ফজলুল বারী:মশা মারতে কামান দাগা নিয়ে রসাত্মক একটা উপমা আছে বাংলা সাহিত্যে। এটি এখন সত্য বাস্তব বাংলাদেশে। ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে ঢাকা জুড়ে মশার বিরুদ্ধে যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি। উচ্চ আদালত এতে হস্তক্ষেপ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এসেছে। সেনাবাহিনী মশা মারতে শুরু করেছে সেনানিবাস এলাকাগুলোতে। সেনা প্রধান বলেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় চাইলে সেনাবাহিনী ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং মশা মারতে আত্মনিয়োগ করবে। শরমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ নিয়ে মুখ খোলেননি। কারন এ কেমন দেখায়! তিনি মন্ত্রী, তার তথা সিভিল প্রশাসনের ব্যর্থতা ঢাকতে সেনাবাহিনী নামতে চাইছে। তবে সরকারের এক্ষেত্রে সাড়া দেয়া উচিত ছিল। আপনারা হাতিরঝিল বানানো সহ নানাকিছুতে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগান, জরুরি এ পরিস্থিতিতে শরম বড় হয়ে গেলো? তবে ঢাকার চলতি ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সেনাবাহিনীরও শরম পাওয়া উচিত। কারন দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর পোশাক পরা দুই কর্মকর্তা। জেনারেল এরশাদ প্রশাসনের যে সামরিকায়ন করে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া-শেখ হাসিনা তাতে হাত দেননি। সে কারনে দেশের প্রধান নানা প্রতিষ্ঠানের মতো ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পদেও সেনাবাহিনী থেকে প্রেষনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা কী করেন ওখানে বসে? সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তাদের দায়দায়িত্ব কী? মশামারা দুর্নীতির দায় কী তারা এড়াতে পারেন? এখনন কী তারা চুপচাপ বসে নাটক দেখছেন? তারা কথা বলেননা বলে সফেদশুভ্র ? বলদ রাজনীতিকরাই শুধু মানুষের গালি খায়।
ডেঙ্গুর পুরো বিষয়টি নিয়ে দেশ জুড়ে বিশেষ একটি জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নাগরিকরা ক্ষুদ্ধ, আতংকগ্রস্ত। তাদের জীবনযাপনের খরচ বেড়ে গেছে। হরতালে রাজনৈতিক অসন্তোষ, বন্যা-প্রাকৃতিক দূর্যোগে যেমন তাদের ব্যয় বাড়ে ডেঙ্গু উদ্বেগকে কেন্দ্র করেও তাদের ব্যয় বেড়েছে। যে পরিবারের সদস্যের ডেঙ্গু ধরা পড়েছে তাদের উদ্বেগ-আতংক-ব্যয়ের বিষয়টি শুধু তারাই জানে। এসব পরিস্থিতিতে ফতুর হয় একেকটি পরিবার। কারন জীবনসংগ্রামের নানান ব্যয়ের বাইরে এই ব্যয়ের জন্যেতো তারা প্রস্তুত ছিলোনা। যাদের পরিবারের কোন সদস্য এখনও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়নি, নানা সতর্কতায় মশার ওষুধ-স্প্রে কেনা সহ এটাসেটায় তাদেরও বেড়েছে জীবনের ব্যয়।
মানুষের ভোগান্তির আসল দিক এড়িয়ে কান্ডজ্ঞানহীনের মতো মেয়ররা যখন পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে এরসঙ্গে গুজব তত্ত্বের সংযোগ খোঁজেন তখন বুঝতে হয় তারা ব্যর্থ এবং হতবিহবল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী যখন বেকুব বাচাল বর্নবাদীর মতো এডিস মশার সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জড়ান, এতে যে তার চাকরি নড়বড়ে হয় তা তিনি বোঝেননা? কারন তাকে যিনি চাকরি দিয়েছেন মোহাম্মদ নাসিমের মতো একটিভ একজন মন্ত্রী বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেছেন, এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্যে তিনি মাদার অব দ্য হিউম্যানিটি। আর এখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জড়ানোর কারন কী? বাচ্চা বেশি পয়দা করে? রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে আপনারা বিশ্বজুড়ে প্রশংসা পেয়েছেন-পাচ্ছেন, কিন্তু তাদের কী অন্য কাজ দিয়েছেন না অন্য কাজে ব্যস্ত করেছেন? যাদের কোন কাজ নেই তাদের স্ত্রী সঙ্গম আর বাচ্চা পয়দা করা ছাড়া আর কোন কাজ আছে কী? ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ, ডাক্তার-নার্স-হাসপাতাল কর্মী সবাইতো কাজ করছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীও কাজ করছেন। কিন্তু ফাউল টক করলে যে এসব কাজ-পরিশ্রম সব ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আপনাদের না জানা একটা ঘটনা লিখছি। অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি দশ সপ্তাহ পরপর স্কুলগুলোতে দু’সপ্তাহের ছুটি থাকে। এই সময় অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের নিয়ে ছুটি কাটাতে বিভিন্ন দিকে চলে যান। সিডনি প্রবাসী এক বাংলাদেশি কর্মজীবী মা এই সুযোগ দুই বাচ্চাকে নিয়ে গেলেন বাংলাদেশে। এখানে বাড়ি দেখাশোনা সহ নিজের চাকরির কারনে থেকে গেলেন বাচ্চাদের বাবা। প্রবাসীদের দেশে যাওয়া মানে যে কত আনন্দের তা শুধু প্রবাসীরা অনুভব করতে পারেন। এই মাও দেশে ফেরার খুশিতে দেশের নানাকিছুর ছবি পোষ্ট করেন ফেসবুকে। ফেসবুক লাইভে গিয়ে দেখান চেনাজানা পথগুলো নিয়ে তার আবেগ। বড় ছেলেটির বয়স পনের। সে আবার তার স্কুলের এক্সট্রা ক্যারিকুলামের জন্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম বানাতে চাইলে মা তাদের নিয়ে গেলেন কক্সবাজার। সেখান থেকে ফেরার পর ছোট ছেলেটির ডেঙ্গু ধরা পড়লে মাটি হয় পরিবারটির দেশে যাবার আনন্দ। স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ছোট ছেলেটিকে। বড় ছেলেটিকে গায়ে নারকেল তেল মাখিয়ে মশারির মধ্যে নানার বাসায় রাখা হয় এক রকম গৃহবন্দী করে। সিডনি থেকে উদ্বিগ্ন পিতা নির্ঘুম যোগাযোগসহ নানা মনিটরিংএর কাজ করছিলেন।
ছাত্রজীবনে এই দম্পতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ন নেতৃত্বে ছিলেন। দল ক্ষমতায়। দেশে এই দম্পতির অনেক ডাক্তার বন্ধু থাকায় বাচ্চাটির যত্মআত্তিতেও সমস্যা হচ্ছিলোনা। কিন্তু জটিল পরিস্থিতির কারনে এরমাঝে ছেলেটি একবার ভালো হয়ে গিয়ে দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। আতঙ্কিত অনেক আত্মীয়স্বজন ঢাকার বাইরে থেকে ছেলেটিকে দেখতে ঢাকা আসতেও ভয় পান। এরমাঝে শেষ হয়ে যায় দু’সপ্তাহের স্কুল হলিডে। কিন্তু মা এবং ছোট ছেলেটির টিকেট বাতিল করে তাদের হাসপাতালেই কন্টিনিউ করতে হয়। স্কুল খুলে যাওয়া পনের বছর বয়সী বড় ছেলেটি একা একা চলে আসে ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর হয়ে সিডনি। দেশে বেড়াতে যাবার আনন্দের বদলে ছেলের চিকিৎসার রাহা খরচ, হাসপাতাল বিল, টিকেট পরিবর্তন বাবদ অতিরিক্ত খরচ হয়ে যায় চার-পাঁচ লাখ টাকা। স্বপ্নের দেশটা এখন এমন সবার জন্যে বিপদজ্জনক হয়ে উঠেছে। এরপরও কিন্তু আমরা দেশে যাই-যাবো। কারন দেশটাকে আমরা ভালোবাসি।
এখন এই পরিবারটির সামর্থ্য থাকায় পুরো পরিস্থিতি তারা সামাল দিয়েছেন। দিচ্ছেন। কিন্তু দেশের সীমিত সামর্থ্যের যে সব মানুষ-পরিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে তাদের অবস্থা কী? সিটি মেয়র-সরকার সবার বড়বড় কথা-গুজব এসব বাকোয়াজি করে পার পাবার সুযোগ নেই। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর চিকিৎসার সমুদয় দায়িত্ব তাদের নিতে হবে। কারন এই দায় তাদের। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে দুই মেয়র এবং দায়িত্বশীলরা পেরেশান হবারও কিছু নেই। পেরেশান হয়ে সমাধান আসবেনা। যদি ঢাকা সিঙ্গাপুরের অবস্থায় থাকতো আর পরিস্থিতি হঠাৎ খারাপ হয়ে যেতো তাতে পেরেশানির ছিলো। বিদেশি নানা সূচকে ঢাকা এখন একটি বাস অযোগ্য শহর। কিন্তু এই শহরকে বাসযোগ্য করতে আনিসুল হকের যে সব চেষ্টা-মিশন-ভিশন ছিল এই দুইজনের সেই মেধা আল্লাহপাক তাদের দেননি। দক্ষিনের মেয়র হঠাৎ একদিন হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে পরিচ্ছন্নতার প্রদর্শনী করলেন রেকর্ডে নাম তোলার জন্যে! এরপর সব দায়িত্ব শেষ! চান্স পেলেই ইনি এই করবো শেষ করবো বলে একটা বক্তৃতা দিয়ে ফেলেন। এসবের কোন ফলোআপ নেই। তার বাবা মোহাম্মদ হানিফ মেয়র থাকতে একটা ঘটনা মনে পড়ে। সম্ভবত শীতের আগে এক অনুষ্ঠানে হানিফ ভাই বললেন যখনই তাকে মশায় কামড়ালো তখনই তিনি ব্যস্ত হয়ে গেলেন। কারন তাকে যখন মশা কামড়িয়েছে নাগরিকজীবনও নিশ্চয় মশার তোপের মধ্যে আছে। এই মেয়রদের যে জীবন তাদের মশা কামড়ানোর সুযোগ পাওয়া কঠিন। নাগরিক জীবন নিয়েও তাই তাদের মাথাব্যথা কম।
এরা শুধু মশা মারা না, একটা সাফল্য দেখাক কোথায় তারা সফল। ঢাকার একটা ফুটপাথ যারা মানুষের হাঁটার উপযোগী করতে পারেনা, নাগরিকদের রাস্তায় একটা পরিচ্ছন্ন টয়লেটের ব্যবস্থা করতে পারেননা তারা কী মেগাপ্রকল্প করবেন? যেহেতু তাদের সাধারন মানুষের মতো ফুটপাথ ধরে হাঁটতে হয়না, কোন একটি পাবলিক টয়লেটে ঢুকতে হয়না, তাদের শহরে মানুষের জীবন কত অনিরাপদ তা তারা জানবে কী করে? এরজন্যেইতো তাদের ফাউল টক করতে হয়। মেয়রদের অফিসে সারাদিন যে সব সহমতভাই লোকজন ভিড় করে দেখা করতে যায় এদের প্রায় সবাই ধান্ধাবাজ। এরা নাগরিকদের প্রতিনিধিত্ব করেননা।
বহুবছর আগে একটি রিপোর্টে লিখেছিলাম পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের বড় অংশ মশা নিয়ে গবেষনায় ব্যস্ত। কারন যে এলাকার মশায় যে ঔষধ প্রয়োগ করা হয় সেই এলাকার মশায় এর প্রতিরোধক সৃষ্টি হয়ে যায়। তখন পৃথিবীতে ডেঙ্গু-চিকনগুনিয়া এসব ছিলোনা। পৃথিবীর বাসযোগ্য শহরগুলোর পরিবেশই সেভাবে পরিচর্যা করা হয় যাতে মশা বা রোগের কারন কীটপতঙ্গ জন্মাতে-বাড়তে না পারে। আর ঢাকাসহ বাংলাদেশের কোন শহরেইতো এখন বাসযোগ্য পরিবেশই নেই। এসব শহরের দায়িত্বে-কর্তৃ্ত্বে আসার জন্যে একেকজন শুধু লম্বাচওড়া বুলি আওড়ান। কিছুইতো করতে পারেননা। যা পারেন তাহলো বলে বেড়ানো এর দোষ তার দোষ।
গাদাগাদি ঢাকা শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পয়োঃপ্রনালী বলতে কিছু নেই। মশা জন্মানোর জন্যে উর্বর এ শহর। এখন সে মশাকে দোষ না দিয়ে বলা হচ্ছে ডেঙ্গুর এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে জন্মায়। অর্থাৎ বলার চেষ্টা হচ্ছে মেয়রদের নোংরা নর্দমায় নয়, নাগিকদের বাসাবাড়িতে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা। এক মেয়র বললেন আরও ঔষধ ছিটানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। আরেকজন বললেন, এসব ঔষধে মশাই মরেনা। আদালতে মেয়রদের উকিলরা বললেন দক্ষিনে ওষুধ দিলে মশারা চলে যায় উত্তরে! এমন এলোপাতাড়ি বক্তব্য একেকজন দিয়েই চলেছেন! সর্বশেষ যোগ হয়েছে গুজব তত্ত্ব। যেন কোন লোকের ডেঙ্গুই হয়নাই! হাসপাতালে রোগীরা আসছে-আছে সব গুজব! মেয়র সাহেব-মন্ত্রী সাহেবদের বলি, একটু ধাতস্থ হোন। ওষুধে যদি মশা না মরে তাহলে কী দিনের পরপর এসব ওষুধ কিনে-ছিটিয়ে সিটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা দুর্নীতি-লুটপাট করেছেন? তাদের ধরুন। তিনি সেনা অফিসার অফিসার হোন আর যেই হোননা কেনো। কেউতো আইনের উর্ধে না। এখন দায়দায়িত্ব দিয়ে এদের বরখাস্ত করতে শরম পান? এরা যখন ক্ষমতা নেয় মেয়রদের বরখাস্ত করতে এক সেকেন্ডও দেরি করেনা।
ডেঙ্গু নিয়ে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে এটা শহরবাসীকে নিয়ে সামাজিক আন্দোলন ছাড়া মোকাবেলা অসম্ভব। সামাজিক আন্দোলন কেনো গড়ে উঠছেনা এতে নিজেদের ব্যর্থতা খোঁজ করুন। মেয়র হানিফ বা আনিসুল হকের নেতৃত্বেতো সামাজিক আন্দোলন হয়েছে। আপনাদের পিছনে লোক দাঁড়াচ্ছেনা কেনো? ফাউলটকের মতো গুজব গুজব চেঁচালে মানুষ বিরক্ত হয়। এতে করে আপনাদের নেতৃত্বে আর যাই হোক সামাজিক আন্দোলন হবেনা। দেশের সব রাজনৈতিক দলকে বলবো বক্তৃতা-বিবৃতি অনেক দিয়েছেন, আগামীতেও দেবেন। আক্রান্ত পরিবারগুলোর পাশে গিয়ে দাঁড়ান। টাকা দিতে হবেনা। একটু সার্ভিস দিন। রক্তের ব্যবস্থায় সহায়তা করুন। মানুষ বাঁচলে অনেক বক্তৃতা-বিবৃতি দিতে পারবেন। রিজভির মতো ফাউলটক বিএনপি যতোদিননা বন্ধ করছে ততোদিন এ দলটার অগ্রগতির সুযোগ নেই। পরিস্থিতি নিয়ে সরকার হতভম্ভ হতে পারে। কিন্তু সরকার দেশের মানুষ মারার জন্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে এমন ফাউলটক বিএনপির রিজভি ছাড়া আর কার পক্ষে করা সম্ভব?
এখন আসল কথায় আসি। এডিস মশা-ডেঙ্গু মোকাবেলায় আপনারা ভবিষ্যতে কী করবেন না করবেন এসব ভবিষ্যতে করুন। এখন আক্রান্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ান। সরকারি বা বেসরকারি যে হাসপাতালেই হোকনা কেনো চিকিৎসার পুরো ব্যয় সিটি কর্পোরেশনকে দিতে হবে। কারন এ পরিস্থিতির দায় তাদের। কর্পোরেশন যদি না দেয় সরকারকে তা আদায় করে দিতে হবে। আদায় না করতে পারলে দিতে হবে সরকারকে। আপাতত অন্তত রোগী প্রতি একটা থোক বরাদ্দের ঘোষনা দিন। আপনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রান দেন, আগুনে পুড়ে মরলে বা সড়ক দূর্ঘটনায় মরলেওতো কুড়ি হাজার টাকা করে দেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত-ক্ষতিগ্রস্তদের দায়িত্ব নেবেননা কেনো? ভবিষ্যতে কত কোটি টাকার মশার ঔষধ কিনবেন কে কত টাকা মারবেন সেটা নিজেদের মধ্যে থাক। কিন্তু এখন এই পরিস্থিতিতে সব রোগীদের সরকারি খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা, সর্বশান্ত পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরনের ব্যবস্থা করতে হবে। কেউ একজন এ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। এভাবে একটা দায়বদ্ধতার নজির সৃষ্টি হোক। ডেঙ্গু আক্রান্ত পরিবারগুলোর প্রতি সহানুভূতি জানাই। এই একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তাদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে রাষ্ট্রকে। যে রাষ্ট্র নিজের টাকায় পদ্মাসেতু বানায় সে রাষ্ট্রে এভাবে মনুষ্য সৃষ্ট পরিবেশের বলি হয়ে মানুষ মরবে কেনো?