মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার অবস্থান কেউ নিতে পারবে না: বিএনপি

মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার অবস্থান কেউ নিতে পারবে না: বিএনপি

জিয়াউর রহমানজিয়াউর রহমানে

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার পদক জাতীয় যাদুঘর থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

প্রায় সপ্তাহ দু’য়েক আগে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছিল মত্রিন্সভার একটি কমিটি। সে প্রেক্ষাপটে বুধবার জিয়াউর রহমানের পদক সরিয়ে নেয় হলো।

সরকার বলছে, উচ্চ আদালতের রায়ে সামরিক শাসনকে অবৈধ ঘোষণার পর জিয়াউর রহমানের নামে স্বাধীনতা পদক থাকতে পারেনা।

তবে বিরোধী বিএনপি বলেছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পদক সরিয়ে নেবার বিষয়টিতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ পদক্ষেপকে তিনি ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন কালুরঘাট থেকে, যিনি জেড-ফোর্সের নেতৃত্ব দিয়েছেন, এবং পরবর্তীতে ওনাকে বীর উত্তম উপাধিও দেয়া হয়েছে। এর পরে যে এরকম একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারে, এটা তো একবারে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছু বলা যাবেনা।”

জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক ফিরিয়ে নেবার বিষয়ে অনেক দিন ধরেই আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিবিসি বাংলাকে বলেন, জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক সরিয়ে নেবার সাথে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কোন সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় সামরিক শাসনকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল উচ্চ আদালত। জিয়াউর রহমান যেহেতু সামরিক শাসনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন সেজন্য তিনি এ পদক পেতে পারেন না বলে তথ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

মি. হক বলেন, “এটা ব্যক্তি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না। সুতরাং এখানে জেনারেল জিয়াউর রহমানের সাথে কোন প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে না।”

২০০৩ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় জিয়াউর রহমানের পাশপাশি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকেও একই পদক দেয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল, তৎকালীন বিএনপি সরকার শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমানকে একই কাতারে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে।

কিন্তু বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটি পদক বাংলাদেশের একাধিক নাগরিক পেতে পারেন। এখানে কাউকে বড়-ছোট করার সুযোগ নেই।

মি. চৌধুরী বলেন, “সামান্য উদারতাও যদি আপনার মধ্যে না থাকে,তাহলে তো সেটা তাদের সমস্যা। এটা জাতীর সমস্যা না, বিএনপি’রও সমস্যা না। আপনি (সরকার) পদক নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে যে অবস্থানে আছেন সেটা তো আর কেউ নিয়ে যেতে পারবেনা।”

একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং সেক্টর কমান্ডার হিসেবে জিয়াউর রহমানের যে স্বীকৃতি আছে সে দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি স্বাধীনতা পদক পেতে পারেন কিনা?

এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, “এটা প্রয়াত রাষ্ট্রপতির অবদান হিসেবে দেয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে না। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তো উনি বীর উত্তম পদক পেয়েছেন।”

এদিকে সরকারি সূত্রগুলো বলছে, যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হতে পারে। এসব পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে যদি কোন স্বাধীনতাবিরোধী থাকে তাহলে সেটা বাতিল করা হবে। (সূত্র:বিবিসি বাংলা)