বঙ্গবন্ধু সোসাইটি অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন

বঙ্গবন্ধু সোসাইটি অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন

গত ২০ শে মার্চ ২০২১ বঙ্গবন্ধু সোসাইটি অস্ট্রেলিয়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১ তম জন্মবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করে ইঙ্গেলবার্নের গ্রেগ পার্সিভাল হলে। প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু প্রেমীরা সেদিন একত্রিত হয়েছিলো। হল ছিলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ। কোভিড নির্দেশনা মেনে অনেকেই হলের বাইরে লাউঞ্জে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী, নিউ সাউথ ওয়েলস এর প্রিমিয়ার, মান্যবর হাই কমিশনার, কনসাল জেনারেল ও ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিল এর মেয়র শুভেচ্ছা বাণী প্রদান করেছেন।

সংগঠনের সভাপতি ড. রতন কুন্ডুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জনাব রফিক উদ্দিনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর হাই কমিশনার জনাব সুফিউর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম। শতকণ্ঠে বাংলাদেশের ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এতে সংগঠনের বয়স্ক ও শিশু শিল্পীরা অংশগ্রহণ করে। এরপর পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করে শোনানো হয়। মূল নিবন্ধ পাঠ করেন ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ড. কাইয়ুম পারভেজ। নির্ধারিত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন উলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. খায়রুল চৌধুরী, ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ড. মাসুদুল হক, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি, জনাব সিরাজুল হক।

প্রধান অতিথির ভাষণে জনাব সুফিউর রহমান বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান বাংলাদেশের উপর আলোচনা করেন। জাতির জনক তাঁর পুরো জীবনেই দেশকে তথা দেশের মানুষকে ভালোবেসে অপরিসীম কষ্টও ত্যাগ তিতিক্ষার মাধ্যমে অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, যা পুরো জাতি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে। তিনি আরো বলেন সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন। এ উন্নয়নের পেছনে রয়েছে তাঁর দূরদর্শিতা, সঠিক দিক নির্দেশনা ও রাষ্ট্র প্রণীত উন্নয়নের নীতিমালা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন পরবর্তী প্রজন্মকে ব্যক্তি জীবনে ধারণ করার উপরও তিনি গুরুত্ত্বারোপ করেন।

বিশেষ অতিথি জনাব খন্দকার মাসুদ উদ্দিন অনুষ্ঠানে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মিজানুর রহমান তরুণ, হেলাল উদ্দিন, শাহাদাৎ হোসেন ও ওসমান গনিকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধিত করেন। এরপর কিশোর কিশোরীরা বিশেষ অতিথি হিসেবে আগত অন্যান্য অতিথি ও ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিলের সম্মানিত মেয়র এর প্রতিনিধি বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কাউন্সিলর জনাব মাসুদ চৌধুরীকে পুষ্পস্তবক প্রদান করে। সম্মানিত কনসাল জেনারেল বক্তব্যের শুরুতেই এরকম একটি বিশাল ও তাৎপর্যপূর্ণ আয়োজনের জন্য বঙ্গবন্ধু সোসাইটি অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও তার অগ্রযাত্রায় তারই সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। কিশোর কিশোরীদের মধ্যে ইনাম তালুকদার, লামিস সাইয়েদ ও রাইসা হালিম স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের উপর বক্তব্য রাখে।

মালিক সাফি জাকি’র মূল পরিকল্পনায় ও বঙ্গবন্ধু সোসাইটির অস্ট্রেলিয়ায় সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফারিয়া নাজিমের সঞ্চালনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের গান পরিবেশিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন, ফারিয়া নাজিম, মিসেস রুনু রফিক, নিলুফা ইয়াসমিন, লামিয়া আহমেদ লুনিয়া, সীমা আহমেদ, রোমানা হক, ফাইজা কালাম রুবা ও অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ। পূরবী পারমিতা বোসের দেশের গানের সাথে অপূর্ব কোরিওগ্রাফি, শিশু-শিল্পী রূপন্তি ও প্রতিশ্রুতির ধ্রুপদী নৃত্য দর্শক শ্রোতাদের বিমুগ্ধ করেছে।

সবশেষে সভাপতি, সংগঠনের সকল সদস্য, আগত অতিথি ও উপস্থিত শিশু কিশোরদের সাথে নিয়ে কেক কাটেন এবং অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। আগত সব অতিথিদের এরপর নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়।