ফজলুল বারী : নানা কারনে জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিটি বাংলাদেশের ইতিহাস এবং ছবির জগতের জন্যে গুরুত্বপূর্ন। কারন এর আগে কখনো বাংলাদেশ অথবা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে এমন কোন ছবি বানানো হয়নি।
এমন সাহসও বুঝি এর আগে কেউ করেনি। আসলে বিশেষ সময় ছাড়া এমন বিশেষ কোন ছবি বানানো যায়না বা সে চেষ্টাও করা যায়না। বর্ষায় বেসুরো শোনায় মাঘ মাসের শীতের গান।
এ ছবি বানানোর সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুবের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের রাজনৈতিক আন্দোলন চলছিল। বঙ্গবন্ধু তখন কারাগারে। পাকিস্তানের শাসনামলে তিনি এভাবে যৌবনের বড় অংশ কারাগারেই কাটিয়েছেন।
উনসত্তরে শহীদ হন আসাদ। নরসিংদীর শিবপুরে তাঁর বাড়ি। আসাদ মেননপন্থী ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। এর কারনে মাওলানা ভাসানী আমজাদ হোসেনকে ডেকে শহীদ আসাদকে নিয়ে একটি প্রামান্য চিত্র বানাতে বলেন।
কিন্তু পাকিস্তানী জান্তার চাপে আসাদের পরিবারের অনুরোধের সে উদ্যোগটি স্থগিত রাখতে হয়। জহির রায়হান তখন আমজাদ হোসেনকে ডেকে একটি রাজনৈতিক ছবির কাহিনী লিখতে বলেন।
যেখানে দুই বোনের গল্প থাকবে। এক বোন আরেক বোনকে বিষ খাওয়াবে। আমজাদ হোসেনকে প্রথমে ছবির জন্যে দুধ খাওয়ানোর প্রথম দৃশ্যের গল্প লিখেন। জহির রায়হান তাঁকে বলেন, বললাম বিষ খাওয়ানোর গল্প লিখতে।
আর আপনি লিখলেন দুধ খাওয়ানার গল্প! আমজাদ হোসেন তাঁকে বলেন, প্রথমেতো দুধ খাওয়াতে হয়। দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে মেশানো হয় বিষ। এমন গল্প থেকেই বোঝা যায় ছবিটি বানানোর শুরুতে হাতে কোন লেখা গল্প ছিলোনা।
জীবন থেকে নেয়া’র জীবনের গল্পটি ছবি বানাতে বানাতে লেখা। এভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সাড়া জাগানো রাজনৈতিক সিনেমার কাজ এগোতে থাকে। খান আতাউর রহমান ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেন।
এতে ব্যবহার করা বিশেষ তিনটি গানই পরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইতিহাসের গতিপথ তৈরি করে দিয়েছে! ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’, ‘কারার ওই লৌহ কপাট’, আর ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ সেই তিন গান। আব্দুল গাফফার চৌধুরীর ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি সংযোজনের মাধ্যমে আন্দোলন সংগ্রামের সেই সময়ে পাকিস্তানিদের মনে করিয়ে দেয়া হয় আসলে তোমাদের সঙ্গে আমাদের আর চলবেনা।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লেখা প্রতিবাদ বিদ্রোহের গান ‘কারার ওই লৌহ কপাট ভেঙ্গে ফেল কররে লোপাট’ গানটির মাধ্যমে পাকিস্তানিদের বলে দেয়া হয়, তোমাদের সঙ্গে আমরা থাকবোনা।
এবং সেই ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিতেই প্রথমবার সংযোজন করা হয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি। সেই গানটিই যে পরে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হবে তখন কী কেউ তা ভেবেছে?
তবে একটি কাকতালীয় ঘটনা আছে। তাহলো, ১৯৭০ সালের ১০ এপ্রিল জীবন থেকে নেয়া’ ছবিটি মুক্তি পায়। এর ঠিক এক বছরের মাথায় ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়!
ভারতের ত্রিপুরার আগরতলার সার্কিটে অনুষ্ঠিত প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, এমএলএ, এমপিএ’দের সভায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠনের সিদ্ধান্তটি হয়।নতুন দেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’।
‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিটির বিপুল সাফল্যের কারনেও জাতীয় নেতৃত্বে মধ্যে চিন্তাটি জায়গা করে নিতে পারে। ছবিতে অভিনেত্রী রওশন জামিলের দজ্জাল চরিত্রটি যেন ছিল পাকিস্তানিদের সামরিক চেহারার রূপক!
রওশন জামিলের শাড়ির আঁচলে বাঁধা বাড়ির চাবি যেন জিম্মি দেশের মানুষের স্বাধীনতা-গণতান্ত্রিক অধিকার। ছবির খান আতা, আনোয়ার হোসেন, রোজী সামাদ, রাজ্জাক, সুচন্দার চরিত্রগুলো যেন স্বাধীনতা-গণতান্ত্রিক অধিকারের একেকজন যোদ্ধার।
রাজনৈতিক ছবি বানানোর ঝুঁকি থাকলেও রাজনৈতিক ছবিও যে বানিজ্যিকভাবে সফল হয় এর প্রমান ‘জীবন থেকে নেয়া’। ছবির গল্পটি এমন, এক পরিবারে দুই ভাই আনিস(শওকত আকবর) ও ফারুক (রাজ্জাক)।
তাদের বড়বোন রওশন জামিল ও বোন জামাই খান আতাউর রহমান। বিবাহিতা বড়বোন রওশন জামিল বাবা’র বাড়িতেই থাকেন। তাঁর স্বামী খান আতা আইন পেশার হলেও মানুষ হিসাবে ছিলেন নিরীহ প্রকৃতির।
আইয়ুব খানের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা রওশন জামিলের হাতে সংসারের সব নিয়ন্ত্রন। ক্ষমতার অপব্যবহার ঘটিয়ে স্বামী সহ দুই ভাইর ওপর স্বৈরশাসন চালান রওশন। আঁচলে তাঁর বাড়ির চাবির গোছা। এটিই তাঁর ক্ষমতার উৎস।
তাঁর পিছনে পানের বাটা হাতে ঘুরে বেড়ানো গৃহপরিচারিকা যেন মোনায়েম খানের চরিত্র! রওশন জামিলের প্রতাপে বাড়ির সবাই অস্থির! স্ত্রীর দাপট কমাতে এক বন্ধুর পরামর্শে শ্যালক শওকত আকবরের বিয়ে ঠিক করেন খান আতা।
পাত্রী সাথী রোজী সামাদ। শান্ত স্নিগ্ধ মেয়ে। কিন্তু ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বেঁকে বসেন রওশন। সংসারের চাবির গোছা না আবার নতুন বৌ’র হাতে চলে না যায় সে আশংকায় তিনি ভাইয়ের বিয়েতে রাজি হন না।
অতঃপর স্ত্রীর অমতেই বিয়ের আয়োজন করেন খান আতা। সাথী বৌ হয়ে এলে তাঁর ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। এরমাঝে সাথীর ছোটবোন বীথি’র (সুচন্দা) প্রেমে পড়ে যান রওশনের আরেক ভাই ফারুক ওরফে রাজ্জাক।
তখন বানানো বাংলা ছবিগুলোর এমন বেশ কয়েকটায় রোজীকে সাজতে হয়েছে রাজ্জাকের ভাবী। দুলাভাই খান আতা বড় ভাই শওকত আকবর অনুমতি দিলে ফারুক ওরফে রাজ্জাক, বীথি ওরফে সুচন্দাকে বিয়েও করে ফেলেন!
সিনেমার প্রেম-বিয়ে সব হয় গল্পের প্রয়োজনে। তখন আইয়ুব বিরোধী স্বাধিকার আন্দোলনের রাজনৈতিক কর্মী আনোয়ার হোসেনের দুই বোন সাথী-বীথি। অতঃপর তাঁর প্রভাবেই বাড়িতে ঢোকে পারিবারিক রাজনৈতিক আন্দোলন।
বাড়িতে দেয়ালে দেয়ালে পোষ্টার লাগানো হয়। রওশন জামিলের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কথামালার পোষ্টার। পারিবারিক আন্দোলনের প্রভাবে-প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমতার প্রতীক অর্থাৎ চাবির গোছার হাত বদল হয়।
অতএব পানের বাটাওয়ালারা ঘুরে নতুন ক্ষমতাসীনদের পিছনে। কারন এরা ক্ষমতা দেখে চিনে হাঁটে চলে! ক্ষমতা হারিয়ে পাগলের মতো হয়ে যান রওশন জামিল। শুরু করেন নতুন ষড়যন্ত্রের বুনন।
এরমাঝে বাড়ির দুই নতুন বৌ দুই বোন সাথী-বীথি সন্তান সম্ভবা হন। তাদেরকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। দূর্ভাগ্যক্রমে মৃত সন্তানের জন্ম দেন সাথী। আশংকা করা হয় সাথী এই শোক বইতে পারবেননা।
এরজন্যে তথ্য গোপন করে বীথির সন্তান তুলে দেয়া হয় তাঁর কোলে। নিজের সন্তান ভেবে সাথী লালন পালন করতে থাকেন বোন বিথীর সন্তান। সুযোগ বুঝে দুই বোনের মধ্যে বিবাদ বাধিয়ে দেন রওশন জামিল।
কৌশলে তিনি বীথিকে বিষ খাইয়ে দিয়ে দোষ চাপান সাথীর ওপর। আদালতে মামলা উঠলে নিজের স্ত্রীকে দোষী মনে করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা লড়েন শওকত আকবর। আর সাথীর পক্ষ নেন খান আতাউর রহমান।
আদালতে খান আতা প্রমান করেন সাথী নন, আসল ক্রিমিনাল তাঁর স্ত্রী রওশন জামিল। বিষ তিনিই খাইয়েছেন। সিনেমার গল্প শেষ হয় সেই নবজাতকের জন্ম আর প্রকৃত মাতৃ্ত্ব ঘোষনায়। তার নাম রাখা হয় মুক্তি।
যদিও তখনও মুক্তি মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়টিতো স্বপ্ন। সেই স্বপ্নই সত্য হয়েছে একাত্তরে। আর ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭০ সালে এপ্রিলে। কিন্তু ছবিটি বানাতে বানাতে প্রকাশ পেয়ে যায় ছবিটির বিশদ বৃত্তান্ত।
ছবির শুটিং চলাকালেও সরকারি নজরদারি চলছিল। সেনাবাহিনীর সদস্যরা একদিন এফডিসির শুটিং ফ্লোরে এসে শুটিং বন্ধ করে দেয়। সকাল দশটায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে জহির রায়হান আর রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিকেল চারটায় একটি লিখিত বন্ড রেখে তাদের ছাড়া হয়। বন্ডে লেখা ছিল ছবিটি মুক্তি পেলে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির কোন অবনতি হলে এর দায় দায়িত্ব তাদেরকে নিতে হবে। এরপর সাভার, এফডিসি আর জহির রায়হানের বাসার ছাদে চলে শুটিং।
পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ছবির কাহিনী, এটি জানাজানি হয়ে গেলে আটকে দেয়া হয় ছবির মুক্তি। কিন্তু এই ছবির টিমটিতো ছিল একটি আন্দোলনের টিম। অতএব সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা আন্দোলনের ব্যবস্থা করেন।
তখন এমনিতে আগুন আন্দোলনের পরিস্থিতি চারদিকে। এরসঙ্গে আরেকটি ছবি কেন্দ্রিক আন্দোলন যুক্ত হোক তা ক্ষমতাসীনরা চায়নি। ছবিটি মুক্তির অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু প্রথম শো চলার পর আরও নড়েচড়ে বসে পাকিস্তানি জান্তা।
ছবির প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা হয়। পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সদস্যরা বিভিন্ন সিনেমা হল থেকে ছবির রিল আটক করতে গেলে শতশত জনতার বাধার মুখে পড়েন।বলা হয় ছবিটির ব্যাপারে আবার সিদ্ধান্ত হবে সেন্সর বোর্ডে।
পাকিস্তানি জেনারেল রাও ফরমান আলী জানালেন তিনি সেন্সর বোর্ডের সভায় নিজে উপস্থিত থাকবেন। জহির রায়হান বুদ্ধি করে সেখানে বোর্ডের সদস্য, নাট্যকার আসকার ইবনে শাইখকে সভায় উপস্থিত করানোর দায়িত্ব দিলেন আমজাদ হোসেনকে।
আমজাদ হোসেন আসকার ইবনে শাইখের কাছে গিয়ে তাঁর হাঁটুর কাছে বসে পা টিপতে শুরু করে দেন! তখনকার দিনে এসব পা টিপাটিপি চলতো। আমজাদ হোসেন তাঁকে বললেন, ‘স্যার এখন সবকিছু আপনার ওপর নির্ভর করছে। কাল আপনি যাবেন’।
আসকার ইবনে শাইখ বললেন, তিনি অসুস্থ। হাই ব্লাড প্রেসার। যেতে পারবেননা। আমজাদ হোসেন কাঁদতে শুরু করে দিয়ে বলেন, ‘স্যার সারাদেশ এখন আপনার দিকে তাকিয়ে’। পরদিন বোর্ডের সভায় গেলেন আসকার ইবনে শাইখ।
সভায় উপস্থিত সারা পাকিস্তানের সব সেন্সর বোর্ড সদস্য। পাশের প্রজেকশন রুমে চুরি করে অবস্থান নিয়ে ছোট একটি ছিদ্রপথে সভার কার্যক্রম দেখতে থাকেন আমজাদ হোসেন। রাও ফরমান আলী সহ সবাই ছবিটি দেখলেন।
ছবি দেখা শেষে সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান আসকার ইবনে শাইখকে বললেন, আপনি বলেন। কিছুক্ষন চুপ থেকে শাইখ বললেন, পবিত্র কোরানে কোন মিথ্যা কথা বলা নেই। মিথ্যা কথা বলার কোন সুযোগও সেখানে কাউকে দেয়া হয়নি।
জহির হয়তো ভুল করে বানিয়ে ফেলেছে একটি সত্য সিনেমা। এই সত্যকে আমি কি করে মিথ্যা বলি’। তাঁর এই কথার পর আর কোন সদস্য কিছু বললেননা। কিন্তু রাও ফরমান আলী হুমকিটি দিয়ে যাওয়া ছাড়লেননা!
যাবার আগে জহির রায়হানকে বলে গেলেন, ‘ছবিটি আজ ছেড়ে দিলাম। বাট আই উইল সি ইউ। ছবিটি মুক্তি পেলো। রাও ফরমান আলীগং এর জমা সেই ক্রোধই কি প্রকাশ পেয়েছে একাত্তরে? পঁচিশে মার্চ রাতে?
কারন সেই প্রতিবাদ শুরুর পর থেকে একদিনের জন্যেও আর অমর চলচ্চিত্র ‘জীবন নেয়া নেয়া’ প্রদর্শনী বন্ধ থাকেনি। এ ছবিটিও তখন আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়েছে সবখানে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আগুন।
সেই থেকে বাংলাদেশের নতুন আরেকটি ইতিহাসের নাম ‘জীবন থেকে নেয়া’। বাংলাদেশের সংগ্রামী সিনেমার আরেক নাম ‘জীবন থেকে নেয়া’। অমর চলচ্চিত্র স্রষ্টা জহির রায়হানের বানানো শেষ পূর্নদৈর্ঘ ছবির নাম ‘জীবন থেকে নেয়া’।
মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতার সিনেমা হলগুলোতেও ছবিটি রেকর্ড ব্যবসা করে। কিন্তু সেখান থেকে একটি টাকাও নিজের জন্যে খরচ করেননি জহির রায়হান। পুরোটা টাকাই তখন মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে তুলে দেয়া হয়েছে।
তখন তাদের পকেটে তাদের তখন খাবার পয়সা ছিলোনা। অথচ এমন ত্যাগ-তিতীক্ষাতেইতো আমাদের দেশটা স্বাধীন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে ক্যাম্পে ঘুরে তিনি বানান গণহত্যা বিরোধী ছবি ‘স্টপ জেনোসাইড’।
কিন্তু এ ছবিটি বানাতে গিয়েও তাকে নানা সমস্যায় ভুগতে হয়েছে। দেশ স্বাধীন হবার পর একটি অজ্ঞাত ফোন আসে জহির রায়হানের কাছে। সেই ফোনের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে চিরদিনের জন্যে হারিয়ে যান বাংলাদেশের এই অমর চলচ্চিত্র স্রষ্টা!
তাঁর নিখোঁজ ভাই শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের সন্ধানে মিরপুর গিয়ে আর ফেরেননি জহির রায়হান। দেশ স্বাধীন হলেও মিরপুর তখনও স্বাধীন হয়নি! পাকিস্তানপন্থী বিহারীরা তখনও দখল করে রেখেছিল মিরপুর!
সেই ৩০ জানুয়ারি এখনও জহির রায়হানের নিখোঁজ দিবস! আর কোন দিন কেউ একটা ‘জীবন থেকে নেয়া’ অথবা ‘হীরক রাজার দেশে’ বানানোর চেষ্টা করেনি। ছবি বানাতে গিয়ে গুম হয়ে যেতে কার ইচ্ছা করে!