অনলাইন ডেস্কঃ ২৮ জুলাই ২০১৫
একাত্তরে মার্চে বাংলাদেশে শুরু হওয়া গণহত্যার খবর পেয়ে যুক্তরাজ্যের লিভারপুলে বসবাসরত বাঙ্গালীদের কাছে ছুটে যান লি ব্র্যান্নান নামক একজন লোকসংগীত গায়ক এবং কবি। তিনি তাদের কাছে জানতে চান কিভাবে তিনি আমাদের মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারেন।
লিভারপুলে সেসময় এক বাঙ্গালীর একটি রেস্তোরা ছিলো যার নাম ছিলো ”কিসমত”। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানী এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান খান এর সাথে সেই রেস্তোরায় ব্র্যান্ননের পরিচয় হয়। ব্র্যান্নন জানতে চায় কিভাবে সে বাঙ্গালীদের সাহায্য করতে পারে। মাহবুবুর রহমান খান জবাবে জানায় একজন শিল্পী হিসেবে সে অনেকভাবেই আমাদের সাহায্য করতে পারে। এর চারদিন পরে ব্র্যান্নান মাহবুবুর রহমান খানের বাসায় যেয়ে তাকে সস্ত্রীক তার বাড়ি নিয়ে যান। সেখানে মাহবুবুর রহমান খানের সাথে দেখা হয় ব্র্যান্নেন এর স্ত্রী এবং তার ব্যান্ডের আরো তিনজন সদস্যের সাথে। ব্র্যান্নেন তাদের জানায়, সে বাংলাদেশের জন্য চারটি গান লিখেছে। সে গানগুলো তাদের শোনার জন্য অনুরোধ করে এবং গানগুলো তাদের ভাল লাগলে সে সেগুলো রেকর্ড করে তাদের দিবে বলে জানায়। গানগুলো শুনে জনাব মাহবুবুর রহমান খান বাংলাদেশের মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রার ধরনের সাথে মিল রেখে কিছুটা পরিবর্তন করতে বলে। ব্র্যান্নন তার গানে পরিবর্তন করে পরদিন সেগুলো রেকর্ড করতে নিয়ে যায় ক্যাম রেকর্ডস লিমিটেড নামক স্থানীয় একটি স্টুডিওতে। সেসময় মাহবুবুর রহমান খানের সহকর্মী মেজবাহউদ্দিনকেও সে সাথে নিয়ে যায়।
রেকর্ডকৃত গানগুলো ছিলোঃ ১) ফ্রিডম ফাইটার্স (২ মিনিট ২৬ সেকেন্ড) ২) মিঃ হিউম্যান (২ মিনিট ৩ সেকেন্ড) ৩) ফাইট, ফাইট, ফাইট (২ মিনিট ১১ সেকেন্ড) ৪) উই উইল সার্ভাইভ (৩ মিনিট ২২ সেকেন্ড)।
ব্র্যান্নন লিভারপুলের বিভিন্ন পাবে এই গানগুলো গাইতো এবং তার রেকর্ড বিক্রি করতো। রেকর্ডের বিক্রয় করে অর্জিত পুরো অর্থই ব্র্যান্নন দান করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের তহবিলে।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের কত অজানা সত্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, এখনো
আমরা সেসব উদঘাটন করতে পারিনি।
(সুত্রঃ www.jonmojuddho.com/lee-brennan/, সাইফুর মিশু)