হাছিনা আক্তার মিনি:অস্ট্রেলিয়াতে বসবাসকারী বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি –প্রাতিষ্ঠানিক বাংলা শিক্ষার কেন্দ্র তথা প্রবাসে বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে এগিয়ে আসুন। অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষা নীতির একটি হচ্ছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (৭ম -১০ম শ্রেণীতে) ইংরেজির পর ২য় যেকোনো একটি ভাষা শিখা আবশ্যক। একে LOTE (Language Other Than English)বলে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এই ভাষাটিকে অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে নিলে এতে প্রাপ্ত নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে যোগ হবে (UAI–University Admission Index) যা শিক্ষার্থীকে তার কাঙ্ক্ষিত বিষয় নিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা করবে। পারিবারিক পরিবেশে মাতৃভাষার নিয়ত চর্চা, মা বাবার সহযোগিতায় ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে খুব অল্প সময়ে অধিক নম্বর পাওয়া সম্ভব। সেই সঞ্চিত সময় অন্য বিষয় গুলোতে দিয়ে সেই বিষয় গুলোতে তারা ভাল ফলাফল পেতে পারে।
মিশ্র সংস্কৃতির এই দেশের সরকার প্রত্যেক জাতি এবং ভাষাভাষীকে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার, মাতৃ ভাষায় কথা বলা এবং লিখতে পড়তে শিখার সুযোগ করে দিয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর ৩৮ টি ভাষাভাষী তাদের মাতৃভূমি, মাতৃভাষা এবং পূর্ব পুরুষদের সাথে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের অটুট বন্ধন ধরে রাখার লক্ষে তাদের সন্তানদের Saturday School of Community Languages (SSCL)এর অধিন ভাষা শিক্ষা কেন্দ্রে তাদের মাতৃভাষা লিখতে পড়তে শিখার জন্য পাঠায়, যে সংখ্যা বোর্ডের শর্ত পূরণ করতে সক্ষম হয়। পর পর তিন বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অন্ততঃ ১৫জন ছাত্র-ছাত্রী সংশ্লিষ্ট ভাষা নিয়ে পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। এভাবে তারা তাদের মাতৃভাষা কে বোর্ড অনুমোদিত UAI Status প্রাপ্ত ভাষার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে পেরেছে। কয়েকটি দেশের আঞ্চলিক ভাষাও এই মর্যাদার আসনে বসতে পেরেছে।
সবচেয়ে দুঃখের ব্যাপার হল বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলার স্থান সেখানে নেই। অথচ বাংলা ভাষাই হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র মাতৃভাষা যে ভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করতে হয়েছে বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে। এর সন্মান রক্ষা করতে হয়েছে অমূল্য জীবন বিসর্জন দিয়ে। যার জন্য UNESCO বাংলা ভাষার প্রতি সন্মান দেখিয়ে বাঙ্গালীদের মাতৃভাষা দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারী কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে প্রতি বছর পালন করছে। এই লজ্জা রাখার যায়গা নেই- ৮০,০০০ এর বেশি বাঙ্গালী অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছে, প্রতি বছর ১৫০-২০০ বাঙ্গালীর সন্তান উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হচ্ছে অথচ সমগ্র অস্ট্রেলিয়া থেকে মাত্র ১৫জন ছেলে মেয়েও LOTE বিষয় হিসেবে বাংলা ভাষা নিচ্ছেনা। অন্য যেকোনো দেশের ভাষা নিচ্ছে কিন্তু বাংলা নয়! অন্য ভাষা শিখতে কোন বাধা নেই, আগে নিজের ভাষায় স্বাক্ষরতা অর্জন কর তার পর যত খুশি অন্য যেকোনো ভাষা শিখো।
একটি জাতির পরিচয়ের প্রথম স্তম্ভ তার ভাষা, তাই মাতৃভাষা লিখতে পড়তে জানা প্রত্যেকের জন্য আবশ্যক। ধর্মীয় দিক থেকে চিন্তা করলেও দেখা যায় আল্লাহ মাতৃভাষাকে এতটাই গুরুত্ব এবং মর্যাদার স্থান দিয়েছেন যে- নবী করিম (সঃ) এর মাতৃভাষায় পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন যেন তিনি সঠিক এবং সুন্দরভাবে সবাইকে বোঝাতে পারেন। একটা ছোট্ট পাখিও যেখানে নিজের ছানাকে নিজের বুলি শিখায় সেখানে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হয়েও বাঙ্গালী নিজের ভাষা না শিখিয়ে সন্তানদের অন্য দেশের/জাতির ভাষা শিখাতে গর্ববোধ করে। তাদের ভাবটা এমন যেন অন্য যেকোনো ভাষা শিখে তাদের সন্তান সফলতার চরম সীমায় পৌঁছে যাবে আর বাংলা ভাষা শিখলে নেমে যাবে অধঃপতনের ডোবা- নালায়। যেন জাত খুঁয়ে ফেলবে। মাতৃভাষা শিখার জন্য সরকারী সব রকমের সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও মাতৃভাষাকে বাদ দিয়ে অন্য ভাষা শিখতে যাওয়া কতোটা শোভনীয়? কতোটা ধৃষ্টতার?
১৯৫২ সালে মাতৃভাষার অধিকার এবং সন্মান রক্ষার জন্য মানুষ জীবন বলি দিয়েছে আর আজ এত সহজে পাওয়া অধিকার পায়ে মাড়িয়ে যাচ্ছে হতভাগা বাঙ্গালী। সপ্তাহে একটা দিন দুটো ঘণ্টার জন্য সন্তানদের বাংলা শিক্ষা কেন্দ্রে পাঠানোর কথা চিন্তাই করতে পারেননা তারা! এত অবহেলা আর অসন্মান মাতৃভাষার প্রতি!! বাংলা ভাষা শিখতে যাওয়ার মত তুচ্ছ কাজ, সময় অপচয় বাঙ্গালীরা আর কিছুকেই ভাবতে পারেননা। বাংলাদেশ থেকে আসা নতুন অভিবাসীরা পর্যন্ত তাদের সন্তানদের বাংলা শিক্ষা কেন্দ্রে পাঠাতে নারাজ। মনে হয় যেন তাদের ভিসার শর্ত “অস্ট্রেলিয়া ঢোকা মাত্র তোমাকে বাংলা পরিত্যাগ করতে হবে”। তাদের আচরন এমন যেন বাংলাদেশ ছেড়ে আসার সময়ই দেশের সীমানায় দেশের ভাষাকেও ঝেড়ে রেখে এসেছে।
বাঙ্গালীর সন্তান কে বাংলা ভাষা শিখার প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার পাইয়ে দিতে, এই ভাষাকে সরকারি পর্যায়ে সন্মানের আসনে স্থায়ী ভাবে বসাতে ১৯৯৮ সালে বাংলা প্রসার কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটির দীর্ঘ দিনের নিরলস প্রচেষ্টার ফল স্বরুপ ২০০৬ সালে SSCL এর তত্ত্বাবধানে Dulwich Hill high School এ অন্য আরও কয়েকটি ভাষার সাথে বাংলা ভাষা শিক্ষার প্রথম কেন্দ্র চালু হয়। এরপর ২০০৭ সালে ২য় কেন্দ্র শুরু হয় Randwick High School এ। বাংলা ভাষা বোর্ডের অনুমোদন পেয়েছে ৭ম -১২ শ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্য বিষয় হেসেবে যা দুটো ইউনিট সমমানের। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বাংলা নিয়ে পরীক্ষা দেয়া যাবে, সনদপত্রও(Cerificate) পাবে। শুধু প্রাপ্ত নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে যোগ হবেনা অর্থাৎ UAI Status পায়নি। ২০১০ সালে ছাত্র–ছাত্রী সংখ্যা কমতে থাকায় এই দুটো কেন্দ্রই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে বাংলা প্রসার কমিটি সমগ্র বাঙ্গালী সমাজের কাছে আকুল আবেদন জানায় তাদের সন্তানদের বাংলা শিক্ষা কেন্দ্রে ভর্তি করিয়ে কেন্দ্র গুলোকে বন্ধ হওয়া থেকে বাঁচাতে।
দুঃখের বিষয় বহু কাঠ খড় পুড়িয়ে Dulwich Hill কেন্দ্র কোনমতে টিকে গেলেও বাঙ্গালী সমাজের আন্তরিকতার অভাবে, অসহযোগিতার কারণে ছাত্র–ছাত্রী সংখ্যা ২-১ জনে ঠেকে, তাই কর্তৃপক্ষ ২০১২ সালে Randwick কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়। আশার কথা ছিল Campbelltown এলাকা থেকে ১৮জন ছাত্র – ছাত্রী ভর্তি হওয়ায় SSCL কর্তৃপক্ষ Liverpool Girl’s High School এ বাংলা শিক্ষার নতুন কেন্দ্র চালু করে। SSCL ১১’শ -১২’শ শ্রেণীতে বাংলা চালু করার প্রস্তাব দেয় যা ছিল বাংলা ভাষাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছানোর সোনালি হাতছানি। এক্ষেত্রেও অন্ততঃ ১২জন ছাত্র – ছাত্রীর ভর্তি নিশ্চিত করতে না পারায় পেয়েও হারিয়ে ফেলতে হল সুবর্ণ সেই সুযোগটি। একারণে পর পর তিন বছর অন্ততঃ ১৫জন ছাত্র-ছাত্রীর বাংলা ভাষা নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়া এবং বাংলা ভাষা বোর্ড অনুমোদিত UAI Status প্রাপ্ত ভাষার মর্যাদা পাওয়া সুদূর স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে।
কিছু নিবেদিত প্রান বাঙ্গালীর আন্তরিক সহযোগিতা আর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে Dulwich Hill এবং Liverpool কেন্দ্র কোনমতে টিকে ছিল। কিন্তু বাংলা ভাষার আকাশে শুধু দুর্যোগের মেঘের ঘনঘটাই নয় প্রানপ্রিয় মাতৃভাষার মাথায় বজ্রাঘাত পড়তে যাচ্ছে। দুটো শিক্ষা কেন্দ্রই আজ বিলুপ্তির পথে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪-৫ জনে নেমে আসায় SSCL কর্তৃপক্ষ তাদের কঠোর সিধান্ত জানিয়ে দিয়েছে যে ২০১৫ এর মধ্যেই যদি প্রতি কেন্দ্রে অন্ততঃ ১২জন করে ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তি নিশিচত করা না হয় দুটো কেন্দ্রই ২০১৬ সালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হবে। শুধু তাই নয়, আগামী ২০ বছরেও নতুন কোন শিক্ষা কেন্দ্রে বাংলা ভাষা চালু করা হবে না। দুর্লভ এই সুযোগ পুনরদ্ধার করা শুধু দুরূহই নয় অসম্ভবও বটে। বাংলাদেশে জন্ম হয়ে বেড়ে ওঠা, বড় হওয়া মা-বাবারা যেখানে মাতৃভাষাকে নিজের সন্তানদের শিখানো অপ্রয়োজনীয় মনে করে শুধু অবহেলাই করছেনা বর্জনও করছে, সেখানে তাদের সন্তানরা নিজেদের উত্তরসূরিদের জন্য বাংলা ভাষা শিক্ষাকে কি ভাবতে পারে আপনারাই চিন্তা করুন!
বাঙ্গালী সমাজের জাগ্রত বিবেকের কাছে প্রশ্ন “ আমাদের মাতৃভাষা আমাদেরই অবহেলা, অসন্মানের কারণে আজ যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে একি আমাদের জন্য লজ্জা আর গ্লানির নয়?” প্রতি বছর ২৪-২৫ হাজার বাঙ্গালী বাংলা মেলা উপভোগ করতে যান। যে মেলার মুল হল বাংলা সংস্কৃতি আর সংস্কৃতির আত্মা হল বাংলা ভাষা। সেই ভাষাকে পায়ে মাড়িয়ে সবাই মালা পরায় সাংস্কৃতিক উৎসবকে! একদিনের ভালবাসা দেখায় সকাল সন্ধ্যা মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানমালা দিয়ে!! গাছের গোঁড়া কেটে আগায় পানি দিয়ে কি কোনদিন গাছ বাঁচিয়ে রাখা যায়?
অনেকে প্রশ্ন করেন বাংলা শিখে কি হবে? তাদের জন্য অস্ট্রেলিয়ান সরকারের শিক্ষা বোর্ড থেকে পাঠানো বার্তা- যেখানে মাতৃভাষায় স্বাক্ষরতার সুফল বর্ণনা করা আছে সংক্ষেপে।
Saturday School of community language: Developing students knowledge and skills in their background language –
- Provides an opportunity to develop high levels of skills in a student’s background community language
- Improves performance across the curriculum through enhanced literacy skills which are transferable to English
- Helps maintain rewarding relationships with parents, grandparents. relatives and other community members
- Promotes a sense of cultural identity resulting in heightened self-confidence and self- esteem
- Places students in a better position to take advantage of employment opportunities
এই তথ্যগুলো যদি আপনাদের মনকে সন্তুষ্ট করতে না পারে, যদি মনে করেন বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ, দেশে ফেলে আসা আত্মীয়, বন্ধু-বান্দব এগুলোর আর কোন প্রয়োজন আপনাদের কাছে নেই, যদি নিজের অতীত, জন্মের ইতিহাস মুছে ফেলে শুধুই অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে চান, সন্তানকে বড় করতে চান তাহলে আর বলার কিইবা থাকতে পারে? যারা জীবন থেকে background কেটে ফেলতে চান, এর অস্তিত্ব স্বীকার করতে কুণ্ঠাবোধ করেন তাদের শুধু একটা কথাই বলতে চাই- বাঙ্গালী পরিচয় মুছে নিজেকে যতই বিশুদ্ধ Aussie বলে চালাতে চেষ্টা করেন সব জায়গায় সবসময় আপনাকে মুখোমুখি হতে হবে সেই চরম সত্যিটির “ You from…?” কোনদিন কি পূরণ হবে Pure Aussie হওয়ার স্বপ্ন?
যদি মনে হয়- মা-বাবা পরিবার পরিজন, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবী এরা জীবনের গুরত্বপূর্ণ অধ্যায়, মাতৃভাষা বাংলা, জন্মভূমি বাংলাদেশ অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ অংশ, নাড়ির টান উপেক্ষা করতে যদি না পারেন – জন্মভুমিতে ফেলে আশা শৈশব, কৈশোর, যৌবনের, ছাত্র জীবনের রঙিন দিন গুলো যদি হাতছানি দিয়ে ডাকে আর মনে হয় বছরের শেষে বাংলাদেশে ঘুরে আসি সন্তানদের নিয়ে। প্রবাশে বসে বাংলা গান, বাঙ্গালীর উৎসব, মেলা, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, মাতৃভাষা দিবস আপনার ভিতর নাড়া দেয়, ঘরে থাকতে না দেয়, যদি মনে হয় এসবের প্রতি আপনার ভালবাসা একদিনের বা কয়েক ঘণ্টার নয়, আপনার আবেগ অনুষ্ঠান সর্বস্ব নয়, লাভ লোকসানের পিঞ্জরে বন্ধী নয়, তবে নির্দ্বিধায় বলতে হয় বাংলা ভাষার প্রতি আপনার যেমন অধিকার আছে বাংলা ভাষার ও হক আছে আপনার উপর। নিজেকে বাঁচানোর জন্য বাংলা ভাষা আপনার কাছে আর্তি জানাতে পারে, রাখতে পারে দাবি। প্রিয় মাতৃভাষা আজ জীবন- মৃত্যুর মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে ‘আমাকে বাঁচাও’ বলে আত্ম চিৎকারে ভারি করে তুলছে প্রবাশের আকাশ-বাতাস! শুনতে পাচ্ছেন সেই করুণ আর্তি? মাতৃভাষাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসবেন না আপনি, আপনারা কেউ?
আমাদের সবার মা বাবা বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি লিখতে পড়তে উৎসাহিত করে, সর্বাত্নক সহযোগিতা করে মা বাবা হিসেবে সঠিক দায়িত্ত্ব পালন করেছেন বলেই না আজ আমরা দেশে বিদেশে সব জয়গায় নিজেদের মজবুত অবস্থান তৈরি করতে পারছি। আমাদের সন্তানদের জন্য আমাদের ভাবনা কেন এত সঙ্কুচিত করে রাখবো? আমরা কেন আমাদের সন্তানদের মাতৃভাষায় নিরক্ষর করে রাখবো?
সম্পূর্ণ সরকারি খরচ, ছাত্র-ছাত্রীর জীবন বীমা করা থাকে সরকারের পক্ষ থেকে, এত বড় সুযোগ হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলে দেয়া, এতটা নির্বোধ বাঙ্গালী জাতি, মানতে বড় কষ্ট হয়। নিজের ভাল তো পাগলও বোঝে, বাঙ্গালী কি পাগলের থেকেও অধম? যদি তাই না হয় তবে সকল বাংলা ভাষাভাষী, রাজনৈতিক দল সমূহ, ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সর্ব স্তরের জনতার কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ- আসুন আমাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গামী সন্তানদের বাংলা শিক্ষা কেন্দ্রে ভর্তি করি, অনেক কষ্টের অর্জন বাংলা শিক্ষার কেন্দ্র দুটিকে বন্দ হওয়া থেকে বাঁচাই, সন্তানদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বাংলা শিক্ষার দ্বার চিরতরে বন্ধ হওয়া ঠেকাই। Board of Studies এর খাতা থেকে বাংলা ভাষার নাম মুছে ফেলা রোধ করি। আমাদের ভুললে চলবেনা বাঙ্গালীর অতীত হারতে হারতে মরার নয়, বিজয়ের পতাকা হাতে স্বগৌরবে বাঁচার। বিজয়ের মাসে পরাজয়ের মাল্যবরণ কেউ নিশ্চয়ই কামনা করবেনা।
ভর্তির আবেদন পত্র পাওয়া যাবে – www.sscl.schools.nsw.edu.au