অনলাইন ডেস্কঃ ৫ আগস্ট ২০১৫
ভিটামিন এ ও সির সবচেয়ে ভালো উৎসগুলোর একটি হলো কামরাঙা। ফলটি পাকার পরই খেতে সবচেয়ে ভালো। তবে বেশি পেকে গেলে স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। কামরাঙা দেশে দেশে নানাভাবে খাওয়া হয়। এই দক্ষিণ এশিয়াতেই কিন্তু চিনি দিয়ে রান্না করে কামরাঙা খাওয়ার চল আছে। চীনে আবার মাছ দিয়েও রান্না করা হয়। অস্ট্রেলিয়ায় রান্না হয় সবজি হিসেবে। জ্যামাইকায় কামরাঙা শুকিয়ে খাওয়ার চল আছে। ভারতে আচার বানানো হয়। বাংলাদেশে কামরাঙার রস দিয়ে বানানো শরবত বানান অনেকেই। আর স্কুল-কলেজের সামনে তেল-ঝাল দিয়ে মাখা কামরাঙা তো বেশ জনপ্রিয়।
ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো বলেন, ‘কামরাঙা অত্যন্ত উপকারী ফল হলেও কিডনি রোগীদের জন্য এটি কখনো বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। কিডনি রোগী ছাড়া সবাই খেতে পারবেন কামরাঙা। এটি শুধু পুষ্টি পূরণ করে না। অনেক ধরনের রোগ প্রতিরোধেও অংশ নেয়।’
প্রতি ১০০ গ্রাম কামরাঙায় শক্তি মেলে ৩১ কিলোক্যালরি। শর্করা ৬.৭৩ গ্রাম, চিনি ৩.৯৮ গ্রাম, খাদ্য ফাইবার ২.৮ গ্রাম, স্নেহ ০.৩৩ গ্রাম, প্রোটিন ১.০৪ গ্রাম, ভিটামিন সি ৩৪.৪ মিলিগ্রাম ছাড়াও কামরাঙায় পাওয়া যায় ভিটামিন এ, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও জিঙ্ক। এবার কামরাঙার পূর্ণ কাহন জেনে নেওয়া যাক।
ত্বকের সৌন্দর্য কামরাঙার জুড়ি নেই। এ ছাড়া যারা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য কামরাঙা ওষুধের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কামরাঙায় থাকা জিঙ্ক ও অন্যান্য উপাদান ব্রণ হওয়ার জন্য যেসব ব্যাকটেরিয়া দায়ী তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, সেই সঙ্গে হরমোনের তারতম্য নিয়ন্ত্রণেও সক্ষম।
ঠান্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এই ফলটি। কামরাঙা মুখে রুচি ফিরিয়ে আনে, সেই সঙ্গে মুখের নানা রোগের বিরুদ্ধেও লড়ে।
প্রাকৃতিক আঁশপূর্ণ এই ফলটি ওজন কমাতেও কার্যকর। অন্যদিকে কামরাঙায় ক্যালরি নেই বললেই চলে। তাই ওজন বাড়ানোয় কোনো ভূমিকা রাখারই সুযোগ নেই ফলটির।
কামরাঙা মুখের রুচি ও হজমশক্তি বাড়ায়। পেটের ব্যথা উপশমে কামরাঙা কার্যকর। কামরাঙায় আছে এলজিক অ্যাসিড। এটি অন্ত্রের ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
মাথাব্যথা কিংবা হাড়ের সংযোগস্থলের ব্যথা উপশমেও কামরাঙার জুড়ি নেই। নিয়মিত কামরাঙা খেলে এগুলো সহজেই এড়ানো যায়।
উচ্চ রক্তচাপে ভোগা রোগীর জন্যও কামরাঙা উপকারী। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তাঁরা নিয়ম করে এক ফালি কামরাঙা খেতে পারেন।
হৃৎস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যও কামরাঙা খেতে পারেন। কামরাঙায় থাকা প্রাকৃতিক উপাদানগুলো হৃদ্রোগ প্রতিরোধে বিশেষ কার্যকর।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, কামরাঙার শরীরের জন্য ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলের মাত্রা বাড়াতে সক্ষম, অন্যদিকে খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখে। তাই কামরাঙা খান নিয়মিত। ( সুত্রঃ প্রথম আলো)