গত ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সিডনির ব্যাংকসটাউনের ব্রায়ান ব্রাউন থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গানে গানে জোছনা সিজন-৩। করণাকালীন দীর্ঘ বিরতির পর শিল্পী যুগল আরফিনা মিতা ও আতিক হেলাল সিডনিতে একটি প্রানবন্ত অনুষ্ঠান উপহার দিলেন ।
নব্বইয়ের দশকে জনপ্রিয় ব্যান্ড যেখানে প্রধান ভোকালিসট ছিলেন আতিক হেলাল , সেই ব্যান্ড এর একটি গান দিয়ে শুরু করেন। তারপরে বাংলাদেশ ও ভারতীয় কিছু জনপ্রিয় , মৌলিক ও চলচিত্রের গান আতিক হেলাল ও আরফিন মিতা দর্শকদের উপহার দেন। দর্শকপূর্ন গ্যালারী আর সুরের মূর্ছনায় একটি স্মরণীয় সন্ধ্যা উপভোগ করেন সিডনির বাংলা সংগীত প্রেমীরা। শিল্পী আতিক হেলাল ও আরফিনা মিতার সুরেলা কণ্ঠের মাতোয়ারা হয়েছিল অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত সকল দর্শক শ্রোতা।
স্টেজে দর্শক গ্যালারি থেকেও কয়েকজন শিল্পী কয়েকটা গান গেয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩৬০ ইভেন্টের আত্বাবুর রহমান , বাংলাদেশ কাঁপানো অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সংগীত শিল্পী মেহেদী হাসান , দর্শকদের থেকে আরো কেউ কেউ স্টেজে হয়ে উঠে আসেন শিল্পীদের সাথে গলা মেলাতে।
অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ান মিউজিক জগতের অন্যতম গীতিকার গ্যারি উইলসন সঙ্গীত নিয়ে চমৎকার একটি নিবন্ধ তুলে ধরেন। উল্লেখ্য , গ্যারি কথা রাখার জন্য অনুষ্ঠানে থাকে যদিও মাত্র আগের দিন তিনি তার মা কে হারিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি এসে , ধন্যবাদ দেয়ার জন্য যখন আতিক হেলাল ও আরফিন মিতা অনুষ্ঠানে যারা পৃষ্ঠপোষকতা ও অন্যান্য সহায়তা করেছেন তাদের ধন্যবাদ জ্ঞপন করেন। আর তখনই ‘গানে গানে জোছনা’ র প্রথম দুই পর্বের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ব্যবসায়ী লিংকার্স গ্ৰুপের পরিচালক মাহমুদ হোসেন স্টেজে এসে আতিক হেলাল ও মিতাকে তাদের বাৎসরিক এই অনুষ্ঠান বন্ধ করতে নিষেধ করেন এবং তিনি সবার সামনে ঘোষণা দেন, গুণী শিল্পী যুগলের আগামী ‘গানে গানে জোস্না’র জন্য তিনি প্রধান পৃষ্ঠপোষক হবেন।
‘গানে গানে জোছনা সিজন -৩’ অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়ার পরপর আতিক হেলাল ও আরফিন মিতা। কিন্তু অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে আত্বাবুর রহমান মাইক হাতে নিয়ে দর্শক গ্যালারি থেকে সিডনির কয়েকজন পরিচিত কমিউনিটির মুখকে ডেকে স্টেজে নিয়ে দর্শরদের সামনে রেখে একে একে সবার মতামত জানতে চান কার কি অনুভূতি , আতিক হেলাল ও আরফিনা মিতার ‘গানে গানে জোছনা’ কি শেষ হবার ঘোষণায় নিয়ে।
এই ঘটনায় আতিক হেলাল ও মিতা বিস্মিত হয়ে যান! স্টেজে ও দর্শক গ্যালারির সবাই একসাথে একই মতামত ব্যক্ত করেন , ‘গানে গানে জোছনা’ অবশ্যই চালানো উচিত এবং দর্শদের মনে চাহিদা রাখার জন্য এই যুগলকে অনুরোধ করেন।
আতিক হেলাল ও আরফিন মিতা আবেগে আপ্লুত হয়ে যান কিন্তু কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। অনুষ্ঠানের শেষ হয় আনুমানিক রাট ১১ টায়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে , সিডনি বাঙ্গালী কমিউনিটির পক্ষ থেকে সেলিমা বেগম ফুলের তোরা দিয়ে আতিক হেলাল ,আরফিন মিতা এবং তাদের টিমকে শুভেচ্ছা দেন এতো সুন্দর একটি অনুষ্ঠান উপহার দেয়ার জন্য।
অনুষ্ঠানে সার্বিক শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন আত্বাবুর রহমান এবং রডনি আর সহায়তায় ছিলেন মাহাদী। বাংলাদেশে থেকে আগত শিপ্লীদের মধ্যে রাজীব (কিবোর্ড), পাভেল (সাক্সফোনে, ফ্লুয়েট এবং হারমোনিকা), শাহরিয়ার (অক্টোপ্যাড এবং ড্রাম ) এবং অস্ট্রেলিয়ার শিল্পীদের মধ্যে প্রাঞ্জল (বাস গিটার), সাদিক রাহমানী (লিড গিটার ও রিদম), অভিজিৎ ডান ( তবলা) ।
আলোক চিত্রে ছিলেন আকাশ দে এবং ভিডিওগ্রাফিতে ছিলেন শিমুল শিকদার।