বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা যশোরের ঐতিহ্যবাহী যশোর রোডের শতবর্ষী গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
আইনজীবীরা বলছেন একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষাপটে ছয় মাসের জন্য গাছ কাটার ওপর আজ বৃহস্পতিবার এ স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত।
পাশাপাশি গাছ কাটার সিদ্ধান্তকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করে সরকারের ব্যাখ্যাও চেয়েছে আদালত।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গাছগুলো এখন যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায়ই থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
সড়কটি সম্প্রসারণের জন্য ওই সড়কের দু পাশে থাকা গাছগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো স্থানীয় প্রশাসন, এর পরই এ নিয়ে শুরু হয় তীব্র প্রতিবাদ।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলছিলেন জেলা প্রশাসনের ডাকা সভায় সর্বসম্মতভাবেই গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে গাছ কাটার পর নতুন সড়কের দু পাশে বনায়ন করা হবে।
প্রায় দুশো বছর আগে সড়কটি নির্মাণ করে গাছগুলো রোপণ করেছিলেন স্থানীয় জমিদার কালিপদ পোদ্দার।
যশোর রোড নামে পরিচিত সড়কটি কোলকাতা থেকে যশোর পর্যন্ত বিস্তৃত।
পেট্রাপোল থেকে কোলকাতা পর্যন্ত সড়কও চার লেন হচ্ছে।
তবে সেখানেও গাছ কাটার ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে।
তবে সীমান্ত এলাকায় দু কিলোমিটার রাস্তায় চার লেনের কাজ শেষ হয়েছে গাছগুলো অক্ষত রেখেই।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় এ পথেই দেশ ছেড়েছিলো লক্ষ লক্ষ শরণার্থী, পরে তারা ফিরেও আসেন এ পথেই।
বিখ্যাত কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ রচনা করেছিলেন সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড।
পরে তার ভিত্তিতে গান রচিত হয় যা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবান স্মারক হিসেবে বিবেচিত।
যশোর শহর থেকে বেনাপোল পর্যন্ত রাস্তার দৈর্ঘ্য ৩৮ কি.মি.। এই রাস্তাটি সম্প্রসারণের প্রকল্পটি পাশ হয় ২০১৭ সালের মার্চ মাসে।
এই রাস্তার দুই পাশে সড়ক ও জনপথের হিসেব অনুযায়ী গাছ রয়েছে ২৩শো ১২টি।
এর মধ্যে দুশোর অধিক গাছ রয়েছে যেগুলোর বয়স ১৭০ বছরের বেশি।
গাছ গুলোর সাথে জড়িয়ে রয়েছে নানা ঐতিহাসিক ঘটনা এবং স্থানীয় মানুষের আবেগ বিজড়িত স্মৃতি।
তাই গাছগুলো একেবারে কেটে নিশ্চিহ্ন করে রাস্তা সম্প্রসারণের বিষয়টি অনেকেই মেনে নিতে পারছিলোনা। (সূত্রঃ বিবিসি বাংলা )