সিডনি প্রতিনিধি : গত ১লা জুন বুধবার সন্ধ্যায় সিডনির লাকাম্বায় অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনার মান্যবর কাজী ইমতিয়াজ হোসাইন বিভিন্ন মিডিয়া ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্বদের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময়ের আয়োজন করেন। অস্ট্রেলিয়ার দায়িত্বভার গ্রহণের পর সিডনিতে এটা ছিল তার মিডিয়া ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্বদের সাথে অপরিকল্পিত সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময়ের আয়োজন।
এই সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময়ের শুরুতে কমিউনিটি ব্যক্তিত্বদের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ আলী শিকদার উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সভা শুরু করেন। মান্যবর হাইকমিশনার প্রথমেই বলেন বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রবাসে বাংলাদেশকে কিভাবে তুলে ধরছে এবং বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া’ সম্পর্ক কিভাবে আরো সাবলীল করা যায় এ ব্যাপারে আলোচনা ও পরামর্শের জন্য কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও মিডিয়ার গুরত্ত অপরিসীম। তিনি উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশীদের সার্বিক উন্নয়নে কি ধরণের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে এবং এ পর্যন্ত যে সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার বিস্তারিত কার্যকলাপ তুলে ধরার জন্য তিনি সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা আশা করেন। তিনি আরও জানান প্রবাসে বিভিন্ন সময়ে হাইকমিশনের কার্যক্রম যথার্থভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অনেক সময়ই বিভিন্ন তথ্য প্রচার, সাহায্য ও পরামর্শের প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব, মিডিয়া ও সবার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার বিষয়টিকে অতান্ত গুরত্তপুর্ন বলে মনে করেন। তিনি বলেন, ফলপ্রসু পরামর্শ ও প্রচারের মাধ্যমেই আমরা সকলে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে প্রশংসনীয় ভাবে তুলে ধরতে পারবো।
প্রসঙ্গত উল্লখ্য যে, এই সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময় সভায় মান্যবর হাইকমিশনার উপস্থিত কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব, মিডিয়া ও সাংবাদিক-সম্পাদকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময়ে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া বিষয়ক অনেক গুরত্তপুর্ন ব্যাপারে তিনি সকল মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সাথে মত বিনিময় ও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। আলোচনার মধ্যে হাই কমিশন অফিসের সার্ভিস জনিত সমস্যা, অভিবাসন-প্রক্রিয়া, শ্রম-ভিসা, রপ্তানি-বাণিজ্য ও ভোটাধিকার প্রসঙ্গ সহ আরো অনেক গুরত্তপুর্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। প্রবাসে বসে আমরা জাতীয় পরিচয় পত্র পেতে পারি কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি সেক্ষেত্রে এ ব্যাপারে চেষ্টা করার আশ্বাস দেন। এছাড়াও তিনি বলেন শ্রম-ভিসা পাবার ব্যাপারে সরকারকে সঠিক নির্দেশনা দেয়া ও কর্ম-সংস্থানের সুযোগ সৃষ্ঠি করে দেয়া হাই কমিশনের মিশনের একটি পদক্ষেপ হতে পারে। তিনি বাংলাদেশ হাই কমিশন অফিসের জন্য একটি স্হায়ী আবাস এবং ভবিষ্যতে সিডনী, মেলবোর্ন ও এডেলাইডে পর্যায়ক্রমে কনস্যুলেট অফিস খোলার আশ্বাস দেন।
রিটায়ার-ভাতা প্রসঙ্গে উপস্থিত সদস্যদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় যারা রিটায়ার করেছেন তারা বাংলাদেশে বসে রিটায়ার-ভাতা ও সোশ্যাল বেনিফিট গুলো পেতে পারেন কিনা এ বিষয়ে একটি পলিসি-ডিশিসান’ হবে একটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বৈঠকে। এখনো পর্যন্ত ১৪/১৫ টি দেশের সাথে এ ধরনের একটি চুক্তি আছে এবং আমাদের কাছাকাছি দেশ ভারতে যেহেতু এ ধরণের একটি বাবস্থা চালু হয়েছে সুতরাং আমরাও এ ধরণের একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। তাই পরবর্তী আলোচনায় বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া’ দ্বিপাক্ষিক রিটায়ারমেন্ট-ভাতা’ ইস্যুটি একটি গুরত্তপুর্ন এজেন্ডা হিসেবে থাকবে। এছাড়াও তিনি আমদানি-রফতানি বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে কি ধরণের বাবস্থা নেয়া যেতে পারে এ সম্পর্কে সবার পরামর্শ চান।
মোহাম্মদ আলী শিকদারের অনুষ্ঠান পরিচালনায় মান্যবর হাই কমিশনারের সাথে আরো বক্তব্য রাখেন শেখ শামিমুল হক, গামা আব্দুল কাদির, সিরাজুল হক, ডঃ আব্দুল ওয়াহাব, অজয় দাস গুপ্ত এবং ওয়াহিদা আহমেদ। আয়োজকদের পক্ষ থেকে ডঃ রফিকুর রহমান সাপ্তাহিক কার্যদিবসের সন্ধ্যায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।