প্রকৌশলীদের পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অফ বাংলাদেশ (আইইবি) অস্ট্রেলিয়া চ্যাপ্টারের উদ্যোগে সিডনীতে বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপিত হল চতুর্থ ‘ওয়াল্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’। গত ৪ মার্চ, শনিবার সন্ধ্যায় রকডেলের রেড রোজ ফাঙ্কশন সেন্টারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রকৌশলী ও সাবেক কাউন্সিলর শাহাদাত চৌধুরীর সঞ্চালনায় পরিচালিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইইবি অস্ট্রেলিয়া চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল মতিন। দুই শতাধিক বাংলাদেশি প্রকৌশলী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ায় এই প্রথম এই ধরণের একটি অনুষ্ঠান হল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং এলাইয়েন্সের চেয়্যারম্যান এমিরেটাস অধ্যাপক এলিজাবেথ টেইলর। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর হাই কমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকি, বাংলাদেশ বোর্ড অফ এক্রেডিটেশন ফর ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনিক্যাল এডুকেশান (বিএইটিই)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাইফুল আমিন, ইঞ্জিনিয়ার্স অস্ট্রেলিয়া সিডনী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অলিভিয়া মির্জা, সদস্যসচিব অধ্যাপক কাজী বায়েজিদ কবির, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট রিলেশনশিপ অ্যান্ড পার্টনারশিপ ম্যানেজমেন্টের চেতক কেবরা। এছাড়া সিডনীস্থ কনসাল জেনারেলসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের বেশ কয়েকজন উর্ধতন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীত বাজিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এর পর ছেলেমেময়ারা ১৩টি পোস্টারে মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা আইইবি’র ১৩টি ওভারসীস চ্যাপ্টারের পরিচিত তুলে ধরে, যা সবার কাছে প্রশংসিত হয়।
অনুষ্ঠান উদ্বোধনীর পর আইইবি অস্ট্রেলিয়া চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ড. এএইচএম কামরুজ্জামান তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও অস্ট্রেলিয়ার চ্যাপ্টারের কার্যক্রম, বাংলাদেশের প্রকৌশল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ওয়াশিংটন অ্যাকর্ডের পূর্ণাঙ্গ স্বীকৃতি অর্জনের জন্য কিভাবে কাজ করে যাচ্ছে তা তুলে ধরেন। অধ্যাপক সাইফুল আমিন বিশ্বের অন্যান্য প্রকৌশল সংগঠনের সাথে জোট বেধে বিএইটিই কিভাবে কাজ করে যাচ্ছে সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। অন্যদিকে এমিরেটাস অধ্যাপক এলিজাবেথ টেইলর তাঁর বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তারা অস্ট্রেলিয়ার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। অতিথিদের বক্তব্যের পর বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন প্রকৌশলী সোহেল করিম, প্রকৌশলী শফিক শুভ, অধ্যাপক আতাউর রহমান, ড. রফিকুল ইসলাম, ড. জাহিদ হক, সহযোগী অধ্যাপক নিয়াজ শেখ, প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, প্রকৌশলী আবু সাইদ আসাদ, প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান, প্রকৌশরী মোসাররত হোসেন খান, প্রকৌশলী সাদিয়া আফরীন, প্রকৌশলী রশীদ পাটোয়ারী এবং প্রকৌশলী জিয়াদ হাসান। ওয়াল্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ডে উপলক্ষ্যে আইইবি অস্ট্রেলিয়া একটি বিশেষ স্মরণিকা বের করে। প্রকৌশলী ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্পাদিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন মান্যবর হাইকশিনার এম আল্লামা সিদ্দিকি । অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশী মহিলা প্রকৌশলীদের সন্মাননা প্রদান। প্রতিকূল পরিবেশে প্রকৌশল পেশায় অবদান রাখার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত মহিলা প্রকৌশলীদের মেডেল পরিয়ে দেন প্রধান অতিথি এলিজাবেশ টেইলর। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সিডনীর জনপ্রিয় শিল্পী অমিয়া মতিন, সোফিয়া মামুন, ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও আইইবি কেন্দ্রিয় কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম। এছাড়া একটি কবিতা আবৃত্তি করে শোনান প্রকৌশলী সাইদ আসাদ। ড. মামুন পরিবেশিত নিজের লেখা পদ্মা সেতুর থিম সং দর্শক নন্দিত হয়েছে। প্রকৌশলী শফিক শুভ পরিচালিত সাংস্কৃতিক পর্বটি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া প্রকৌশলী ও তাঁদের
পরিবার প্রানভরে উপভোগ করেন। আগামীতে আরো বড় আকারে অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ও সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন সংগঠনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মতিন।