এসো মিলি প্রাণের টানে

এসো মিলি প্রাণের টানে

কামরুল মান্নান আকাশঃ চারিদিকে ফুলের সমারোহ, নীল আকাশ আর পাখির গানে মুখরিত সিডনিতে এখন বসন্তকাল। শীত বিদায় নিয়েছে, গরম আসছি আসছি করছে। এই দুইয়ের মাঝে চমৎকার আবহাওয়া। দিনগুলি এখন দীর্ঘ আর রাত্রিগুলি সংক্ষিপ্ত। ঠিক এই সুন্দর সময়ে গত ২৭ শে অক্টোবর রোববার ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়া আয়োজন করেছিল “ফ্যামিলি ফান ডে”।
সিডনির লিজার্ড লগ পার্কে সকাল দশটায় সময় দেয়া হলেও এগারটা থেকে ভেন্যু সরগরম হয়ে উঠে। সবাই ছুটির দিনে বিলম্বিত ব্রেকফাস্ট দিয়ে দিনটি শুরু করে সতীর্থদের সাথে। একবার তারিখ পরিবর্তন করায় অনেকে একটু গড়িমসি করছিল আসতে। কিন্তু এসে পরিচিতদের দেখে একজন অন্য জনকে জড়িয়ে ধরে উচ্ছ্বাসে। আবার অনেকেই প্রথমবারের মত এসে মুহুর্তের মধ্যেই মিশে যায় অপরিচিতদের মাঝে। অনেকে একদলের সঙ্গে এসে মিলে গেছেন অন্য দলের সঙ্গে। কেউ কেউ আবার ব্যস্ত জীবনে যাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান না, এখানে সেই সুযোগটা পেয়ে যান। পরিজনবিহীন বিদেশের মাটিতে সবাই এই যে এত সহজেই মিলে যায় তার কারণ আমরা সবাই উঠে এসেছি একই শিকড়ের বন্ধন থেকে, সেই শিকড়টির নাম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়”।
জাকিয়া আপা তার বারবিকিউ টিমের সদস্য বাদল, রফিক, খায়রুল ভাই, হায়াত কে নিয়ে শুরু করেন মাংস ঝলসানো, সাথে অন্য আরও অনেকে এসে হাত লাগায়। বারবিকিউর মনকাড়া গন্ধে চারিদিক ভরে উঠে। আর মাওলা ভাইেয়ের বানানো চা ছিল পুরো সময় ধরে। এরই মাঝে চলতে থাকে লায়লার পরিচালনায় ছেলেমেয়েদের ক্রিড়া ও অংকন প্রতিযোগিতা। আকাশের সঞ্চালনায় শুরু হয় স্মৃতিচারনা। অজস্র স্মৃতির ভিড় থেকে তুলে আনা সেই সব রঙিন দিন গুলির কথা বলতে যেয়ে সবাই যেন আবার ফিরে যান ফেলে আসা সোনালী দিনে। দুপুরের লোভনীয় খাবারের পর মিনির পরিকল্পনা ও পরিচালনায় শুরু হয় গানের প্রতিযোগিতা “আন্তাকসারি”। গান জানুক আর নাই জানুক সবাই মহা উৎসাহে অংশগ্রহণ করে, যা ছিল অভূতপূর্ব। মিনির প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় এবং সবার সক্রিয় অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠে উপভোগ্য। এভাবেই তরুণদের সাথে কাঁচা পাকা চুলের মানুষগুলোও যেন খুঁজে পায় দুরন্ত তারুন্যকে। সমিতির সভাপতি মোস্তফা আব্দুল্লাহার পুরস্কার বিতরণ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাঝে শেষ হয় “ফ্যামিলি ফান ডে”। ভাল লাগার এই দিনটির স্মৃতি নিয়ে, আগামীদিনে আবার মিলিত হবার প্রত্যয় নিয়ে সবাই ফিরে যায় প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝে।
এমনি ভাবে প্রাণের টানে আমরা শিকড়ের কাছে ফিরে আসব বারবার।