অনলাইন ডেস্ক: ১৩ অক্টোবর ২০১৫
এই নারীদের গত চুয়াল্লিশ বছর ধরে বীরাঙ্গনা হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এই প্রথমবারের মতো তাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়া হল।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক বিবিসিকে বলছেন, আরো বেশী সংখ্যক বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি সরকার দিতে চায়, তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ার কারণে তাদেরকে সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হচ্ছে।
সরকারি তালিকায় অনেকের নামও উঠেছিল। সরাসরি যারা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছিলেন কিংবা যুদ্ধে অন্য ভূমিকা রেখেছিলেন, এমন পুরুষ ও নারীদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি মেলেনি।
তবে এই প্রথমবারের মতো ৪১ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি গেজেট প্রকাশ করা হল।
এদের একজন সিরাজগঞ্জের মোছাম্মৎ সূর্য বেগম। মাত্র ১৫ বছর বয়সে নিজ বাড়িতে পাক বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
স্বাধীনতার এতগুলো বছর পর আজ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়ে সূর্য বেগম এদিন খুবই আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতনের শিকার নারীদের একটি বড় অংশ ছিলেন গ্রামাঞ্চলের। ফলে সেখানকার রক্ষনশীল সমাজে বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনা করা হয়, অনেক পরিবারে এ নিয়ে খোলাখুলি আলোচনাও হয় না।
কিন্তু সূর্য বেগমের চার সন্তানের সবাই তাদের মায়ের জন্যে গর্বিত বলেই জানান তাঁর ছেলে মোঃ হাফিজুর রহমান। একই সাথে তিনি খুশী মায়ের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির পাওয়ার বিষয়টিতে।
বীরাঙ্গনাদের আত্মত্যাগের বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে অনেক আবেগের বহিঃপ্রকাশ করা হলেও স্বীকৃতির ব্যাপারে দৃশ্যমান তেমন কোনও উদ্যোগ ছিল না।
তবে ৪১ জন বীরাঙ্গনা এখন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে তাঁরা এখন সরকারি ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক বিবিসিকে জানিয়েছেন আরো বীরাঙ্গনাকে সরকার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আগ্রহী।
মি হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিতে আরও পাঁচশোজন বীরাঙ্গনার তালিকা এখন যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।
এছাড়া, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে বীরাঙ্গনারা আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন বলেও তিনি জানান। (সুত্রঃ বিবিসি বাংলা )