কাউসার খান:দীর্ঘ ষোল বছর পর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে মঞ্চায়িত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত মঞ্চনাটক ‘লীভ মি এলোন’। আগামী ১০ নভেম্বর সিডনির ওয়াইলিপার্কের অ্যাম্ফিথিয়েটারে আয়োজিত দিনব্যাপী বাংলা সংস্কৃতি উৎসবে স্থানীয় সময় রাত ৮ টা ১০ মিনিটে মঞ্চায়িত হবে নাটকটি। জন মার্টিনের রচনা এবং নির্দেশনায় মঞ্চনাটকটি এর আগে ২০০২ সালে সিডনিতে মঞ্চায়িত হয়েছিল। সেসময়ই বাংলাদেশি দর্শকদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল নাটকটি।তবে এর পরে দীর্ঘবছর পর্দার আড়ালেই রয়ে যায় নাটকটি। বাংলা সংস্কৃতির উৎসবে সিডনিতে আবারও নতুন আঙ্গিকে দেখা যাবে এ নাটকটিকে। নাটকটির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করা মুখগুলো অনেকটা একই রাখা হয়েছে। তবে ভিন্নতা থাকবে মঞ্চসজ্জায়। পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে মঞ্চনাটকটি পরিবেশন করবে সিডনিতে বাংলাদেশি সাংকৃতিক সংগঠনগুলোর শুরুর দিকের থিয়েটার সংগঠন আলাপন।
মঞ্চনাটকটির রচিয়তা নাট্যজন জন মার্টিন স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘সিডনিতে লীভ মি এলোন ছিল আমাদের প্রথম মঞ্চনাটক। সেকি উচ্ছ্বাস তখন।আমরা অবাক হয়েছিলাম যখন শত শত দর্শক মঞ্চনাটকটি দেখতে জমায়েত হয়। সকলের খুব ভালোবাসা পেয়েছিলাম।’ আবারও ফিরে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মঞ্চনাটক অনেকদিন করা হয় না, এ নিয়ে পরিচিত অনেকেই অভিযোগ আর অভিমানের কথা বলেন।তবে প্রবাসের ব্যস্ত সময়ে ঠিক সময় হয়ে উঠে না।তবে মঞ্চ আমাকে বরাবরই খুব আকর্ষণ করে গেছে। সব পেয়েও যেন কি পায় নি ধরনের একটা শূন্যতা কাজ করে সবসময়। তবে এবার ফিরছি। সেরাটাই আশা করছি।’ ইতিমধ্যে সিডনিতে মঞ্চনাটকটির মহড়া শুরু হয়েছে। ‘নাটকের মুখ্যচরিত্রগুলো প্রায় একই আছে। সেই ষোল বছর আগে করা মঞ্চনাটকের প্রায় সবকিছুই মনে রেখেছে তাঁরা। কোথায় থামতে হবে, কোথায় জোর দিতে হবে, কোথায় গলা নরম হয়ে আসবে এগুলো ঠিক মনে আছে তাঁদের।
মঞ্চনাটকটিতে অভিনয় করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক এবং ঢাকা পদাতিকের অন্যতম প্রতিষ্টাতা সদস্য গোলাম মোস্তফা।মঞ্চনাটকটির কাহিনী নিয়ে তিনি বলেন, ‘নাটকটি একটি মুক্তিযোদ্ধার মেয়েকে কেন্দ্র করে তৈরি। যখন-ই এ নাটকটি করি তখনই আপ্লুত হয়ে পড়ি। মনে হয় যেন নিজের গল্পই বলে যাচ্ছি। নিজের প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠে সামনে।
বাংলাদেশের নাটকের একসময়ের প্রিয়মুখ মৌসুমী মার্টিন দীর্ঘদিন পর আবার মঞ্চে আসছেন এ নাটকে। মৌসুমী বলেন, ‘নাটকের চরিত্রের যেমন বয়স বাড়েনি, ঠিক তেমনি আমাদেরও বয়স বাড়েনি। আমরা পরিপক্ক হয়েছি। আমরা ষোল বছর আগের সেই চরিত্রটিকে ভিন্ন মাত্রায় উপস্থাপন করবো।’
অন্যদিক, মঞ্চ অধিকর্তা লাভলী মোস্তফা বলেন, প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত যতবারই নাটকটি উপস্থাপন করেছি সবসময় মুক্তিযুদ্ধকে খুব কাছ থেকে স্পর্শে অনুভব করি। এবার আরও অনেক পরিপক্ব হয়ে কাজ করছি। আশা করি দর্শকদের ভালো লাগবে।
নাটকে গোলাম মোস্তফা এবং মৌসুমী মার্টিন এর সাথে এই প্রজন্মের মীর হোসেন, মিতুল হক, অদিতি শ্রেয়শী বড়ুয়াও অভিনয়ে যোগ দিয়েছেন।