বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের বাইরেও নাজনীন সুলতানার আরও কিছু পরিচয় আছে জা মানুষের অজানা

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের বাইরেও নাজনীন সুলতানার আরও কিছু পরিচয় আছে জা মানুষের অজানা

সৌমিত্র কুমার বিশ্বাস : ডঃ আতিউর রাহমান এর সাথে আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও দুজন ডেপুটি গভর্নর চলে গেলেন। এদের মধ্যে একজন নাজনীন সুলতানা। বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি স্বল্প পরিচিত মুখ। তাঁর বিদায় নিয়ে কেউ চিন্তিত হবেনা, তাঁর চলে যাওয়ায়ও কেউ দুঃখ পাবেনা। তবে তাঁর সম্পর্কে কেউ কিছুই জানবেনা, সেটা বড় অনুচিত হবে। তাই আজ চলে যাওয়ার পরে তাকে কেউ স্মরণ না করুক, আমি করব।

নাজনীন আপা আমার দেখা অন্যতম ভালো মানুষগুলোর একজন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের বাইরেও তাঁর আরও কিছু পরিচয় আছে জা মানুষের অজানা। আপার উত্থান বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়ে না, তাঁর উত্থান মুক্তিযুদ্ধ দিয়ে। ওই সময়ে তিনি বদরুননেছা কলেজর ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র বিপ্লবের সাথে সক্রিয়ে ভাবে নিজে জড়িত ছিলেন। শুধু তাই না, যুদ্ধের সময় আহত মুক্তি যোদ্ধাদের নার্স হিসাবেও সেবা দিয়েছেন।

পরবর্তীতে উনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞান থেকে পাশ করে ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগাযোগ দান করে। উনি বাংলাদেশের প্রথম দিক কার কম্পিউটার প্রোগ্রামার। এই সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার আগেই তিনি বাংলাদেশ ব্যাংককে ডিজিটাল করার কাজে নিয়জিত ছিলেন। বাংলাদেশের যে তিনটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ছিল, তাঁর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি। শিক্ষিকা হিসাবে যোগদান না করে, তখনকার পুরুষ সমাজের কাজ গুলিকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের নারী অগ্রগতির অন্যতম সৈনিক ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম নারী ডেপুটি গভর্নরও তিনি।

আপার সাথে কাজের সূত্রে অনেক দেখা হয়েছে, অন্য বস রা যেখানে মুখ গোমরা করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মত রাশভারী মুখে কথা বলতেন, সেখানে আপনার ব্যবহার ছিল অমায়িক। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিটাল যুগের সূচনা শুরু। এত অর্জনের পরও এমন দুঃখজনক ভাবে তাকে বিদায় নিতে হবে, এটা কাখনো ভাবিনি।

যে হাত দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করেছেন, সেই হাত দিয়ে দেশের কোনও ক্ষতি তিনি করতে পারেন, এটা স্বয়ং ঈশ্বর এসে বললেও আমি মানতে নারাজ। ( ফেইসবুক থেকে নেয়া)