ঢাকা কলেজ অ্যালাইমনাই এসোসিয়েশন অষ্ট্রেলিয়ার পুনর্মিলনী ২০২৫ অনুষ্ঠিত !

ঢাকা কলেজ অ্যালাইমনাই এসোসিয়েশন অষ্ট্রেলিয়ার পুনর্মিলনী ২০২৫ অনুষ্ঠিত !

গত ১৯ এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজ অ্যালাইমনাই এসোসিয়েশন অষ্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে হয়ে গেল পুনর্মিলনী ২০২৫। ঝাঁকজমক পূর্ণ এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি হয়েছিল সিডনির লিভারপুল স্কাইভিউ ফাংশন সেন্টারে।

ঢাকা কলেজ অ্যালাইমনাই এসোসিয়েশন অষ্ট্রেলিয়ার যাত্রা শুরু হয় ছোট পরিসরে ১৬ জুলাই ২০২৩ সালে সিডনির রকডেলে। সেই থেকে ধীরে ধীরে সংগঠনটি কলেজ অ্যালাইমনাইদের নিয়ে নানা ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে সিডনিতে। গত ১৯ এপ্রিল ছিল বৃহত্তম আয়োজন যেখানে ছুটে এসেছিলেন সুদূর বাংলাদেশ, ব্রীসবেন, নিউ ক্যাসেল, ওলোগং ও সিডনীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাক্তন ছাত্ররা। কলেজ প্রাক্তনদের মধ্যে ১৯৬৩ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত অ্যালাইমনাদের উপস্থিতি ছিল।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত বাজানো হয় এবং কলেজ অ্যালাইমনাইদের পরিচিতির মাধ্যমে অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

১৯৬৫ সালের কলেজ অ্যালাইমনাই এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা কমিটির আহবায়ক জনাব মোস্তফা আবদুল্লাহ বলেন,” আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো যখন , তখন আমি ভেবেছিলাম এতো বিশাল পরিকল্পনা ও বাজেটের কাজটি হয়তো নানান প্রতিকূলতায় থেমে যেতেও পারে, কিন্তু আজকে আমি অবাক হচ্ছি , আমাদের কলেজর প্রাক্তন ছাত্রদের মেধা ও পরিশ্রম দেখে। এতো জাঁকজমক পূর্ণ আয়োজন দেখে আমি মুগ্ধ !”
এছাড়াও তিনি কলেজ জীবনের কিছু উল্লেখযোগ্য স্মৃতি তুলে ধরেন।

১৯৬৩ সালের কলেজ অ্যালাইমনাই অধ্যাপক ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক কিছুটা রসাত্মকভাবে বলেন , ” আজকের অনুষ্ঠানে আমি কলেজ পরিবারের ডাইনোসার মানে সবচেয়ে পুরাতন , যদিও আরো দুই একজন অ্যালাইমনাই এখনো অস্ট্রেলিয়াতে বেঁচে আছেন কিন্তু আমি যেকোনো দিক থেকে ফার্স্ট হওয়ার জন্য এই তথ্যটি জানাইনি। ”

এছাড়াও পুরনো দিনের কথা শোনান বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগের কিছু স্মৃতি নিয়ে ১৯৬৮ সালের কলেজ অ্যালাইমনাই অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আলী কাজী। স্বাধীন বাংলাদেশ হওয়ার পরের কলেজ জীবন নিয়ে গল্প করেন আজাদ আলম ও লরেন্স ব্যারেল I

অ্যালাইমনাই এসোসিয়েশন অষ্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে ঢাকা কলেজের ব্যবস্থপনা বিভাগের আইসিটি বিভাগকে দু’টি কম্পিউটার প্রদান করা হয়।
এই পর্বটি পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামীম আল মামুন। ঢাকা থেকে সংযু্ক্ত হয়েছিলেন উক্ত কলেজের ব্যবস্থপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শিহাবুদ্দীন আহমেদ এবং অন্যান্য শিক্ষকরা।

কবিতা আবৃত্তি করেন সালেহ মোঃ মোস্তফা, শাহীন শাহনেওয়াজ, ডা: রশিদ আহমেদ। ‍সেলিম রেজা মুকুল, সালেহ মোস্তফা, তুষার তাসু ও স্বর্না। সংগীত পরিবেশন করেন সিডনীর অত্যন্ত সুপরিচিত সিরাজুস সালেকিন, মামুন হাসান খান, ডা: রিয়াজুল হাসান মিল্টন, নাফিসা আজাদ, অমিয়া মতিন, সারহা সিদ্দিকি নয়না, তামিমা ও ছোট বন্ধু ফারজান নৃত্য পরিবেশন করেন।

দেশীয় সুস্বাদু নৈশ ভোজের জন্য আমন্ত্রন জানানো হয় প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দসহ অতিথিদের । আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত সকল অ্যালাইমনাইদের আকর্ষনীয় ক্রেস্ট প্রদান করেন ।

মোঃ কামরুজ্জামানেই পরিচালনায় সবশেষে ছিল র‍্যাফলড্র। । অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করার জন্য প্রকাশ করা হয় স্মরণিকা জলপত্র ।

অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করার জন্য প্রবেশপথে তৈরি করা হয় গেট যা ঢাকা কলেজের প্রবেশ পথে দেখা যায়।প্রাক্তন ছাত্ররা এই আকর্ষণীয় কলেজের গেইটে অনেকেই উৎসাহ নিয়ে গ্রুপ ছবি তোলেন। ঢাকা কলেজের গেট বানানোর কাজটি করেন মোহাম্মদ আওয়াল ও কামরুজ্জামান পরিবার।

অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন দেওয়ান পাভেল , সাংষ্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনায় ছিলেন মামুন হাসান খান , শাহীন শাহনেয়াজ , আব্দুল মতিন। স্মরণিকার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন আতিকুর রহমান এবং প্রচ্ছদ আঁকেন লরেন্স ব্যারেল। শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন মামুন হাসান খান ও হিমেল। অভ্যর্থনায় ছিলেন আরিফুর রহমান মানিক , ইমরানুস সামাদ ইমন এবং মোহাম্মদ আওয়াল।

সমাপনী ব্ক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি আবু তারিক। অনুষ্ঠান সফল করতে যারা কঠোর পরিশ্রম করেছেন ,আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অ্যালাইমনাইদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আগামী দিনগুলোতে সকলের সার্বিক মঙ্গল কামনা করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন।