বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সত্তরতম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ছিল গত ২৩ জুন, রবিবার। এই উপলক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ সিডনিতে এক ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক আড্ডার আয়োজন করে। রাজনৈতিক আড্ডার শুরুতে আওয়ামী লীগের জন্ম ও বেড়ে ওঠার ইতিহাস পাঠ করে শোনান আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান শামীম। তারপর উপস্থিত সবাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগবিষয়ক বিভিন্ন বক্তব্য রাখেন এবং স্মৃতিচারণ করেন। এর সাথে ছিল লেখক ও আবৃত্তিকার আরিফুর রহমানের মনোগ্রাহী কবিতা আবৃত্তি।
আড্ডায় অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আলোক ১৯৯৬ সালের আগস্টে তার প্রথম সিডনি আগমনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, হিলস ডেল যাবো বলে এয়ারপোর্ট থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছি। আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনে ট্যাক্সি ড্রাইভার বললেন ‘ইউ ব্ল্যাডি বাস্টার্ড ন্যাশন, ইউ কিলড ইওর ফাদার অব দ্য নেশন’।
এছাড়া আড্ডায় অংশগ্রহণ করেন এনায়েতুর রহিম বেলাল, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন, হাসান শিমুন ফারুক রবীন, আলী আশরাফ হিমেল, আরিফুর রহমান, আলাউদ্দিন আলোক, জাকির প্রধানীয়া, রেজাউল হাসান ভুট্টো, আমিনুল ইসলাম রুবেল, শাহনেওয়াজ আলো, হাসান বাবু, লেখক মোস্তফা জামাল জাহেদি, সামান্থা হক, শেখ মশিউর রহমান হৃদয়, জামির আহমেদ, আলাউদ্দিন আলোক, ফয়সাল মতিন, এমদাদ হক, আমজাদ খান, সৈয়দা তাজমিরা আক্তার, তারিক বাপ্পী, নাসিম সামাদ, অপু সারোয়ার, রকি তালুকদার, প্রমুখ।
রাজনৈতিক আড্ডার এক পর্যায়ে আমেরিকা থেকে টেলিফোনে যুক্ত হন ইউ এস এ আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সত্তরতম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান এবং নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ারে আগামী বছরের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দেবার জন্য অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সবাইকে আমন্ত্রণ জানান। পরবর্তীতে টেলিফোনে বাংলাদেশ থেকে রাজনৈতিক আড্ডায় যুক্ত হন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ। তিনিও সবাইকে আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিভক্ত নয়, অস্ট্রেলিয়ায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ করার অনুরোধ জানান।
ড. শাম্মী আহমেদের বক্তব্যের সুত্র ধরে আড্ডার এই পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ায় সম্ভাব্য ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। বক্তারা বলেন, মাত্র দু-তিনজন রাজনৈতিক ধান্দাবাজের ব্যক্তিগত লোভের কারণে, হাতে গোনা কয়েকজন হাইব্রিড আওয়ামীলীরের ধারাবাহিক প্রতারণা ও জামাত-বিএনপি প্রীতির কারণে সিডনিতে বাঙালি সমাজে মুখ দেখানোও দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রতারকদের বাদ দিয়ে যে কোন ঐক্যের উদ্যোগকে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। ভবিষ্যতের ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যাপারে যে কোন ধরণের গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণের ব্যাপারে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
প্রাণবন্ত এই আড্ডার সাথে বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে ছিল বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট নার্গিস কাবাবের চিকেন কাবাব, নান রুটি আর চিপস। দারুণ একটি রাজনৈতিক আড্ডার শেষে উপস্থিত সবাইকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।