করোনা ভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব গত এক বছরের অধিক সময় ধরে স্বাভাবিক জীবন যাপন থেকে বঞ্চিত ।
অস্ট্রেলিয়াও তার ব্যতিক্রম ছিল না কিন্তু বিগত মাসগুলোতে কঠিন নিয়ম মেনে চলে এবং অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করে করোনা মুক্ত দেশের তালিকায় নাম লিখে নিয়েছে। আর সেই সুযোগে সারা অস্ট্রেলিয়াতে একটু একটু করে স্বাভাবিক জীবনের প্রতিফলন হচ্ছে। কোভিড-১৯ এর নিষেধাজ্ঞাগুলো কমে এসেছে। অফিস, স্কুল , খেলাধুলা , ক্লাব এবং অন্যান্য সাধারণ অনুষ্ঠানগুলো ধীরে ধীরে শুরু হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে গণ বসতিপূর্ণ রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলস যেখানে পৃথিবীর সব কয়টি দেশের লোকজনের বসবাস রয়েছে এবং বছরজুড়ে চলে নানা দেশীয় ও ধর্মীয় উৎসব। অস্ট্রেলিয়া সরকার এতে উৎসাহ দিয়ে আসছে বহু বছর ধরেই। মুসলমানদের ক্ষেত্রেও এর প্রতিফলন রয়েছে। রমজানের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সহ সবকটি রাজ্যের প্রিমিয়াররাও রমজানের শুভেচ্ছাবাণী দিয়েছে।
জীবন স্বাভাবিক হওয়াতে সিডনির জনপ্রিয় সংগঠন সিডনি বাঙালি কমিউনিটি সিডনিতে বসবাসরত বাংলাদেশীদের জন্য আয়োজন করে তিনদিন ব্যাপী ঈদ এক্সিবিশনের।
আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে সেলিমা বেগম বলেন,”পমূলত নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা করা এবং অনেকদিন বন্দী থাকা বাঙ্গালী কমিউনিটির মনে একটু ঈদের আমেজ নাই এই ঈদ এক্সহিবিশনের মূল উদ্দেশ্য। ”
গত ২ মে ২০২১ ছিল দ্বিতীয় দিন। যদিও কোনো স্থানীয় কোভিড-১৯ আক্রান্ত লোক নেয় তারপরেও সম্পূর্ণ কোভিড নিরাপত্তা নিয়ম অনুসরন করে যথারীতি বিগত বছরগুলোর মতোই এইবার ইঙ্গেলবার্ন কমিউনিটি হলে আবারো আয়োজন করে এই ঈদ এক্সহিবিশনের।এই এক্সহিবিশনে স ফেডারেল এমপি ডা: মাইক ফ্রিল্যান্ডার, সাবেক এমপি লরি ফার্গাসন, স্টেট এমপি আনুলাক চন্টিভং, সিডনিতে বাংলাদেশের কনস্যুলেট অফিসের কনসাল জেনারেল মাসুদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ানদের প্রিয় মুখ প্রাক্তন এম পি লরি ফার্গাসন দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসা প্রতিটি মানুষকে অভিনন্দন দেন এবং নিরাপদ পরিবেশে কভিডের সকল নিয়ম মেনে এতো সুন্দর পরিবেশে ঈদ এক্সহিবিশন করার জন্য আয়োজকদের প্রশংসা করেন এবং এই ধরনের উদ্যোগকে উৎসাহ প্রদান করেন ।
মেলায় অংশগ্রহনকারী বাংলাদেশী ২৬ টি বুটিক হাউজ অংশ নেয় বিভিন্ন ধরণের শাড়ি , সালোয়ার কামিজ , পাঞ্জাবি , চাদর ,গহনা এবং
নানা ধরণের ঈদ সামগ্রী। সারাদিন ব্যাপী এই এক্সহিবিশনে সিডনির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে শত শত বাঙালিরা। সারাদিন ব্যাপী এই আয়োজনে সর্বোত্র একটা উচ্ছাস এবং আনন্দের প্রবাহ ছিলো।
চারিদিকের একটা আতংকিত গুমোট ভাবের খানিকটা পরিবর্তন এনে মানুষের মনে একটু প্রশান্তির ছোঁয়া লাগানো এবং কমিউনিটির সদস্যদেরকে একত্রিত করার চমৎকার আয়োজনের জন্য উপস্থিত সকলেই আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন । অনেকেই মন্তব্য করেছেন , “এই আয়োজনে এসে বাংলাদেশের ঈদের আমেজটা বেশ উপভোগ করছি বিদেশের মাটিতে থেকেও ”
উল্লেখ্য যে, করোনা বিধিনিষেধ মেনেই ঈদ এক্সিবিশনের আয়োজনটি শেষ হবে আগামী রবিবার ৯ মে !