অনলাইন ডেস্কঃ ২৮ জুলাই ২০১৫
অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে দুই লক্ষাধিক ডলার হাতিয়ে নেয়ার ছয় মাস অতিবাহিত হলেও এখনো বহাল তবিয়তে আছেন প্রতারক শামীম হায়দার । শামীমের অপকর্মের বাংলাদেশি এজেন্ট ঢাকায় অবস্থান করলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাকে এখনো আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
গত বছরের শেষার্ধে স্থানীয় বাংলাদেশিদের অসচেতনাকে কাজে লাগিয়ে ‘কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে টাস টাস’ !!!- এমন চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারকচক্র এই ডিজিটাল জালিয়াতি করে।
ছয় থেকে সাত হাজার বাংলাদেশির বসবাস অ্যাডিলেডে। প্রতারক শামীম হায়দার অত্যন্ত সুকৌশলে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে জালিয়াতির ষোলকলা পূর্ণ করেন।
বাজার গরম করা বিজ্ঞাপনে বলা হয়, “স্কুল হলিডে অবিশ্বাস্য প্লেন ফেয়ার !!! অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া যাতায়াত মাত্র অস্ট্রেলিয়ান ডলার ১২৫০ (সকল ট্যাক্স সহ) !!! অ্যাডিলেড সিডনী মেলবোর্ন পার্থ ব্রিসবেন থেকে যেখানে বর্তমান বাজার দাম ন্যূনতম অস্ট্রেলিয়ান ডলার ১৯৫০ থেকে ২০২৫, সেখানে আমাদের কাছ থেকে টিকিট না কিনলে এই টিকিটই অন্য কারো কাছ থেকে কিনতে হবে কমপক্ষে অস্ট্রেলিয়ান ডলার ৭০০ বেশি দিয়ে।”
হাই সিজনে কৌশলী প্রচারণার বলি হয়ে অ্যাডিলেডের খেটে খাওয়া বাংলাদেশিরা নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলেন। বাঁশের মজাদার শিরোনামের বিজ্ঞাপন যাচাই-বাছাই না করার পরিণতি যা হবার তাই হলো।
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিদের কাছ থেকে প্রায় ২ লক্ষাধিক অস্ট্রেলিয়ান ডলার হাতিয়ে নিয়ে ভুয়া টিকিট ধরিয়ে দেয়া হয় জনপ্রতি। অনেকেই বিমানবন্দরে গিয়ে ফেরত আসেন, কষ্টার্জিত অর্থের সাথে খোয়ান মান-সম্মান। সুচতুর শামীম হায়দার হাতিয়ে নেয়া অর্থের প্রায় পুরোটাই যথাসময়ে পাঠিয়ে দেয় ঢাকায় তার সহযোগী ট্র্যাভেল ব্যবসায়ীকে।
টিকিট কেলেংকারিতে হারানো টাকা ফেরত পাবার সম্ভাবনা অবস্থাদৃষ্টে ক্ষীণ মনে হবার পাশাপাশি স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের চরম অসতর্কতার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হচ্ছে দেশে-বিদেশে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই মন্তব্য করছেন, অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটিতে উচ্চশিক্ষার হার তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও তাঁরা কেন যাচাই বাছাই না করে বাজার দরের চাইতে ৩০ থেকে ৩৫% কমমূল্যে বিমান টিকিট পেতে মরিয়া হয়েছিলেন ? শামীম হায়দারের হাতে এমন কী আলাদীনের চেরাগ’ দেখতে পেয়েছিলেন তাঁরা ? তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে প্রচলিত পন্থায় যাচাই-বাছাই করা ছিল কয়েক মিনিটের বিষয়, সেখানে তা না করে বাঁশের বিজ্ঞাপনে কেন সাড়া দিয়েছিলেন তারা?
তবে শেষ পর্যন্ত যাই হোক, এখন বলা হচ্ছে ভিক্টিমদের টাকা ঢাকা থেকে আস্তে আস্তে কিস্তিতে ফেরত দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতার প্রত্যাশী প্রতারণার শিকার অ্যাডিলেড প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ( সুত্রঃ ভোরের কাগজ, ২৮ জুলাই ২০১৫)