ইনিংস ব্যবধানেই অস্ট্রেলিয়ার পরাজয় ও মাইকেল ক্লার্ক এর বিদায় ঘোষণায় …।

ইনিংস ব্যবধানেই অস্ট্রেলিয়ার পরাজয় ও মাইকেল ক্লার্ক এর বিদায় ঘোষণায় …।

অনলাইন ডেস্কঃ ০৮ আগস্ট ২০১৫

চলতি অ্যাশেজ শেষেই অবসর নেওয়ার খবর নিশ্চিত করলেন মাইকেল ক্লার্ক। ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্ট শেষে পুরস্কার বিতরণীতে অবসর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ভিজে উঠল অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়কের চোখ। মেনে নিলেন, বিদায়ের সঠিক সময় এটিই।

ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হওয়ার আগেই ছড়িয়ে পড়ে ক্লার্কের অবসরের খবর। ম্যাচ শেষে স্কাই স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকার ও কাছের বন্ধু শেন ওয়ার্নের সঙ্গে কথা বলার সময় ক্লার্ক নিশ্চিত করেন অবসরের খবর।

“আর একটি টেস্টই খেলব, এরপর অবসর। খেলাটা ছাড়তে তো ইচ্ছে করে না কখনই। তবে আমি সবসময়ই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে গর্ববোধ করি। কিন্তু আমার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিজের কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

ক্লার্ক দলের ঘুরে দাঁড়ানোর দায়িত্ব তুলে দিলেন পরবর্তী নেতৃত্বের হাতে।

“বড় বড় আসরগুলোর জন্যই আমরা খেলি; ওয়ানডেতে বিশ্বকাপ, টেস্টে অ্যাশেজ। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এখন সময় পরবর্তী অধিনয়কের, চেষ্টা করা এবং পরের অ্যাশেজের জন্য দলকে গড়ে তোলা।”

পরে ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টের পুরস্কার বিতরণীতে মাইকেল আথারটনের সঙ্গে ক্লার্কের আলাপচারিতার বড় অংশ জুড়েও ছিল অবসর প্রসঙ্গ। এক পর্যায়ে গলা ধরে এল ক্লার্কের, ভিজে উঠলো চোখ। মাথা নিচু করে অশ্রু সংবরণের চেষ্টা করলেন! খানিক পর নিজেকে সামলে মুখে হাসি ফুটিয়ে বিব্রত কণ্ঠে বললেন, ‘টিভিতে এভাবে ধরা পড়লাম…ও মাই গড!”
এখানেও অবসরের জন্য নিজের বাজে ফর্মের কথা বললেন ক্লার্ক।

“আমি সবসময়ই নিজেকে দায়িত্বশীল মনে করেছি। কিন্তু নিজেকে যেখানে দেখতে চাই, এই সিরিজে সেটির ধারে কাছে ছিলাম না আমি। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারিনি। সরে দাঁড়ানোর তাই এটিই সঠিক সময়।”

ক্ষনিকের জন্য ক্লার্ক ফিরে তাকালেন তার ক্যারিয়ারে। আর ভবিষ্যতের জন্য দলকে জানালেন শুভকামনা।

“একশর বেশি টেস্ট খেলতে পেরেছি বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। ক্যারিয়ারে আমি সিনিয়র ক্রিকেটারদের কাছ থেকে শিখেছি, সেটা ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগও পেয়েছি। ড্রেসিং রুমে এখন এত প্রতিভা, এই দল ঘুরে দাঁড়াতে পারে। সেই সম্ভাবনা এই দলের আছে।”

ক্লার্কের অবসরে শেষ হতে যাচ্ছে ১১ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের। ২০০৪ সালে ব্যাঙ্গালুরুতে অভিষেক টেস্টে ১৫১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে পা রেখেছিলেন টেস্ট ক্রিকেটে। ক্রমে হয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারের ভরসা, বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ও দৃষ্টিনন্দন ব্যাটসম্যান। অধিনায়ক হিসেবেও রিকি পন্টিং উত্তর টালমাটাল সময়ে শক্ত হতে ধরেছিলেন দলের হাল। দলকে তুলেছিলেন টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে, নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশের মাটিতে ৫-০ ব্যবধানে অ্যাশেজ জয়ে।

ক্যারিয়ারের ১১৪ টেস্টের ৪৬টিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন দলকে। অধিনায়কত্বের শুরুতে ব্যাট হাতেও ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। নেতৃত্বের প্রথম ৩০ ম্যাচে করেছেন ১২টি শতক। করেছিলেন ট্রিপল সেঞ্চুরি, আরও ৩টি ডাবল সেঞ্চুরি। কিন্তু গত কিছুদিনে ব্যাট কথা বলেনি আগের মত। শেষ ১৩ ম্যাচে শতক ২টি। সবশেষ ১২ ইনিংসে পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি একবারও।

ব্যাটিং ব্যর্থতাই শেষ পর্যন্ত কাল হলো তার। বিদায় নিতে হচ্ছে চাওয়ার আগেই। অতি নাটকীয় কিছু না হলে অক্টোবরের বাংলাদেশ সফরে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেবেন ক্লার্কের ডেপুটি স্টিভেন স্মিথ। ( সুত্রঃবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)