অনলাইন ডেস্কঃ ৪০ বছর আগের বিমান ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা অবলম্বনে চলচ্চিত্রের শুটিং চলছিল। এরই মধ্যে সেখানে হাজির হলো ছিনতাই হওয়া একটি যাত্রীবাহী বিমান। বাধ্য হয়ে সাময়িকভাবে শুটিং থামিয়ে দিতে হলো। ঘটনাটি ভূমধ্যসাগরের দ্বীপদেশ মাল্টায়।
গত শুক্রবার লিবিয়ার একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ছিনতাই হয়। পরে তা মাল্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দেশটির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের লিজার মেয়র মাগদা মাগরি নাউডি জানান, বিমানবন্দরটিতে ওই সময় ১৯৭৬ সালে ফ্রান্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা অবলম্বনে এনতেব্বে নামের একটি ছবির শুটিং চলছিল। তিনি বলেন, ঘটনাটা মজার, কারণ বিমান ছিনতাইয়ের চলচ্চিত্রের শুটিং চলার সময় আরেক ছিনতাইয়ের ঘটনা চলছিল।
১৯৭৬ সালে ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসগামী আড়াই শ যাত্রী এবং ১২ ক্রু সদস্যের এয়ার ফ্রান্সের একটি বিমান ছিনতাই করে আট ফিলিস্তিনি। বিমানটির অনেক আরোহী ইসরায়েলের নাগরিক ছিলেন। ছিনতাইকারীরা উড়োজাহাজটি উগান্ডার এনতেব্বে শহরের কাছে এনতেব্বে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করায়। প্রায় সপ্তাহব্যাপী চলে জিম্মি সংকট। ছিনতাইকারীদের দাবি ছিল, ইসরায়েল ও অন্য চার দেশের কারাগারে আটক ৫৪ জঙ্গিকে ছেড়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে জিম্মিদের মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ মার্কিন ডলারও দিতে হবে। এরই মধ্যে ইসরায়েলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাই জোনাথন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে দেশটির একটি কমান্ডো বাহিনী শত্রুর চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘটনাস্থলে আচমকা অভিযান চালায়। এতে আট ছিনতাইকারীর সবাই, উগান্ডার ২০ সেনা এবং ইসরায়েল বাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়া জোনাথন নিহত হন। অভিযানের সময় তিন জিম্মিও নিহত হয়। মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের নিরাপদে ইসরায়েলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনা অবলম্বনেই নির্মিত হচ্ছে এনতেব্বে। গত শুক্রবার মাল্টার বিমানবন্দরে এর শুটিং চলছিল।
তবে লিবিয়ার বিমানটি ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে ছিয়াত্তরের ঘটনাটির বিস্তর ফারাক রয়েছে। ওই ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা ৩০ ছাড়ালেও শুক্রবারে এমন কিছুই ঘটেনি। উগান্ডায় ছিনতাইকারীরা সবাই নিহত হয়েছিল। আর মাল্টায় ছিনতাইকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করেছে। এয়ার ফ্রান্সের উড়োজাহাজটি ছিল আন্তর্জাতিক রুটের, লিবিয়ারটি অভ্যন্তরীণ।
চলচ্চিত্রবিষয়ক মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান আইএমডিবির তথ্যমতে, আগামী বছর এনতেব্বের মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। ( সূত্র: প্রথম আলো )