বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়ার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়ার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন

 

গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সিডনির কোগরায় হার্মিস লাউঞ্জে এক বর্নাঢ্য সাংস্কৃতিক এবং আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া। অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া শাখার সভাপতি মো: সিরাজুল হক এবং সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া শাখার সাধারন সম্পাদক পি এস চুন্নু ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই হাবিব হাসান টুলু উপস্হিত সকলকে নিয়ে ১৯৭১ সালে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আনতে গিয়ে যে সমস্ত অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন এবং ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের কালো রাতের ভয়াবহ হত্যাকান্ডে শহীদ বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তাদের পরিবারের সকল সদস্যের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া এবং মোনাজাত পরিচালনা করেন।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়ার আয়োজিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের পাঠানো শুভেচ্ছাপত্রটি পাঠ করেন সিরাজুল হক এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঠানো শুভেচ্ছাপত্রটি পাঠ করেন মহিলা আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক বিলকিস জাহান।বাংলাদেশে নিযুক্ত হাই কমিশনারের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠ করেন এম এ সালাম। সংগঠনের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়াতে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন ফেডারেল মেম্বার ম্যাট থিস্টলেথওয়েত।

প্রধান অতিথি হিসাবে ফেডারেল এম পি ম্যাট থিস্টলেথওয়েত বলেন, ‘ বাংলাদেশের সাথে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক ৫০ বছরের এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন অস্ট্রেলিয়ার সরকার বাংলাদেশের মুক্তির পক্ষেই ছিল। পাশ্চাত্য দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যেই একটি দেশ যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে একটি নতুন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় “। তিনি বাংলাদেশ নামে একটি নতুন দেশের জন্ম দিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সংগ্রামী এবং মেধাবী নেতৃত্বের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

অনলাইনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন এবং বিজ্ঞান বিষয়ক ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর। সংক্ষিপ্ত আকারে বক্তৃতা করেন বিশেষ অতিথি প্রবীর মৈত্র এবং বীর মুক্তিযুদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণ। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জাকারিয়া আল মামুন স্বপন, আলতাফ হোসাইন লাল্টু , মোঃ শফিকুল আলম , মোহাম্মদ আলী সিকদার , এমদাদুল হক বকুল, রতন কুন্ডু । সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিডনি প্রেস এন্ড মিডিয়া কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন এবং বাসভূমি টিভির নির্বাহী কর্মকর্তা আকিদুল ইসলাম।

মুজিব বর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ রজত জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাভাষা ও সাংষ্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষ দক্ষতা অর্জনের জন্য শিশু কিশোরদের সংগঠন কিশোর সংঘের সদস্যদের সার্চিফিকেটের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করে সিডনি বাঙালী কমিউনিটি ইনক এবং উপস্হিত সকল সদস্যকে উপহার প্রদান করে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া শাখা। এছাড়াও জাতির জনকের জন্ম শত বার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবসকে উপলক্ষ করে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া সিডনীতে বেড়ে উঠা শিশুকিশোরদের বাংলা গানের চর্চায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য সীমা আহমেদকে সম্মাননা প্রদান করে।

শিশুকাশোরদের বাংলা গানের চর্চায় বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য নিলুফা ইয়াসমিন কে সম্নাননা প্রদান করা হয়। যন্ত্রে সংগীতে তবলায় প্রজন্মের পাশে থেকে টানা সহায়তা প্রদানের জন্য সাকিনা আক্তারকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। বাদ্যযন্ত্র শিক্ষায় গিটারিস্ট সোহেল খানের নিরলস পরিশ্রমের মূল্যায়ন হিসেবে একই সম্মাননা প্রদান করা হয়। সাংস্কতিক পর্বে মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিশোর সংঘ দলীয় ও একক সংগীত পরিবেশনা করে। কিশোর সংঘের পরিবেশনায় ছিল রায়া, সুবাহ, ঈশান, এরিকা, সাইফান, নুসরাত, সাফান। বিদেশের মাটিতে বড় হওয়া কিশোর সংঘের সদস্যদের শুদ্ধ বাংলা উচ্চারনে হৃদয় স্পর্শী দেশাত্ব বোধক গানের পরিবেশনা উপস্হিত সকলের মন ছুঁয়ে যায়। অনুষ্ঠানের বাদ্যযন্ত্রের হারমোনিয়ামে ছিলেন নীলুফার ইয়াসমীন, তবলায় সাকিনা আখতার, গীটারে সোহেল খান এবং ঈশান। নৃত্যাঞ্জলী ড্যান্স একাডেমির পরিচালক মৌসুমী সাহার নেতৃত্বে “স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশ” নিয়ে মনোমুগ্ধ কর নৃত্য পরিবেশনা করে অন্তরা, সুবরানা, অহনা, সুদেশনা, তাসলিমা এবং সুপ্রীতি।”স্বাধীনতা শব্দটি কি করে আমাদের হোল” কবি নির্মলেন্দু গুনের বিখ্যাত কবিতাটি আবৃত্তি করেন গোলাম মোস্তাফা এবং সুহৃদ সোহানের লেখা স্বাধীনতার আরেকটি কবিতা আবৃত্তি করেন সিরাজুল হক।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন সেলিমা বেগম।

উপস্হিত সকলকে নিয়ে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার পর নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি টানেন সংগঠনের সভাপতি সিরাজুল হক। অনুষ্ঠানটির সার্বিক শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন মিঠু স্বপ্ন। সার্বিক পরিচালনায় সহায়তা করেন মিল্টন আহমেদ, এম এ সালাম, মেহেদী হাসান কচি ,দিদার আহমেদ , শহিদুল ইসলাম, জাহিদ হোসেন এবং আশরাফুল লাভলু।