মাতৃভাষায় বাংলা চর্চা ও তার ইতিহাসকে আগামী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কের গত ২২ বছর ধরে একুশের বইমেলা হয়ে আসছে। এই বছর কোভিড-১৯ এর কারণে বই মেলাটির প্রথম বারের মত ছন্দপতন হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে, কোভিড-১৯ এর শর্তাবলী মেনে গত ২০শে ফেব্রুয়ারী হার্সভিল সিভিক থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয় একুশে একাডেমী আয়োজিত ‘আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’। পুরো অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান এবং আবৃত্তিকার মুনা মুস্তাফা। কারিগরী সহযোগিতায় ছিলেন সংগঠনটির কার্যকরী সদস্য ডঃ মুনীরা হক এবং বুলবুল আহমেদ।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয়েছিল সন্ধ্যা ৬:৪৫, বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। শুরুতেই ১৯৫২ সালের সকল ভাষা শহীদদের স্মরণে এবং একুশে একাডেমীর নিয়মিত সদস্য শারমিন পাপিয়ার অকাল প্রয়াণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে জুমের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন এবং ক্যানবেরা হতে হাইকমিশনার জনাব সুফিউর রহমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র কার্ল সালেহ, বাংলাদেশ দূতাবাসের কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম সহ স্হানীয় সাংবাদিক, কবি, লেখক এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।
একুশে একাডেমী অষ্ট্রেলীয়ার বর্তমান সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুল মতিন আগত অতিথিদের এবং জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এই অনুষ্ঠানের প্রধান সহযোগী হওয়ার জন্য সিডনির বিখাত দৈনিক ‘প্রভাত ফেরী’ কে তিনি তার কৃতজ্ঞতা জানান।
অমিয়া মতিন ,অভিজৎ বড়ুয়া, পিয়াসা বড়ুয়া , সুমিতা দে সহ একুশে একাডেমীর নিয়মিত শিল্পীবৃন্দ দলীয় এবং একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সুমিতা দে’র পরিচালনায় একুশে একাডেমীর শিশু কিশোররা সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে।
একুশে একাডেমীর প্রকাশনা সম্পাদক ডঃ শাখাওয়াত নয়নের সম্পদনায় – একুশে একাডেমীর গত ২১ বছরের নিয়মিত বার্ষিক প্রকাশনা ‘মাতৃভাষা’ থেকে বাছাই করে একটি সংকলন বই আকারে বের করা হয়। দৃষ্টিনন্দন প্রকাশনা এবং উচ্চমানের লেখার জন্য ‘মাতৃভাষা’ দ্রুতই দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বিগত ২০টি বছর যাবত একুশে একাডেমী ফেব্রুয়ারি মাসে রক্তদান কর্মসূচী পালন করে আসছে। অনুষ্ঠানে নিহাল নিয়ামুল বারী ২০২০-২০২১ এর সকল রক্তদাতাদের অভিনন্দিত করেন এবং সকল রক্তদাতাদের নাম উল্লেখ করেন।
সর্বশেষে একুশে একাডেমী অষ্ট্রেলীয়ার সহ-সভাপতি ডঃ সুলতান মাহমুদ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।