি।
(সূত্রঃ আমাদের সময়)