ইশতেহারে ডক্টর কামালের ধাপ্পাবাজি

ইশতেহারে ডক্টর কামালের ধাপ্পাবাজি

ছবি-যুগান্তর

ফজলুল বারী:ইশতেহারেও ধাপ্পাবাজি করলেন ডক্টর কামাল! তারমতো নিজস্ব লোকবলহীন রাজনৈতিক ডিগবাজি খাওয়া কয়েক ব্যক্তির যুদ্ধাপরাধী দলের সঙ্গে ধানের শীষ বগলে নেয়াদের ফ্রন্ট, তাদের নির্বাচনী ইস্তেহারে তারা আবার ১৪ টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন! বেশ ভালো ভালো সুবোধ কথামালা! সাংবাদিক নির্মল সেনের কথা মনে পড়ে গেলো। নির্মল সেনের দলের নাম ছিল শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল। ঢাকার তোপখানা রোডে অফিস ছিল। নির্মল দা’র লেখা প্রেস রিলিজ সব সময় থাকতো সুলিখিত। ভালো ভালো কথা। একদিন মজা করে বলি, দাদা আপনিতো প্রেস রিলিজ লিখেই খালাস। আর কিছু করতে হবেনা আপনাকে! আর কিছু করতে হয়না। দাদা বুদ্ধিমান ছিলেন, রাগ করতেননা।
ডক্টর কামালদের অবস্থাও তাই। নিজেদের কিছু করার সামর্থ্য নেই। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নজনের ওপর ভর করে চলেন। অন্যের ঘাড়ে বসে কাঁঠাল ভক্ষনে পটু। ১/১১’র সময় ভর করেছিলেন জেনারেল মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের ওপর। এখন জনগনকে দেশের মালিক বলেন। তখন বলেছেন দেশের মালিক জেনারেল মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন। তার সংবিধানে নাকি লিখা আছে জেনারেল মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনির্দিষ্টকাল চলতে পারে! এখনকার সাংবাদিকরা যখন ডক্টর কামালের বক্তৃতা কভার করতে যান তারা তাকে অনেক প্রশ্ন করলেও এ প্রশ্নটি কেনো যে করেননা! জনগনকে যদি এখন দেশের মালিক বানানোর বাগাড়ম্বর, তখন জেনারেল মই্নুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের পক্ষে সাংবিধানিক ফতোয়া দিয়েছিলেন কত টাকার বিনিময়ে? এই সুযোগে আরেকজনের কথা বলে রাখি, পরে ভুলে যাবো হয়তো। নির্বাচনকে সামনে রেখে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সম্প্রতি বিশাল এক হিসাব দিয়েছেন অত হাজার কোটি টাকা নাকি লোপাট হয়েছে। এই দেবপ্রিয় কিন্তু আরেক সেনা প্রিয়! তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হবার খায়েশে জেনারেল মইনুদ্দিনের অফিসে গিয়ে জি স্যার ইয়েস স্যার বলে বলে চাকরির ইন্টারভ্যু দিয়েছিলেন! এসব অসৎরাই দেশের রাজনীতিকদের বড়বড় নসিহত করে সারাক্ষন!
সেনা প্রিয় দেবপ্রিয় প্রসঙ্গ যখন বললাম ডক্টর কামালের আরেক চিজের কথাও এই সুযোগে বলে নেই। ইনি রেজা কিবরিয়া। শেখ হাসিনা সরকারের অর্থমন্ত্রী শাহ কিবরিয়ার ছেলে। বিএনপি-জামায়াত সরকারের নির্দয় রাজনীতির কারনে যার পিতার মৃত্যু হয়েছে। এখন তিনি পিতার হত্যাকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ধানের শীষে ভোট চাইছেন! সম্প্রতি ভোটারদের তিনি কিছু মিথ্যা বলেছেন। বলেছেন তার পিতা বেঁচে থাকলে নাকি এখন আর আওয়ামী লীগ করতেননা! এটি ডাহা মিথ্যা এ কারনে, যে-এস এম কিবরিয়ার সকাল হতো রবীন্দ্র সঙ্গীত দিয়ে তিনি আর যাই হোক বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে ভোট করতেননা। অনেকে বলার চেষ্টা করেন রেজা কিবরিয়াকে নৌকার নমিনেশন না দেয়ায় তিনি গনফোরামে যোগ দিয়ে ধানের শীষ নিয়েছেন! এটি যে আরেক অসত্য তা এখানে ব্যাখ্যা করছি।
নিশ্চয় সবার এস এম কিবরিয়া নিহত হবার পর রেজা কিবরিয়ার স্ত্রীর বিষয়টিও নজরে এসেছিল। নীলশাড়ি পরে শাশুড়ি আসমা কিবরিয়ার সঙ্গে তিনি প্রতিবাদ করতেন। সেই স্ত্রীর নাম ছিল রীনা সুলতানা। বিটিভির এক সময়কার জনপ্রিয় ধারাবাহিক সকাল সন্ধ্যা’র শাকেরা। রীনা সুলতানা ছিলেন রেজা কিবরিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী। চমৎকার মহিলাটি রেজা কিবরিয়ার বহুগামী স্বভাবের কারনে এই সংসারেও থাকতে পারলেননা।
কিবরিয়া সাহেবের একটি পত্রিকা ছিল মৃদুভাষন। এই পত্রিকার এক মহিলার সঙ্গে তার প্রনয় পরে তৃতীয় বিয়েতে গড়ায়। রীনা সুলতানাকে খুব পছন্দ করেন শেখ হাসিনা। ওই অবস্থায় রীনা সুলতানাকে সমর্থন দিতে তাকে হাইকমিশনের চাকরি দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠান। মায়ের মতো বোনের মতো শেখ হাসিনা বরাবর যা করেন। কিন্তু রীনা সুলতানাকে চাকরি দেয়ায় ক্ষুদ্ধ হন রেজা কিবরিয়া। অথবা তিনি বুঝে ফেলেন শেখ হাসিনার কাছে তার আর স্থান হবেনা। তখন তিনি লাইন দেন ডক্টর কামালের দোকানে। ১/১১’র সময় ফখরুদ্দিন যেমন বিদেশ থেকে তার শ্যালককে নিয়ে এসে তার সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা করেছিলেন, ডক্টর কামাল আবার রেজা কিবরিয়াকে অর্থমন্ত্রী করার টোপ দিয়ে এনেছেন! কম্বোডিয়ায় রেজা কিবরিয়ার চাকরির চুক্তি ছিল আগামী এপ্রিল পর্যন্ত। অর্থমন্ত্রী হবার আশায় আগেই তিনি দেশে চলে এসেছেন।
কিন্তু ইনিতো মাঠেঘাটের রাজনীতির লোকনা। তাই কয়েকদিন নির্বাচনী কাজে থেকে তার মনে হয়েছে গ্রামে তার ভয়ভয় করে! সে কারনে নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে মাঠ ছেড়ে ঢাকা চলে এসেছেন! এই মৌসুমী রাজনীতিকদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ২১ বছরের মাঠেঘাটের সংগ্রামের ধারাপাত আগে পড়া উচিত। কত ঝড়-ঝাপ্টা সামলে তাদের একুশ বছর মাঠে পড়ে থাকতে হয়েছে। রেজা কিবরিয়া কোন মাপের ‘সাহসী রাজনীতিক’, আরেকটা তথ্য দিলে সবাই ধারনা পাবেন। কিবরিয়া সাহেব যখন খুন হন তখন রেজা কিবরিয়ার চাকরি ছিল ইন্দোনেশিয়ায়। বাবা’র খুনিরা ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে তাকে খুন করতে পারে এই ভয়ে তিনি তখন সেখানকার বাড়ি ছেড়ে স্থায়ীভাবে একটি হোটেলে উঠেছিলেন! এরা করবেন বাংলাদেশে রাজনীতি! তাও আবার বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে!
ডক্টর কামাল ইশতেহার পড়ার সময় পাশে বসা ছিলেন বিএনপির মির্জা ফখরুল। নানা কিছু তিনি তাকে ধরিয়ে দিচ্ছিলেন। মির্জা ফখরুলের দলের নাম বিএনপি। তার দলের নেতাদের কথা পাবলিক খায়না বলে তারা ভাড়ায় এনেছেন ডক্টর কামালকে। কিন্তু ফখরুলও জানেন তার আসল চাকরি খালেদা জিয়ার কাছে। তার নেক্সট লিডার ব্রিটেনে থাকা খালেদা পুত্র তারেক রহমান। কাজেই ইশতেহারে ডক্টর কামাল বচন যাই দিননা কেনো তার মূল এসাইনমেন্ট কিন্তু বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতায় নেয়া। কিন্তু বিএনপি বাংলাদেশে একাধিকবার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কী করেছে তা দেশের মানুষ দেখেছে। সে কারনেই ইশতেহারের চৌদ্দ প্রতিশ্রুতি আদতে চৌদ্দটি ধাপ্পা। কেনো এগুলোকে ধাপ্পা বললাম তা এখানে ব্যাখ্যা করবো।
যতোটা জানি এই ইশতেহারটি বিএনপির বুদ্ধিজীবী জাফরুল্লাহ চৌধুরীর লেখা। এসব আগে শফিক রেহমান লিখতেন। তিনি দৃশ্যপট থেকে আউট হবার সুযোগে জাফরুল্লাহ ইন হয়েছে। খালেদা জিয়া মুক্ত থাকতে ইনি বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতায় নানা কথা বলেন ধমক খেতেন। লন্ডনে বসে তারেক রহমানের স্কাইপেতে মনোনয়ন নিয়ন্ত্রন নিয়ে তার উষ্মার টেলিফোন ফাঁসের পর নতুন ধমক খান। ইশতেহারে খুব সুন্দর একটি প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। তাহলো একাদিক্রমে দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেননা। এ বিষয়টি খালেদা-তারেকের দিকে তাকিয়ে লেখা। খালেদা জিয়ার যা বয়স এবং শারীরিক অবস্থা তার পক্ষে আর দুই মেয়াদ প্রধানমন্ত্রী হওয়া-থাকা অনিশ্চিত। এরপর তারেক ও তার স্ত্রী! এসব নিয়ে ভাবতে লিখতে রাজনৈতিক জ্যোতিষ হবার দরকার নেই। এসবের কোথাও ডক্টর কামালদের জন্যে স্থায়ী কোন স্পেস নেই। কারন দেশে আওয়ামী লীগের পর আওয়ামী বিরোধী রাজনীতির মূলধারা বিএনপি। এসাইনমেন্টমাফিক বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতায় নিতে পারলে প্রধানমন্ত্রীর পদটি জিয়া পরিবারের জিম্মাতেই রাখা হবে।
জনভিত্তিবিহীন ডক্টর কামাল, আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্নাকে প্রধানমন্ত্রী করতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দল করেনা। এরপরের ভদ্রবচন, রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য। এটি খালেদা জিয়া এবং অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিনের মডেলে কি হয় তা দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। শেখ হাসিনা দলের বাইরে গিয়ে বিচারপতি সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি করেছিলেন। আনিসুল হককে ঢাকার মেয়র করেছিলেন। কিন্তু কামাল হোসেনকে রাষ্ট্রপতি করার ধারনক্ষমতাও বিএনপি-জামায়াতের নেই। এমাজউদ্দিনরা রাগ করবেন।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার কথা বলা হয়েছে ইশতেহারে। মত প্রকাশের স্বাধীনতাতো বিএনপি-জামায়াতে সবার দেখা। জনকন্ঠের বিজ্ঞাপন বন্ধ করা, ফালুর টেলিভিশন দাঁড় করাতে বন্ধ করা হয় একুশে টিভি। বিএনপি-জামায়াতের প্রতি আনুগত্যের কারনে তখন খুব অল্প প্রচার সংখ্যার পত্রিকা মানবজমিনকে গলা ভর্তি সরকারি বিজ্ঞাপন দেয়া হতো। সেই বিজ্ঞাপন হারানোর শোকে পত্রিকাটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্যে সেই যে কান্না শুরু করেছিল, গত দশ বছরেও সেই কান্না থামেনি। শেখ হাসিনার সহ্য ক্ষমতার প্রমান নিতে মানবজমিনের দশবছরের কার্যক্রমই যথেষ্ট। তারেক-ফালু সহ বিএনপির দুর্নীতিবাজদের ফিরিস্তি ছাপতে ছাপতে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার পাঠক প্রিয় হয়। একুশে আগষ্টের গ্রেনেড হামলায় তারেক সহ বিএনপির সংশ্লিষ্টতা প্রথম ছাপে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার। ডক্টর কামালদের সমর্থনে তারা এখন বিএনপির জন্যে বিব্রতকর এসব নিউজের ফলোআপ প্রকাশ বন্ধ রেখেছে।
আর ডক্টর কামালের কাছে মত প্রকাশের স্বাধীনতার শিরোনামতো ‘চুপ করো’, ‘খামোশ’! ‘চিনে রাখবো, দেখে নেবো’! তরুন এক সাংবাদিক তাকে জামায়াত নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধ যেখানে বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারীদের দলের ডাঃ শফিকুর রহমানকে প্রার্থী করা হয়েছে! কতোটা ধৃষ্টের এই ঐক্যফ্রন্ট! আর এ নিয়ে প্রশ্ন করাতে ক্ষেপে গিয়ে ডক্টর কামাল বলেছেন, এ প্রশ্ন করার জন্যে তরুন সাংবাদিককে কতো টাকা দেয়া হয়েছে! তিনি উকিল টাকা ছাড়া কোন মক্কেলের পক্ষে দাঁড়াননা, অন্য সবাইকেইকে দেখলে তার মতো মনে হয়! দেশের সৎ তরুন প্রজন্মকে কটাক্ষের ক্ষমা নেই ধৃষ্ট ডক্টর কামালের।
ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা আ স ম আব্দুর রব ছিলেন এরশাদের ভোটার বিহীন নির্বাচনের গৃহপালিত নেতা। এরশাদের পতনের পর তিনিও পালিয়ে গিয়েছিলেন। এ প্রশ্নটি করায় রব ক্ষেপে গিয়ে সাংবাদিকের বয়স জানতে চান। এসব বাতিল সব বুড়ো ভামরা করবেন তরুনদের ক্ষমতায়ন? যুবকদের চাকরি নিয়ে প্রতারনামূলক প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরি ছাড়া কোথাও বয়সসীমা থাকবেনা। নতুন চাকরির ব্যবস্থার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ছাড়া চাকরির প্রতিশ্রুতি প্রতারনামূলক। পুলিশ-সেনাবাহিনীর অফিস চাকরির জন্যেতো বয়স বাধা নয়। অস্ট্রেলিয়ায় পয়তাল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত সেনাবাহিনীর চাকরিতে নেয়া হয়।
বাংলাদেশের দরকার কর্মসংস্থানমূলক অর্থনৈতিক কর্মসূচি। যা বিএনপির নেই। দেশে অত সরকারি চাকরিও নেই। মোবাইল ফোনের খরচ কমানোর কথা বলা হয়েছে! বিএনপির ইতিহাসতো একমাত্র দলের মন্ত্রীর সিটিসেল মোবাইল ফোন! ইন্টারনেটে দেশের তথ্য বাইরে চলে যাবার কথা বলে এরা সাবমেরিন কেবলের ফ্রি লাইন নিতে রাজি হয়নি।
গত বারো বছরে তথ্য প্রযুক্তিখাতের বিপ্লবতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়’র নেতৃত্বের কারনে। কারন এ নিয়ে তার বিদেশে পড়াশুনা-কাজের অভিজ্ঞতা আছে। খালেদা পুত্রদের প্রতিভাতো সিএনজি অটোর লভ্যাংশ খাওয়া! সে কারনে ভারতে তখনকার ৫৫ হাজার টাকার সিএনজি অটোর জন্যে বাংলাদেশে শ্রমজীবীদের দেড় লাখ টাকা গুনতে হয়েছে। এসবের আরও প্রসার এবং ব্যয় স্বল্পতা আওয়ামী লীগের অনেক দিনের ঘোষিত কর্মসূচি। বিদ্যুৎ খাতের বাংলাদেশের পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা খাম্বা শিল্প। খাম্বা মামুন এখনও জেলের ভাত খাচ্ছেন। দেশের বিদ্যুৎ খাতের বৈপ্লবিক অগ্রগতির যারা স্বীকৃতি পর্যন্ত দিতে নারাজ তারা বলছে এক বছর বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়াবেনা! বাংলাদেশে এ আরেক প্রতারনা। দাম না বাড়িয়ে অথবা কমিয়ে ভুর্তকি দিয়ে গচ্চা দেবার পাঠ দুনিয়ার মুক্তবাজার অর্থনীতিতে নেই। গচ্চা দিয়ে জনসেবা এ আরেক দুর্নীতি। উৎপাদন ব্যয়ের সামঞ্জস্য ছাড়া অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্বচ্ছ হতে পারেনা।
ইশতেহারের বড় ধাপ্পা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি! খালেদা জিয়ার প্রধান আইন উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন যুদ্ধাপরাধীদের হেড উকিল। বিএনপি বরাবর এই বিচারের বিরোধিতা করেছে। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির পর নিবন্ধনহীন জামায়াতের যখন ছত্রখান অবস্থা তখন দলটির অস্তিত্ব রক্ষার জন্যে বিএনপি তাদের প্রার্থীদের বিএনপি পরিচয়ে ধানের শীষ তুলে দিয়েছে! এবং তাদের আসন দিয়েছে ডক্টর কামালদের বেশি। আর ক্ষমতায় গিয়ে ডক্টর কামালরা করবেন তাদের বিচার! পুরাই প্রতারনামূলক তাদের এই প্রতিশ্রুতি। কারন জামায়াত নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় আমেরিকায় যেমন লবিস্ট নিয়োগ করেছে ডক্টর কামালরা তাদের লোকাল লবিষ্ট ছাড়া আর কিছু নয়। এরজন্যে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে ক্ষেপে যান ডক্টর কামাল। ভবিষ্যতে দেখে নেবার হুমকি দেন। প্রবাসীদের ভোট বাংলাদেশের রাজনীতিকদের আরেক প্রতারনা। বিদেশে লোকজন ওইসব দেশের আইন মেনে চাকরি করতে, অর্থ উপার্জন করতে যায়। রাজনীতি করতে নয়। মনে করুন ভারতের ভোট উপলক্ষে বাংলাদেশে কর্মরত ভারতীয়দের ভোটগ্রহনের ব্যবস্থা করা হলো। বাংলাদেশের আমজনতা বিষয়টিকে কিভাবে দেখবে? প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করতে গেলে দেশের রাজনৈতিক হানাহানি বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দিয়ে সেইসব দেশ থেকে বাংলাদেশীদের বহিষ্কার-শ্রমের বাজারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটানো সম্ভব হবে। মাঝখানে সমস্যায় পড়বে সেই পরিবারগুলো, যারা প্রবাসী আয়ের উপর নির্ভরশীল।