তুরস্কের পথে পথে ঘুরেছি অনেক।
অবশেষে উলুদাগ পর্বতের পাদদেশে
এসে থমকে দাঁড়ালাম।
অস্তাচলের ক্ষণে ইনকায়া গ্রামে
কনকনে তীব্র শীতের মাঝে
তুষারাবৃত সিকামোর বনে__
দূর থেকে দেখেছিলাম কার যেন ছায়া।
কে যেন দাঁড়িয়ে ছিল
অর্ধ সহস্রাব্দ পুরানো, ঝরে পড়া পাতাবিহীন
ঐ সিকামোর গাছের নিচে।
উস্কোখুস্কো সাদা পাকা তার চুল ;
যেন সাদা বরফে ঢাকা উলুদা পর্বতের চূড়ায় মতন।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ তার দেহ
তবুও হাওয়ায় ভেসে চলা যৌবনের উদ্বেলিত তার মন।
মহাকালের যাত্রায় একদিন এই গাছটি
সবুজ পল্লবে ছেয়েছিল।
যৌবনে রক্ত রাঙ্গা লাল পাতা দিয়ে
সাজিয়ে ছিল তাকে
এক সময় সে পাতা হলুদ হয়ে বাদামী রং-এ পরিণত হল
এরপর শুকিয়ে সব পাতা ঝরে পড়ল।
শুকনো ডালগুলো আজ তুষারে ঢাকা।
একসময় এ গাছে কয়েকটি নাইটেঙ্গেল পাখি বাসা বেঁধেছিল।
তাদের মিষ্টি সুমধুর গানে মুখরিত হতো ভ্যালির এ পথ- ঘাট।
শীতের আগমনে নাইটেঙ্গেল পাখিগুলোও আজ বড্ড ক্লান্ত।
উলুদাগ পর্বতের চূড়ায় বসে ট্রোজেন যুদ্ধ অবলোকন করা
দেবতা অ্যাপোলো প্রশ্ন করল আমায়,
সিকামোর বনে গাছের নিচে
কার ছায়া দেখেছিলে তুমি?
আমি অপলক ছায়াটির দিকে তাকিয়ে
বললাম, কেউ নয়
ওটা আমারই প্রতিবিম্ব।