বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা আই সি সি-তে জোর ধাক্কা খেয়েছে ভারত।
সদস্য দেশগুলির মধ্যে কীভাবে আর্থিক পুনর্বিন্যাস হবে আর আই সি সি আগামী দিনে কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভোটাভুটিতে একঘরে হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বি সি সি আই।
আর্থিক পুনর্বিন্যাসের বিষয়ে ১৩-১ ভোটে ভারতের দেওয়া প্রস্তাবটি পরাজিত হয়েছে আর নতুন পরিচালন নীতির ভোটাভুটিতে ২-৮ ভোটে পরাস্ত হয়েছে ভারত।
আই সি সি আজ এক বিবৃতি জারি করে বলেছে, “পরবর্তী আট বছরে বি সি সি আই মোট ২৯৩ মিলিয়ন ডলার পাবে, ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড পাবে ১৪৩ মিলিয়ন আর জিম্বাবুয়ে পাবে ৯৪ মিলিয়ন। বাকি সাতটি পূর্ণ সদস্য দেশ প্রত্যেকটি ১৩২ মিলিয়ন করে পাবে। অ্যাসোসিয়েট সদস্য দেশগুলি ২৮০ মিলিয়ন আর্থিক সহায়তা পাবে।”
ভারত গত বছর পর্যন্ত ৫৭০ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল আই সি সি-র কাছ থেকে। এর ফলে যে ‘তিন বড় দাদা’ বলে পরিচিত দেশের অন্যতম হিসাবে ভারত বিশেষ সুবিধা পেত, সেটা খোয়ালো ভারত।
আই সি সি-র চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর রফা সূত্র হিসাবে ভারতকে আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু বি সি সি আই সেই রফাসূত্র প্রত্যাখ্যান করেছে।
আই সি সি-র সংবিধানে যে সব পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেটা পাশ হয়েছে ১২-২ ভোটে। প্রস্তাবিত নতুন সংবিধান আই সি সি-র কাউন্সিলের সামনে জুন মাসে পেশ করা হবে।
প্রস্তাবিত নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখন থেকে দুই ধরণের সদস্য দেশ থাকবে আই সি সি-তে : পূর্ণ সদস্য আর অ্যাসোসিয়েট সদস্য।
কী ধরণের সদস্য, সেটার বিচার না করে প্রতিটি দেশই সমান ভোটাধিকার পাবে।
আই সি সি-র চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর বলছেন, “এই নতুন প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হলে বিশ্ব ক্রিকেট আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। একদিকে যেমন ক্রিকেটের ভিত্তি আরও মজবুত করা যাবে, অন্যদিকে ভবিষ্যতে খেলার বিশ্বব্যাপী প্রসারও ঘটবে।”
তবে বিশ্ব ক্রিকেট সংস্থার এই গুরুত্বপূর্ণ ভোটাভুটিতে হেরে গিয়ে ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে সরে আসবে কী না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। ২৫ এপ্রিল সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনও ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণা করে নি।
প্রাদেশিক সদস্যদের নিয়ে বোর্ডের একটি স্পেশাল জেনারেল মিটিং ডাকতে পারে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বি সি সি আইয়ের প্রশাসক গোষ্ঠী, এমন সম্ভাবনার কথা ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যমে ছাপা হয়েছে।
সেই বৈঠকেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে ভারতীয় বোর্ড।
তবে ভারতের ক্রিকেট মহলের একটা অংশ মনে করছে যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে সরে আসাই উচিত হবে – যাতে আর্থিক পুনর্বিন্যাস আর নতুন সংবিধান নিয়ে ভারতকে হেনস্থা করার একটা উপযুক্ত জবাব দেওয়া যায়।
এই অংশটি বলছে, ভারত যদি টুর্নামেন্টে না খেলে, তাহলেই দেখা যাবে যে বাকি দেশগুলো নতুন নীতিমালার ব্যাপারে এগিয়ে যেতে রাজী কী না।
বি সি সি আই আনুষ্ঠানিক ভাবে এই নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করে নি। (সূত্রঃবিবিসি )