অনলাইন ডেস্ক: ১০ জুলাই ২০১৫
বাংলাদেশে দু’দিন ধরে চলা গুঞ্জনের মধ্যে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আজ মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সরকারের বিভিন্ন সূত্র বলেছে, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের প্রতি যাতে বেশি মনোযোগ দিতে পারেন, এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম কারণ হতে পারে।
এদিকে, দল এবং মন্ত্রণালয়ের কাজে তার পর্যাপ্ত সময় না দেয়ার ব্যাপারে নানান অভিযোগ রয়েছে।
শেষপর্যন্ত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হলো।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন।
সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এটুকুই বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ক্ষমতাবলে এটি করেছেন।
মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, মন্ত্রীদের দায়িত্ব পুনর্বন্টনের ক্ষেত্রে কখনও কারণ ব্যাখ্যা করা হয় না।
সেনা সমর্থিত বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা যখন কারাগারে ছিলেন, তখন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দলের হাল ধরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলকে সক্রিয় রাখার জন্য ভূমিকা রেখেছিলেন।
এরপর নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ২০০৯ সালে দলের কাউন্সিলে তিনি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন।
সেই থেকে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
কিন্তু তিনি মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত যান না এবং দলেও সেভাবে সক্রিয় নন।
দলটির নেতা কর্মিরা তার কাছে জায়গা পায় না।
এ ধরণের নানান অভিযোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জানেন, এই ধারণা দলটিতে রয়েছে।
এখন হঠাৎ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকের কাছে আচমকা ঘটনা বলে মনে হয়েছে।
দু’দিন আগে এ ব্যাপারে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল একনেক এর বৈঠকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অনুপস্থিতিকে কেন্দ্র করে।
যে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আর সেই বৈঠকের পরই তাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে খবর প্রকাশ হয়েছিল।
সেদিন তিনি তার নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টাকে গুজব হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এখন তাকে সরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে সরকারের কেউ খোলামেলা কিছু বলছে না।
সিনিয়র কয়েকজন মন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাতে বেশি মনোযোগ দিতে পারেন, সেই চিন্তা থেকেই হয়তো প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দিয়েছেন।একই ধারণা দলটির ভিতরে কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ।
এদিকে, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। (
সুত্রঃ বিবিসি বাংলা, ১০ জুলাই ২০১৫)