র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধান আজাদকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলো

র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধান আজাদকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলো

জঙ্গিদের ফেলে রাখা বোমায় আহত র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বুধবার সকালে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার চিকিৎসায় গঠিত বোর্ড বৈঠক করে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।

লাইফ সাপোর্টে থাকা আজাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড  মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, বুধবার রাত সাড়ে আটটায় তাকে বহন করা এয়ার অ্যামবুলেন্সটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার লে.কর্নেল আবুল কালাম আজাদের পরীক্ষা-নীরিক্ষার রিপোর্ট চিকিৎসকদের বোর্ড পর্যালোচনা করে। তার চিকিৎসায় গঠিত বোর্ড আরো কিছু পরীক্ষা করতে দেয়। বুধবার সকালে ঐ রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে চিকিৎসকরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন।
 এর আগে গত রবিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় লে. কর্নেল আজাদকে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের বিশ্ববিখ্যাত নিউরোসার্জন ডা. লি কিমের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন র‌্যাবের  এই চৌকস কর্মকর্তা। তার চিকিৎসার জন্য মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল কর্তৃপক্ষ একটি বোর্ড গঠন করেছে।
গত ২৫ মার্চ শনিবার সিলেটের শিববাড়ির আতিয়া মহল বাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানস্থলের কাছাকাছি জঙ্গিদের বোমার বিস্ফোরণে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে.কর্নেল আবুল কালাম আজাদ গুরুতর আহত হন। বিস্ফোরিত বোমার একটি স্প্রিন্টার লে. কর্নেল আজাদের এক চোখ দিয়ে প্রবেশ করে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। ওই দিন রাতে হেলিকপ্টারে করে তাকে সিলেট থেকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত রবিবার রাত ৮টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের মনকষা গ্রামে লে.কর্নেল আবুল কালাম আজাদের বাড়ি। ৩৪তম বিএমএ লং কোর্সে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ৬ বেঙ্গল রেজিমেন্টের একজন কর্মকর্তা। তিনি ২০০৫ সালে তিনি সিলেটের জালালবাদ সেনানিবাসে প্যারাট্রুপারে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি প্যারাকোমান্ডো হিসাবে উত্তীর্ণ হন। ২০১১ সালের দিকে মেজর আজাদ হিসাবে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক হিসাবে যোগ দেন। ২০১৩ সালের অক্টোবরে তিনি লে.কর্নেল পদে পদোন্নতি নিয়ে গোয়েন্দা শাখার পরিচালক হিসাবে নিয়োগ পান। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন বিশেষ করে জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ ও হিযবুত তাহরীরের সদস্যদের গ্রেফতারের ব্যাপারে লে.কর্নেল আজাদের অবদান রয়েছে।
 র‌্যাব সূত্র জানায়, সম্প্রতি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এ তার পোস্টিং হয়। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে লে. কর্নেল আজাদের র‌্যাব থেকে বিদায় নেয়ার কথা ছিল। তার আগেই তিনি ২৪ মার্চ সিলেটের শিববাড়ির আতিয়া মহলে জঙ্গি অভিযানের খবর পেয়ে র‌্যা বের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক মেজর আজাদকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে ছুটে যান। ২৫ মার্চ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে সেনাবাহিনীর ব্রিফিং শেষে ফেরার সময় রাস্তায় জঙ্গিদের ফেলে রাখা বোমা বিস্ফোরিত হলে তিনি গুরুতর আহত হন।