পূরবী পারমিতা বোস:আমরা ছোটবেলার অনেক ,অনেকটা সময় খেলাধুলা করে কাটিয়েছি উনাদের বাড়ীতে।উনার বড় বোনের মেয়ে টুশি ছিলো আমাদের খেলার সাথী।আর মিতালী মুখার্জী হলো টুশির ছোট মাসী,মানে আমাদের ও ছোট মাসী।তার সুবাদে ওই বাড়ীতে ছিলো আমাদের অবাধ যাতায়াত।মিতালীদির বাবা অমূল্য কুমার মুখার্জী ও মা কল্যাণী মুখার্জী।
আমরা ডাকতাম দাদু দিদা।কারন টুশি ছিলো উনাদের নাতনী।আমাদের একটা ছোটখাটো দল ছিল….টুশি,শিল্পী,লিপি,শিল্পী২,ববি ,আপেল ,বাপ্পী আর আমি ছিলাম সেই দলের ছোটখাটো নেত্রী।যখনই যেতাম দিদা নাড়ু ,বিস্কিট বা কোনো ফল হাতে ধরিয়ে দিতেন।বিকেলে খেলতে গেলে আমাদের বসিয়ে গল্প বলতেন।গান শোনাতেন ,শেখাতেন।কি পরিমান আদর যে উনার কাছ থেকে পেয়েছি বলে শেষ করা যাবে না।একটু বড় হয়ে জানলাম মিতালীদির বড়বোনের বিয়ে হয়েছে আমার দাদুর কোনো এক আত্মীয়র সাথে সেই থেকে দাদু দিদা হয়ে গেল মাসী মেসো আর ছোটমাসী হয়ে গেল মিতালী দি।শিবানী দি দীপকদা দিলীপদা প্রদীপদা মিতালীদি সবাই আমাদের থেকে অনেক বড় ছিলেন।তাই আমরা তাদের খুব একটা কাছে ঘিরতে পারিনি।দুরে দুরেই থেকেছি….
আমি বলছি মিতালী মুখার্জীর কথা।বাংলাদেশ ভারত দুই দেশের স্বনামধন্য সংগীত শিল্পী মিতালী মুখার্জী।আমাদের গর্ব ,বাংলাদেশের গর্ব,ময়মনসিংহবাসীর গর্ব।গতকাল সিডনিতে আতিক ভাই ও মিতা আপার উদ্যোগে উনার একক গানের “গানে গানে মিতালী”এক অপূর্ব সংগীত সন্ধ্যা হয়ে গেল।এত মনোমুগ্ধকর বাংলাদেশী সংগীত আয়োজন,এত পরিচিছন্ন একটি অনুষ্ঠান।প্রতিটি দর্শক শ্রোতার মন ভরে গেছে।
উনার সব জনপ্রিয় গান গুলো যেন সবার মুখস্ত।সবাইকে নিয়ে উনি গেয়েছেন।মাতিয়েছেন।আন্তরিক ধন্যবাদ মিতা আপা ও হেলাল ভাইকে এমন শতভাগ বাংলা গানের ,বাংলাদেশীয় গানের সফল আয়োজন করবার জন্যে।
একদম শেষে শিল্পীর ডাকে আমরা কজন মঞ্চে উঠার সুযোগ পেয়েছিলাম।এত প্রিয় মানুষ ,এত প্রিয় শিল্পীকে কাছে পেয়ে মোবাইল ক্যামেরায় চট করে তুলে নিলাম কয়টা ছবি।খুব আফসোস হচ্ছিল, কেন আমার ক্যামেরাটা নেই নি।
কিন্তু ছবিগুলো দেখে আফসোস এখন আর অতটা নেই।অল্প সময় পেয়েছি উনার কাছে থাকার। তবুও যার গান প্রায় প্রতিদিনই শুনি ,তার উপর উনি আমাদের ময়মনসিংহের মিতালীদি।যার পুরো পরিবারের সবার আদর ভালোবাসা জড়িয়ে আছে আমার শৈশব জুড়ে তাকে কাছে পাওয়ার অনুভুতিটা সত্যি অন্যরকম ভালো লাগার ভালোবাসার।