রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর ক্ষমতা মেশিন!

রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর ক্ষমতা মেশিন!

ফজলুল বারী: বাংলাদেশে আমাদের গৌরবের আহ্লাদের এক অবিরাম উচ্চারনের শিরোনাম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায়। এরজন্যে আমার মতো দেশে-বিদেশে থাকা অনেক সাধারন মানুষও নানাকিছুতে সরকারকে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়ে যায়।

আরেক গৌরব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায়। পচাত্তরে একদল বিপথগামী এটিকে অসম্ভব করতে চেয়েছিল। অতঃপর দুঃস্বপ্নের তাড়ায় তারাই এখন দেশে-বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকায় বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ঐতিহাসিক কাজটি হয়েছে। কিন্তু এই আমলেও মুক্তিযোদ্ধার সম্মান নিয়ে হেলেফেলার কিছু ঘটনা মাঝে মাঝে পীড়া দেয়। মৃত্যুর পর অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেয়া হয়না।

রাষ্ট্রীয় সম্মান মানে কফিনটিকে জাতীয় পতাকায় মুড়িয়ে একটা গান স্যালুট দেয়া। কৃতজ্ঞ জাতির পক্ষে শেষ বিদায় জানানো। তোমাদের এই ঋণ কোন দিন শেষ হবেনা। এটা আমরা কোন রাজাকারের কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে বলতে পারিনা।

প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার জন্যে আমলাতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতা হচ্ছে মৃতের একটি মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট থাকতে হবে। অথচ অনেক মুক্তিযোদ্ধার এই সার্টিফিকেটই নেই।  সার্টিফিকেট বা কোন কিছুর জন্যে তারা যুদ্ধে যাননি।

অনেকে সার্টিফিকেট নেননি অথবা সংগ্রহ করেননি প্রতিবাদে। কারন জিয়া-এরশাদ আমলে অনেক রাজাকার বা অমুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়। মুক্তিযোদ্ধার তালিকা-সার্টিফিকেট নিয়ে জালিয়াতি বারবার ধরা পড়লেও প্রক্রিয়াটি এখনও বহাল।

এরজন্যে অনেকে এই তালিকায় নাম উঠানো বা সার্টিফিকেট সংগ্রহের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। অথচ তাদের নামে এখনও সার্টিফিকেট সংগ্রহ চলছে। কারন একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা নিঃস্বার্থ চিন্তায় দেশের জন্যে যুদ্ধে গেলেও বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

অনেক মুক্তিযোদ্ধার বর্তমান প্রজন্মের সবাইতো আর তাদের মতো নিঃস্বার্থ নয়। চাকরি ব্যবসা, সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিপত্তির জন্যেও তাদের পরিচয়টি গুরুত্বপূর্ন। ঠিক অনেকে এখন যেমন তাদের রাজাকার বাপের পরিচয় লুকোতে চান।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন নাসিম আহম্মদ চৌধুরীর রাজাকার বাবার মৃত্যুর পর তড়িঘড়ি প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে শোকবানী দেয়ানো, মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদায় দাফনকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা-সনদ নিয়ে জালিয়াতির বিষয়টি আবার সামনে এসেছে।

কারন তার শেষকৃত্যে মাইকে বলা হচ্ছিল তিনি এত বড় মুক্তিযোদ্ধা যে মৃত্যুর পনের মিনিটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ফোন করে শোক জানিয়েছেন! প্রধানমন্ত্রীকে সাক্ষী দেখিয়ে একজন সুপরিচিত রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানানো জায়েজ দেখানোর ঘটনা দেশে এই প্রথম।

আমি পড়াশুনা করেছি ফেনীতে। মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহে আমি যে সারাদেশ পায়ে হেঁটে ঘুরেছি আমার সেই মিশনও ফেনী থেকে শুরু। কাজেই আমি তখন থেকেই ফেনীর তৎকালীন মহকুমার রাজাকারদের ব্যাপারে জানি।

সালেহ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীকে তখন থেকেই আমি রাজাকার জানি। ফেনীর রাজাকারের তালিকার ৭ নম্বর নামটি ছিল তার। এই রাজাকারের ছেলে যে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম তা সেই এরশাদ আমলে আমি জানতামনা।

আমি তখন তরুন একজন ছাত্র। নাসিমও তখন তিনি আজকের মতো আলোচিত কেউ ছিলেননা। এই সুযোগে আরেকটি তথ্য বলে নেই। ফেনীর জয়নাল হাজারীর বাবাও একাত্তরের রাজাকার ছিলেন।

হাজারীর রাজাকার বাবার নাম ছিল আব্দুল গনি হাজারী। ১৯৭১ সালে তিনি ফেনীর তথাকথিত শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। ফেনীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের সমাবেশে পাকিস্তানের জন্যে মুনাজাত করেন রাজাকার আব্দুল গনি হাজারী।

তার দোয়া কবুল হয়নি। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু জয়নাল হাজারীর একটি সততা হলো তিনি তার রাজাকার বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর চেষ্টা করেননি। বাংলাদেশের অনেক মুক্তিযোদ্ধার বাবা বা পরিবারের সদস্য এমন রাজাকার ছিলেন। এটিই বাংলাদেশের সামাজিক পারিবারিক বাস্তবতা।

সিনেমায় থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের সময় বা পরে কোন রাজাকার পিতাকে কোন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান গুলি করে মেরেছেন অথবা ধরে বিচারে সোপর্দ করেছেন,  এমন শোনা যায়নি। তবে অনেক মুক্তিযোদ্ধা তাদের রাজাকার স্বজনদের রক্ষা করেছেন।

ভোলার মোখলেসুর রহমান নামের এক রাজাকার আমাকে বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা শহরে ঢুকে পড়েছে দেখে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ভাগ্নের বাড়িতে চলে যান। ওখানে গিয়ে দেখেন তার মতো আরোও অনেক রাজাকার আশ্রয় নিয়েছেন।

ভাগ্নে তাদেরকে বলেন, মামারে তোমাদের পেলে মানুষ এখন পিটিয়ে মেরে ফেলবে। এরচেয়ে বরং তোমাদের জেলখানায় রেখে আসি। ওখানে তোমরা নিরাপদ থাকবে। ‘ভাগ্নে আমাদের জেলখানা রেখে আসলো। ওখানে বসে বসে আল্লারে ডাকলাম।

একদিন শেখ সাব মাফ করে দিলো। বেরিয়ে আসলাম’। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এই যে শেখ সাহেব আপনাদের মাফ করেছিলেন, এ নিয়ে আপনার আজকের মূল্যায়ন কী? আস্তিন গুটিয়ে সেই রাজাকার মোখলেসুর রহমান বলেছিলেন—

‘মাফ করবেনা মানে! আমাদের গায়ে হাত দেয় এমন সাহস কী শেখের ব্যাটার আছিলোনি’! এই হলো গিয়ে অকৃতজ্ঞ রাজাকার চরিত্র। দেশ স্বাধীন হবার পর তাদের রক্ষার ঘরে ঘরে এমন নানান চরিত্র ছিল।

এরকারনে মুক্তিযুদ্ধের পরপর যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচারের সম্মুখিন করা যায়নি।  একমাত্র রাজাকার চিকন আলীর বিচার হয়েছিল। চিকন আলীকেও সাজা ভোগ করতে হয়নি। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরতো পথ হারায় বাংলাদেশ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও বন্ধ হয়ে যায়। ফেনীর রাজাকার সালেহ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছিল সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অভিযোগটি পেয়ে রাজাকার  সালেহ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীকে মন্ত্রনালয়ে ডেকেছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার কথা বলে তাকে মন্ত্রনালয়ে নেয়া হয়নি।

এরপর মন্ত্রী জরুরি ভাবে অভিযোগটি তদন্তের জন্যে ফেনীর জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। এই তদন্তের নির্দেশ জেলা প্রশাসকের কাছে আসার পর জেলা প্রশাসনে চাপা উত্তেজনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

মুহুরি আর ফেনী নদী বিধৌত ফেনী ছোট শহর। এক দৌড়ে ট্রাঙ্ক রোডের এ মাথা থেকে সে মাথায় চলে যাওয়া যায়। একজন রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর ঘটনাক্রমও শহরময় জানাজানি হতেও সময় লাগেনি।

কারন রাজাকারের ছেলের আজকের প্রভাব-প্রতিপত্তি তারা জানেন। এরজন্যেও এ নিয়ে অনেকের আগ্রহ বেশি। তিনি একদা প্রটোকল অফিসার ছিলেন। কিন্তু কিভাবে এখন পর্যন্ত এত প্রভাব-প্রতিপত্তি সে সম্পর্কেও একাধিক সংস্থার প্রতিবেদন রয়েছে।

বাংলাদেশের এখনকার নীতি নির্ধারকরা এমন নানা সংস্থার প্রতিবেদন সংকলনের খবর কতোটা রাখার সময় পান জানিনা। প্রবনতাটি ভীতিকর। কারন দেশে প্রায় বিক্ষিপ্ত দেখালেও নানান ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। টেকনাফে সাবেক সেনা অফিসার হত্যাকান্ডটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।

এখন ফেনীর একজন রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর বৃত্তান্ত জানা যাক। বাংলাদেশের এলাকায় এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা জানেন ওই এলাকায় কারা মুক্তিযোদ্ধা কারা রাজাকার ছিলেন। সংখ্যাটি প্রতিদিন কমছে।

কারন মুক্তিযোদ্ধা-রাজাকার উভয় গ্রুপের সদস্যদেরই বয়স বেড়েছে। সেই ছোট ফেনীতে মুক্তিযুদ্ধের ৪৩ বছর পর ক্ষমতার দাপটের এবং অপব্যবহারের মেশিনের ভিতরে ঢুকিয়ে এক জলজ্যান্ত রাজাকারকে ধুয়ে মুছে বানানো হয় মুক্তিযোদ্ধা!

২০১৩ সালে রাজাকার সালেহ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর নাম প্রকাশ করা হয় সরকারি গেজেটে। এরজন্যে পরশুরামের শফিকুল বাহার টিপুকে কাজে লাগানো হয়। পরশুরামের মুক্তিযোদ্ধারা টিপুকেও ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে চেনেন জানেন।

জাতীয় পার্টির আমলে মন্ত্রী থাকাকালে জাফর ইমাম তাকে মুক্তিযোদ্ধা বানান। এবং তাকে বানান পরশুরাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের যুগ্ম মহাসচিব। তখন ফেনী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ছিলেন আব্দুল হান্নান।

এই আব্দুল হান্নান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা তা নিয়েও ফেনীতে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে প্রশ্ন আছে। পরশুরাম থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কমান্ডার ছিলেন তখন হুমায়ুন শাহরিয়ার। জেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির প্রধান ছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য তালেব আলী।

কিন্তু এই তালেব আলী প্রায় অসুস্থ থাকতেন। প্রায় যাচাই বাছাই কমিটির সভায় যেতে পারতেননা। অভিযোগ আছে রাজাকার সালেহ উদ্দিনের মুক্তিযোদ্ধা সুপারিশ পত্রে তালেব আলীর স্বাক্ষরটাও জাল।

পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে এক মুক্তিযোদ্ধা এ ব্যাপারে মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ করেন। তখনও পুত্রের দাপটেতো রাজাকার সালাহ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীকে মন্ত্রনালয়েই নেয়া যায়নি।

২০১৯ সালে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব পায় ফেনীর জেলা প্রশাসন। কিন্তু চাপে অথবা অতি উৎসাহে এই তদন্ত নিয়ে জেলা প্রশাসন সততার পরিচয় দেয়নি। জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান সাবেক আমলা আলাউদ্দিন নাসিমকে খুশি রাখার কৌশল নেন।

কারন দেশের সবাই এখন পাওয়ার হাউসগুলোর ঠিকানা জেনে গেছেন। আগে থেকে ঠিক করে দেয়া কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে অফিসে ডাকেন জেলা প্রশাসক। তাদের দিয়ে বলানো হয় রাজাকার সালেহ উদ্দিন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন!

একজন রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বলে প্রত্যয়ন দেয়া ব্যক্তিরা হলেন পরশুরামের থানা কমান্ডার হুমায়ুন শাহরিয়ার, দাগনভুঞার কমান্ডার শরিয়ত উল্লাহ বাঙ্গালী (কয়েকদিন আগে মারা গেছেন),ফেনী মীর হোসেন ভূইঞা এবং জেলা মু্ক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মীর আবদুল হান্নান (কয়েক মাস আগে মারা গেছেন)।

সাদা কাগজে তাদের প্রত্যয়ন নেয়া হয় যে রাজাকার সালেহ উদ্দিন মুক্তিযোদ্ধা ছিল! এই জালিয়াতি পর্বের খবর পেয়ে কয়েকজন সাংবাদিক সেদিন জেলা প্রশাসকের অফিসে যান। গোপনীয়তার তাড়ায় তাদের কেউ কোন তথ্য দেননি।

স্থানীয় সাংবাদিকরা যেহেতু রাজাকার পুত্রের দাপট জানান তাই এ নিয়ে কেউ বেশি অনুসন্ধিৎসা চালাতে যাননি। আলাউদ্দিন নাসিম ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার ছিলেন।

এখন কোন সরকারি দায়িত্বে না থাকলেও দাপট ধরে রেখেছেন। তিনি ফেনী গেলে নিজাম হাজারী এমপি, জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, ফেনী পৌরসভার মেয়র হাজী আলাউদ্দিন, সব উপজেলা চেয়ারম্যান সালাম করতে তার গ্রামের বাড়ি যান।

বাড়ির সামনে প্রটোকল ভ্যান দাঁড় করিয়ে রাখে পুলিশ। সবাই জানে ক্ষমতার সঙ্গে তার দহরম মহরম সম্পর্ক। সবাই ক্ষমতার পুজারী। ১/১১’র দাপুটে জেনারেল হাসানও ফেনীর একটি আসনের এমপি। তিনিও বুদ্ধিমান।

বুদ্ধিমানরা ক্ষমতার বিরুদ্ধে দাপট দেখানোর চেষ্টা করেনা। গত সংসদ নির্বাচনে নাসিম ফেনী-১ আসনে মনোনয়ন চেয়ে পাননি। ফেনী-২ আসনেও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাকে মনোনয়ন দেননি।

নির্বাচন এলেই তিনি মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে নিউজ করান। মন্ত্রিসভায়ও প্রায় চলে আসছেন বলে রিপোর্ট করানো হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এসব  মেকিং নিউজের খবরাখবর রাখেন। তাই এসব খবর তাঁর সিদ্ধান্তে কোন প্রভাব সৃষ্টি করতে পারেনা।

সম্পাদক-মিডিয়া মালিকরা তাকে পছন্দ করেন। কারন তিনি তাদের ভালোবাসা দেন। উন্নত বিশ্বের প্রতিটি মহল্লায় ক্লাব-নাইট ক্লাব থাকে। অবসর প্রাপ্তরাই মূলত সেখানে সময় কাটাতে মদ খেতে পোকার মেশিনে খেলতে যান।

কিন্তু বাংলাদেশে এসব ক্লাবে সদস্য হওয়া মানে অনেকের বিবেচনায় জাতে ওঠা। এর কোন কোনটিতে সদস্য হতে মোটা অংকের চাঁদা-অনুদানও দিতে হয়। অনেক সম্পাদকের এই ব্যবস্থাটিও তিনি করে দিয়েছেন। তারা তাকে খুশি রাখেন।

ফেনী ক্যাডেট কলেজ রোডে এখন ঢাকার এক সম্পাদকের বাড়ি আছে। এই বাড়ির জায়গাটিও কিনে দেয়া হয়েছে। এই কৃতজ্ঞতায় তিনি প্রচুর কাজ করেন। ফেনী এলে তাকে নিয়েও অনেক আসর বসে।

এমন নানা প্রভাবে একজন রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধার সম্মান দিয়ে দাফন নিয়ে তারা রিপোর্ট করেননি। যারা নুন খেয়েছেন তারাতো নিমক হারামি করতে পারেননা। প্রধানমন্ত্রী হয়তো এ বিষয়ে সংস্থার রিপোর্ট নিয়েছেন বা নেবেন। আপাতত সবার সে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।