অনলাইন ডেস্কঃ ১৪ আগস্ট ২০১৫
ড. সেলু বাসিত লেখক: কলামিস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির তত্কালীন সাধারণ সম্পাদক ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক প্রয়াত ম. আক্তারুজ্জামানের ভাষ্যমতে, ‘১৯৭৫-এর জুন মাসের প্রথম দিকেই শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সিন্ডিকেট এবং ডাকসুতে সফরের বিষয়টি অনুমোদিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়। বঙ্গবন্ধু সাদরে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।’ রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্ববিদ্যালয় আগমন উপলক্ষে এবং এর সার্বিক ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যেও শিক্ষক, কর্মকর্তা, ডাকসু, জাতীয় ছাত্রলীগ এবং বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিনিধি নিয়ে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়। মূল প্রস্তুতি কমিটি ছিল নিম্নরূপ:
চেয়ারম্যান: অধ্যাপক ড. আবদুল মতিন চৌধুরী উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সদস্য: ১। অধ্যাপক হারুনর রশীদ-বিভাগীয় প্রধান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ ও সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ২। অধ্যাপক ম. আক্তার উজ্জামান-উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ ও সাধারণ সম্পাদক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ৩। অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান-বাংলা বিভাগ ও কোষাধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ৪। অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম-বাংলা বিভাগ ও কোষাধ্যক্ষ, ডাকসু ৫। অধ্যাপক সৈয়দ আহমদ-সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ৬। অধ্যাপক ওয়াদুদুর রহমান-ইতিহাস বিভাগ। ৭। অধ্যাপক সালাহউদ্দিন আহম্মদ-ইতিহাস বিভাগ ৮। অধ্যাপক ড. শামসুল হুদা হারুন-রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ৯। অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান তালুকদার-রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ১০। জনাব নূরুদ্দীন-রেজিস্ট্রার। ১১। সৈয়দ বদরুদ্দীন আহমদ-উপ- রেজিস্ট্রার, ১২। জনাব আলী আহম্মদ-উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব।
ছাত্রদের মধ্য থেকে যে দু’টি কমিটি করা হয় তার মধ্যে প্রথম কমিটিতে ছিলেন তত্কালীন জাতীয় ছাত্রলীগ ও ডাকসুর সদস্যরা। এই কমিটিতে যারা ছিলেন তারা হলেন: আহ্বায়ক: শেখ শহীদুল ইসলাম-সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় ছাত্রলীগ, সদস্য: ১। মুহাজিদুল ইসলাম সেলিম-ভিপি, ডাকসু ও সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ, ২। ইসমত কাদির গামা-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ। ৩। নুহ-উল আলম লেনিন-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ৪। মাহবুব জামান-সাধারণ সম্পাদক, ডাকসু ও সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ৫। শেখ কামাল-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ৬। রবিউল আলম চৌধুরী-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ৭। সৈয়দ নুরুল ইসলাম-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ৮। লুত্ফন নেহার বেগম হেনা-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ৯। নূরুল ইসলাম মিলন-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ১০। ফজলুর রহমান পটল-রাকসু ভিপি ও সদস্য জাতীয় ছাত্রলীগ ১১। ওবায়দুল কাদের-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ১২। ডা. শাহাদাৎ হোসেন-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ১৩। অজয় দাসগুপ্ত-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ১৪। কাজী আকরাম হোসেন-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ১৫। হরে কৃষ্ণ দেবনাথ-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ১৬। ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ১৭। মমতাজ হোসেন, সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ, ১৮। রাশেদুল হাসান-ভিপি, বুয়েট ও সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ১৯। চন্দন চৌধুরী-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ ২০। খ ম জাহাঙ্গীর-সদস্য, জাতীয় ছাত্রলীগ। এই কমিটিভুক্ত সদস্যদের লাল কার্ড প্রদান করা হয়।
সংবর্ধনা ও স্বেচ্ছাসেবক ব্যবস্থাপনার দ্বিতীয় কমিটিতে যারা ছিলেন, তারা হলেন: ১। শাহেদ রেজা ২। হেমায়েত উলাহ আওরঙ্গ ৩। বেলাল ৪। ইকবাল ৫। ফকির গুলজার ৬। সাফায়েত ৭। কামাল ৮। ফখরুল ইসলাম ৯। হারুন-অর-রশীদ ১০। প্রিয়তোষ মলিক ১১। রাখী দাস পুরকায়স্ত ১২। মাহফুজা চৌধুরী ১৩। আনোয়ারা বেগম ১৪। রত্না ১৫। জাহানারা বেগম ১৬। রোকেয়া সুলতানা, প্রমুখ। এরা সকলেই জাতীয় ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বে ছিলেন। এই কমিটির সদস্যদের হলুদ কার্ড দেয়া হয়। তাদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা ছিল আপেক্ষিক সীমিত।
দৈনিক ইত্তেফাকের ১৫ই আগস্টের পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ‘বঙ্গবন্ধু আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করিবেন’ শিরোনামে। তাতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করিবেন। চ্যান্সেলর হিসেবে বঙ্গবন্ধু এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করিবেন। রাষ্ট্রপতির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করিয়াছেন।
বঙ্গবন্ধু প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে অবস্থিত শহীদদের মাজার জিয়ারত ও মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করিবেন। মাজার জেয়ারতের পর তিনি কলাভবন প্রাঙ্গণে ইউওটিসি কর্তৃক প্রদত্ত অভিবাদন গ্রহণ করিবেন। ইহার পর বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল পরিদর্শনের পর বঙ্গবন্ধুর সহিত অভ্যর্থনা কমিটির সদস্যদের পরিচয় করাইয়া দেয়া হইবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনকালে রাষ্ট্রপতির অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রহিয়াছে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মিউজিয়াম পরিদর্শন, জগন্নাথ হলের গণকবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সায়েন্স এনেক্স ভবনে ডাটা প্রসেসিং ইউনিট পরিদর্শন, বিজ্ঞান ভবন ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ পরিদর্শন। ইহার পর রাষ্ট্রপতি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দে উপস্থিত হইবেন। ছাত্র-শিক্ষক কেন্দে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে শ্রদ্ধাঞ্জলি পাঠ করা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হইতে বঙ্গবন্ধুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা ও ক্রেস্ট, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত রচনাবলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতির এলবাম উপহার দেয়া হইবে। এই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের পক্ষ হইতে বাকশাল সদস্যপদের জন্য আদেনপত্র পেশ করা হইবে।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনকালে বঙ্গবন্ধুর সহিত উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ডক্টর মোজাফফর আহমদ চৌধুরী উপস্থিত থাকিবেন।’ দৈনিক বাংলার এক প্রতিবেদন ‘বঙ্গবন্ধুকে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বাগত জানাবে’ শিরোনামে বলা হয়: ‘আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। জাতির পিতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ সকালে স্বল্পকালীন সফরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর তিনি আরও একবার এসেছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু সেদিন তিনি শুধু ভাষণ দিয়েছিলেন। আজকের আসার সাথে তার অনেক তফাত। আজ তিনি পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে ঘুরে দেখবেন। তার সম্মানে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজন করেছে নানা বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। তিনি আজ ভাষণ দেবেন। দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি নতুন করে ছাত্রসমাজ যখন তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা সম্পর্কে ভাবছেন, তখন তাদের কাছে আসছেন জাতির পিতা। আজ তিনি নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ে বলবেন ছাত্র-ছাত্রীদের দায়িত্ব কর্তব্যের কথা। দ্বিতীয় বিপ্লবের অগ্রণী সৈনিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রামী ছাত্র সমাজ আজ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য উদগ্রীব। আজ ১৫ই আগস্ট শুক্রবার বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন। গত ১ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানাবার প্রস্তুতি। শিক্ষক সমাজে, ছাত্রদের মধ্যে বিপুল সাড়া পড়ে গেছে। বিভিন্ন ছাত্রাবাসে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আলাপ আলোচনা, উত্সাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মহড়া চলছে গত কদিন থেকে। বুধবার বিকেলে নীলক্ষেত ক্যাম্পাস এলাকায় ইউওটিসি-র প্যারেড গার্ড অব অনারের মহড়া সবাই দেখছে অত্যন্ত উত্সাহের সাথে। পুরো ক্যাম্পাসই এখন ঝকঝকে তকতকে। নতুন করে চুন লাগানো হয়েছে প্রত্যেকটি ভবনে, অন্তত যেখানে বঙ্গবন্ধু যাবেন। পোস্টার ফেস্টুন বিন্যস্ত হয়েছে শিল্পসম্মতভাবে। কলাভবনের চারতলা ভবন দূর থেকে দেখলেও চোখ জুড়িয়ে যায়। সাদা রঙের দেয়ালের শীর্ষে ঝুলছে লাল অক্ষরে বিন্যস্ত বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক, ঝুলছে করিডোরের দেয়ালে দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, ছাত্রসমাজের উদ্দেশ্য উচ্চারিত নানা অমূল্য বাণী। বটতলার সেই বটগাছও যেন ইতিমধ্যে বেশ বড়সড় হয়েছে। ক্যাম্পাসের আইল্যান্ডগুলো এখন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। নানা রঙে রঙিন। ক্যাম্পাসের পথতরুর নিচে সাদা রঙ। কলাভবন ও প্রশাসনিক ভবনের মধ্যবর্তী আঙ্গিনা রীতিমতো দৃষ্টি কেড়ে নেয়। এই অপূর্ব সুন্দর আঙ্গিনাটি এত দিন ছিল অবহেলিত। তার চারটি গেইটও খোলা হতো না। বৃক্ষ আচ্ছাদিত এই আঙ্গিনাকে পার্কে রূপান্তরিত করার জন্য বহু ছাত্র-ছাত্রী দাবি তুলেছিলেন। এই সুন্দর জায়গাটি যথাযথ মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর আগমন উপলক্ষে এই সম্ভাবনাপূর্ণ স্থানটি হয়ে উঠেছে অপূর্ব। যে সব পথ দিয়ে বঙ্গবন্ধু ক্যাম্পাস পরিদর্শন করবেন সেই পথগুলো ইতিমধ্যে সংস্কার করা হয়েছে, পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। দেয়ালগুলো করা হয়েছে নতুন রঙে রঙিন। সারা বিশ্ববিদ্যালয় আজ বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানাবার জন্য সমস্ত রকম সজ্জা, পরিচ্ছন্নতা, আন্তরিকতা ও গভীর শ্রদ্ধায় যেন অপেক্ষমান। বঙ্গবন্ধু আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসবেন, এই দিনটি স্মরণীয় করে তোলার জন্য উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সম্প্রদায়, অফিসার, কর্মচারী ও সর্বোপরি ছাত্র-ছাত্রীরা গত কয়েকদিন থেকে নানা আয়োজনে ব্যস্ত। সবখানে একটা উত্সাহের সাড়া লক্ষ্য করা গেছে আজ বঙ্গবন্ধুর আগমন উপলক্ষে। বিভিন্ন সংবাদপত্র প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র। ক্রোড়পত্রের বিভিন্ন লেখায় প্রতিফলিত হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুমহান ঐতিহ্য। চ্যান্সেলর শেখ মুজিবুর রহমান-এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ঘণ্টা অবস্থান নানা কর্মসূচিতে পরিকল্পিত। তিনি কার্জন হলের একটি বিভাগের বিজ্ঞানাগার যেমন দেখবেন, তেমনি দেখবেন কলাভবনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রদর্শনী। দেখবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হোস্টেল, বিভিন্ন হলের বহির্বিভাগ, নির্মীয়মান বিজ্ঞান ভবন। বঙ্গবন্ধু ভাষণ দেবেন টিএসসির মিলনায়তনে। সবার আগে তিনি পুষ্পার্ঘ্য দেবেন মসজিদ সংলগ্ন শহীদ অধ্যাপকদের কবরে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর বারোটা। মোটামুটি এই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কর্মসূচি। গতকাল ছিল সবচেয়ে ব্যস্ততম দিন।
উপাচার্য ড. আবদুল মতিন চৌধুরী, জাতীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্যরা গতকাল শেষবার সবকিছু দেখে এসেছেন। সবকিছু প্রস্তুত। সবাই তৈরি। গতরাত্রে হলে হলে আলোচনার বিষয় ছিল বঙ্গবন্ধুর সফর। নীলক্ষেত আজ এক অন্যরূপে। নীলক্ষেত ভার্সিটিপাড়ায় এমন দিন আর আসেনি। আজ ১৫ আগস্ট, শুক্রবার, আজ জাতির পিতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন। যে বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭১ সনের ২রা মার্চ সবার আগে উত্তোলন করেছিল স্বাধীন বাংলার পতাকা। আজ সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির পিতাকে স্বাগত জানাবে।’ বিভিন্ন সংবাদপত্রে যে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয় তার মধ্যে ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা এবং বাংলাদেশ টাইমস উলেখযোগ্য। এই ক্রোড়পত্র পরবর্তীকালে নিষিদ্ধ হয় বলে জানা যায়। ক্রোড়পত্রের লেখাগুলো ছিল নিম্নরূপ: উপ- রাষ্ট্রপতির বাণী প্রধানমন্ত্রীর বাণী বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গ-ড. মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: অর্ধশতাব্দীর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস-বোস অধ্যাপক ড. আব্দুল মতিন চৌধুরী আমাদের এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এম কোরবান আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক পটভ‚মি-অধ্যাপক ড. এ কে নাজমুল করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞানের অগ্রগতি-অধ্যাপক এম এন হুদা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান-অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষা এবং গবেষণা-অধ্যাপক এ কে এম নূরুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন শিক্ষা-অধ্যাপক ড. এল কবীর বাণিজ্য শিক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ‚মিকা-অধ্যাপক আবদুলাহ ফারুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের উপর কয়েকটি কথা-মোহাম্মদ শামস-উল-হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার-অধ্যাপক মোঃ আব্দুল আজিজ নতুন পটভ‚মিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজের ভূমিকা- মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান-রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজসমূহ-সৈয়দ বদরুদ্দিন হোসাইন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত আমার অনুষঙ্গ-হাফিজুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের: অতীত ও বর্তমান অনুষদ ও ছাত্রাবাস কলা অনুষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত ডিগ্রীধারীদের তালিকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ-পাঠক্রম বিভিন্ন চিত্র উপরোক্ত সূচি অনুযায়ী প্রদত্ত লেখাসমূহ ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের এক রূপরেখা বর্ণিত হয়েছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান অবকাঠামো, শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষা বাস্তবতা বিধৃত হয়েছে। ইংরেজি ক্রোড়পত্রে এ লেখাগুলোরই ইংরেজি ভাষ্য মুদ্রিত হয়। (চলবে) ( সুত্রঃ বাংলাদেশ সময় ডট কম)