বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সম্মানজনক এমসিসি ক্রিকেট কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে বর্তমান কমিটির দায়িত্ব। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ ও ১০ জানুয়ারি। সভায় যোগ দিতে রবিবার ঢাকা ছাড়বেন সাকিব। এমসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির সভায় দারুণ প্রস্তুতি নিয়েই আসছেন বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।আজ বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওখানে অনেক এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হবে। ওই এজেন্ডাগুলো আমি জানি। এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। এগুলো নিয়ে আমার একটু পড়াশোনার বিষয় আছে। যেহেতু আলোচনা হবে তাই অপ্রস্তুত অবস্থায় তো যাওয়া ঠিক হবে না।’
পড়াশোনা করেই সিডনি আসছেন সাকিব
২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এমসিসি ক্রিকেট কমিটি। এ কমিটিতে থাকেন বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটার ও আম্পায়াররা। এ কমিটির সভা হয় প্রতিবছর দুবার করে। সাকিবের পাশাপাশি এবার কমিটিতে নতুন সদস্য নিউজিল্যান্ড নারী দলের ক্রিকেটার সুজি বেটস, সাবেক ফাস্ট বোলার ও বর্তমানে ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ, সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। কমিটির বর্তমান চেয়ারম্যান সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইক গ্যাটিং। এ ছাড়া ১৪ সদস্যের কমিটিতে আছেন সৌরভ গাঙ্গুলী, কুমার সাঙ্গাকারা, রিকি পন্টিং, রডনি মার্শ, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, টিম মে, রমিজ রাজার মতো খেলোয়াড়রা।
কমিটির সভায় ক্রিকেটের প্রাসঙ্গিক অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া সমসাময়িক ক্রিকেটের আইনকানুনসহ নানা পরিবর্তন ও ক্রিকেটের ভালো, মন্দ নিয়ে সুপারিশ করে আইসিসিকে। আইসিসি সভায় অনুমোদন সাপেক্ষে বাস্তবায়ন হয় সেসবের। সাকিব বলেন, ‘অবশ্যই রোমাঞ্চিত। এটা অনেক বড় সম্মাননা, পাশাপাশি দায়িত্বও। এর আগে যখন এ মিটিং হয়েছে তখন বাংলাদেশের কেউ ছিল না। আমরা কী সুবিধা পাই কিংবা কী অসুবিধা মোকাবিলা করি এসব নিয়ে ওদের ধারণা কম থাকত। যেগুলো আমি হয়তো শেয়ার করতে পারব।
’দরজায় কড়া নাড়ছে ত্রিদেশীয় সিরিজ। দেশের মাটিতে অনুষ্ঠেয় এ সিরিজ সামনে রেখে টাইগাররা প্রস্তুতি ক্যাম্পে নিজেদের প্রস্তুত করছেন। ত্রিদেশীয় সিরিজের বাকি দুটি দল শ্রীলংকা ও জিম্বাবুয়ে। ১৫ জানুয়ারি থেকে মাঠে গড়াবে টুর্নামেন্ট। এরপর শ্রীলংকার বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলবেন টাইগাররা। আসন্ন সিরিজে বাংলাদেশকেই ফেভারিট বলেছেন তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও রিচার্ড হ্যালসল। সাকিব আল হাসান অবশ্য কিছুটা কূটনৈতিক কৌশলই অবলম্বন করেছেন। বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মনে করেন, ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমাদের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে। কিন্তু দুটো (জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলংকা) দলই ভালো। তা ছাড়া দুটো দলই আমাদের খেলোয়াড় এবং কন্ডিশন সম্পর্কে ভালো জানে। তাই আমার মনে হচ্ছে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা সিরিজই হবে। তবে আমরা যেহেতু এখন অনেক ভালো একটা দলে পরিণত তাই আমাদের ভালো করার সম্ভাবনাই অনেক বেশি।’
হাথুরুসিংহে চলে গেছেন। আসন্ন সিরিজে তাই প্রধান কোচ ছাড়াই মাঠে নামবেন সাকিব-মাশরাফিরা। এর আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘এ সিরিজে কোচের ভূমিকা পালন করবেন সাকিব-মাশরাফি।’ বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক অবশ্য বলছেন, দায়িত্ব সবারই আছে।
সাকিব বলেন, ‘আমাদের সবারই আলাদা আলাদা ভূমিকা আছে। আর সবাই সবার ভূমিকা সম্পর্কে খুবই ভালোভাবে অবগত। ওই ভূমিকাগুলোই সবাই পালন করার চেষ্টা করবে। যদি ওইটা ঠিকভাবে করতে পারি, তা হলে অবশ্যই আমরা সাফল্য পাব। তবে যেহেতু আমরা অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক, স্বাভাবিকভাবেই আমাদের ওপর একটি বেশি দায়িত্ব থাকেই। সেসব দায়িত্ব পালন করতে আমরা প্রস্তুত।
’আইপিএলে কলকাতার সঙ্গে প্রায় সাত বছরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে সাকিবের। বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে এবার নিলামে উঠতে হচ্ছে। অবশ্য এ নিয়ে তেমন কোনো আক্ষেপ নেই সাকিবের। তিনি বলেন, ‘নিলামে নাম থাকবে, যদি কেউ পিক করে তা হলে আলহামদুলিল্লাহ। আর না করলে কোনো ব্যাপার না।’ (সূত্রঃ আমাদের সময় )