১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতীর জনক বংগবন্ধু কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বিধায় এ দিনটি জাতীয় শোকদিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বংগবন্ধু’র হত্যাকান্ডে বাংগালী জাতী শোকে মুহ্যমান হলেও ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি ও পাকিস্তানীদের উচ্ছিষ্ট ভক্ষনে তুষ্ট ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরুধী গোষ্ঠি প্রকাশ্যে/অপ্রকাশ্যে আনন্দ উল্লাস করেছিল এ কথাও সত্য। এ শ্রেনীর লোকদের স্থান ইতিহাসের ডাষ্টবিনে নির্ধারিত যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের অনুরুপ ঘটনা থেকেই প্রমানিত। উদাহারন স্বরুপ বলা যায়”১৯৪৮ সালের ৩০শে জানুয়ারী মহাত্মা গান্ধীকে হিন্দু উগ্রবাদী নাথুরাম গড্সে মুসলমানদের প্রতি অধিকতর সহানুভূতিশীলতার অভিযোগে প্রার্থনা সভায় গুলি করে হত্যা করে। গান্ধীজিকে হত্যার পরে ভারতের কিছু এলাকায় কতিপয় লোক আনন্দ উল্লাস ও মিষ্টি বিতরন করে। যেহেতু গান্ধীজি অহিংস নীতির প্রবক্তা সেহেতু হত্যাকারীকে বিচারে মৃতু্যদন্ড না দেয়ার জন্য ও তারা জোর প্রচেষ্টা চালায় ( তথ্য সুত্র: ভারত স্বাধীন হলো- মাওলানা আবুল কালাম আজাদ) । গান্ধীজি তাঁর মহাত্ম নিয়ে সারা বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করলেও উল্লাসকারীদের স্থান হয়েছে ইতিহাসের দুর্গন্ধময় ডাষ্টবিনে।2.
পৃথিবীর শক্তিধর দেশ আমেরিকার ৪জন প্রেসিডেন্টকে গুপ্তঘাতকের হাতে জীবন দিতে হয়েছে। তন্মধ্য, আব্রাহাম লিংকনকে ১৮৬৩ ও জন এফ কেনেডিকে ১৯৬৩ সালে প্রকাশ্য দিবালোকে গুপ্তঘাতকরা গুলি করে হত্যা করলেও আব্রাহাম লিংকন অদ্যাবদি আধুনিক গনতন্ত্রের জনক বলে সারা বিশ্বে সমাদৃত, কেনেডি আমেরিকার জনগনের কাছে সবচেয়ে বেশী সন্মানিত একজন রাষ্টনায়ক।
চিলির আলেন্দে বা ভারতের ইন্দ্রিরাগান্ধী এরা সকলেই ঘাতকের হাতে জীবন দিয়ে ও ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। নবাব সিরাজ উদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করে মীরজাফর আলী খাঁন এতটাই ঘৃনিত ও নিন্দিত হয় যে বাংলা ভাষার অভিধানে মীরজাফর শব্দের অর্থ বিশ্বাসঘাতক রূপে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। মোস্তাক শব্দটি ও আগামী দিনে মীরজাফরের প্রতি শব্দ ( synonym) হিসাবে বাংলা অভিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করছি। ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগষ্টে বংগবন্ধু হত্যায় ষড়যন্ত্রকারী /খুনী খন্দকার মোস্তাক, রশিদ,ফারুকসহ সকল দেশের সকল ষড়যন্ত্রকারী খুনীদের সর্বশেষ পরিনতি ইতিহাসের পূতি দুর্গন্ধময় ডাষ্টবিনে নির্ধারিত তা সর্বজনবিদিত। ইতিহাসে এমন কোন নজীর নেই যেখানে খুনীরা সমাদৃত হয়ে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছে।
৩.
১৯৭৫ সালে বংগবন্ধু হত্যাকান্ডে বাংগালী জাতী দিশেহারা ও বিভ্রান্ত হয়েছিল কেননা হত্যাকান্ডের পর বংগবন্ধু’র সহকর্মীদের অনেকেই ইচ্ছা/ অনিচ্ছা সত্ত্বে ও মন্ত্রীসভায় জোরপুর্বক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বংগবন্ধু ‘র বিশ্বস্ততম সহকর্মী মরহুম তাজউদ্দিন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানকে ভয়ভীতি ও বলপ্রয়োগ করে ও খুনী মোস্তাকের মন্ত্রী সভায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। এই বিশ্বস্থতার মুল্য তাদেরকে দিতে হয়েছে ৩রা নভেম্বরে জেলখানায় খুনীদের হাতে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে।
৪.
সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত যুদ্ববিধস্ত দেশকে গড়তে বংগবন্ধুকে সহযোগীতার পরিবর্তে কতিপয় তরুন নেতৃত্ব যুদ্ধ ফেরত মুক্তিযুদ্ধা ও হতাশাগ্রস্ত যুবকদের উদ্ভট তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে বিপথগামী করে দেশব্যপী গুপ্তহত্যা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে দেয় ।এদের হাতকে শক্তিশালী করে দেশের মধ্যে লুকায়িত স্বাধীনতা বিরুধীগোষ্ঠী যাদেরকে বংগবন্ধু ক্ষমা করেদিয়েছিলেন
( সুনির্দিষ্টভাবে হত্যাকান্ড, ধর্ষন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে অভিযুক্তদের ব্যতীত) । অন্যদিকে শক্তিশালী সম্রাজ্যবাদী আমেরিকা, চীন, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচে্যর কতিপয় মুসলীম রাষ্ট্র যেকোন মুল্যে বংগবন্ধু’র উপর ৭১’ পরাজয়ের প্রতিশোধে নিতে কৃতিমভাবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি ও মিথ্যা অপর্প্রচার বংগবন্ধু’র জনপ্রিয়তাকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সমর্থ হয়। ফলশ্রুতিতে বংগবন্ধু’র হত্যাকান্ডের পরে খুনীদের তেমন কোন তাৎক্ষনিক বাঁধা বা প্রতিরোধের সন্মুক্ষীন হতে হয়নি সত্য তবে খুনীরা বুঝতে পারেনি জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক বেশী শক্তিশালী যা তাদের একদিন ফাঁসীর কাষ্ঠে ঝুলাবে।
৫.
বংগবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রধান সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধার লেবাসধারী জিয়াউর রহমান, পাকিস্তান ফেরত সামরিক কর্মকর্তা এরশাদ ও বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে বংগবন্ধু ও স্বাধীনতার যুদ্ধের নামনিশানা মুছে ফেলার চক্রান্তে আমাদের বিজয়ের ইতিহাসকে বিকৃত করার সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও আধুনিক তথ্যপ্রবাহের যুগে নুতন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস পর্যায়ক্রমে দিনের আলোর ন্যায় পর্যায়ক্রমে পরিস্কার হতে থাকে। যার ফলে স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরুধী অপরাধের জন্য রাজাকার আলবদরদের বিচার ও জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে জাতী ঐক্যবদ্ধ হয়। এই বিচার প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যে কয়েকজন অপরাধী মৃতু্যদন্ডে দন্ডিত হয়েছে এবং দুই জনের ফাঁসি ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছে। এই শাস্তি কার্যকরের মাধ্যমে অনেক হারানোর বেদনায় ও দেশের জনগন ফিরে পেয়েছে আত্মবিশ্বাস ও প্রশান্তি। জনগনের দাবীতে সাড়া দিয়ে শেখ হাসিনা সরকার অন্যান্য অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর করে দেশকে জামাত-শিবির মুক্ত অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।৬. রাজনৈতিক স্বাধীনতার সাথে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও আজ আমাদের দ্বারপ্রান্তে। বর্তমান সরকারের কৃষিনীতির সাফল্যে দেশ আজ খাদ্যে উদ্বৃত্ত, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন সারা বিশ্বে প্রসংষিত যার সুফল দেশের প্রতিটি মানুষ ভোগ করছে। পরাধীনতার আমলের দৈন্যদশা থেকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে চলছে, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর ন্যায় বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে চলছে। রপ্তানী বানিজ্য ও বিদেশের কর্মসংস্থান থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ঈর্ষনীয় পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের কুটনৈতিক সফলতায় প্রায় ভারতের সাথে অর্ধশতক বছরের অমিমাংষিত সীমান্ত চুক্তির সমাধান হযেছে, মায়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্র সীমানা নির্ধারনে ও আশাতীত বিজয় অর্জিত হয়েছে।
৭.
প্রাগঐতিহাসিক কাল থেকে বাংলার মানুষ শাসিত এ শোষিত হয়েছে পালবংশ, মোগল, ইংরেজ ও সর্বশেষ পাকিস্তানীদের দ্বারা। বাংলার মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়েছে বর্গী, মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের দ্বারা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে হয়েছে লন্ডভন্ড। জীর্নদশা বাংগালী জাতীকে বংগবন্ধু স্বাধীন ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তাঁর তেইশ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম, আন্দোলন সংগ্রাম, জেলজুলুম নির্যাতন উপেক্ষা করার কারনে সর্বশেষে ৭১ ‘এর মুক্তিযুদ্ধ ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে মহান বিজয় এনে দেয় আমাদেশ অনেক আকাংক্ষিত স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। পৃথিবীর মানচিত্রে ঠাঁই করে নেয় সবুজ লাল পতাকার একটি দেশ যা আমাদের গর্বিত ঠিকানা।এই স্বাধীনদেশের সকল সুযোগ সুবিধা আমরা দলমত নির্বিশেষে ভোগ করছি এমনকি যারা এ দেশের স্বাধীনতায় বিরুধীতাকারীরা করেছিল।
৮.
বংগবন্ধুর আজীবন ত্যাগ ও তীতিক্ষার সোনালী ফসল শান্তি, সুখে ভরপুর সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ যা আপামর জনসাধারণের একান্তই কাম্য। সে কারনেই বংগবন্ধু ধর্মবর্ন, ধনী, গরীব নির্বিশেষে আমাদের সকলের, সারা বাংলার আপামর জনসাধারণের, নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক দলের নহেন। রাজনীতিতে মত পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক গনত্রান্তিক উপপাদ্য হলেও সকল মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে জাতীয় শোক দিবসে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও পরম করুনাময়ের কাছে দোয়া করা আমাদের সকলের একান্ত কর্তব্য।
পৃথিবীর শক্তিধর দেশ আমেরিকার ৪জন প্রেসিডেন্টকে গুপ্তঘাতকের হাতে জীবন দিতে হয়েছে। তন্মধ্য, আব্রাহাম লিংকনকে ১৮৬৩ ও জন এফ কেনেডিকে ১৯৬৩ সালে প্রকাশ্য দিবালোকে গুপ্তঘাতকরা গুলি করে হত্যা করলেও আব্রাহাম লিংকন অদ্যাবদি আধুনিক গনতন্ত্রের জনক বলে সারা বিশ্বে সমাদৃত, কেনেডি আমেরিকার জনগনের কাছে সবচেয়ে বেশী সন্মানিত একজন রাষ্টনায়ক।
চিলির আলেন্দে বা ভারতের ইন্দ্রিরাগান্ধী এরা সকলেই ঘাতকের হাতে জীবন দিয়ে ও ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। নবাব সিরাজ উদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করে মীরজাফর আলী খাঁন এতটাই ঘৃনিত ও নিন্দিত হয় যে বাংলা ভাষার অভিধানে মীরজাফর শব্দের অর্থ বিশ্বাসঘাতক রূপে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। মোস্তাক শব্দটি ও আগামী দিনে মীরজাফরের প্রতি শব্দ ( synonym) হিসাবে বাংলা অভিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করছি। ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগষ্টে বংগবন্ধু হত্যায় ষড়যন্ত্রকারী /খুনী খন্দকার মোস্তাক, রশিদ,ফারুকসহ সকল দেশের সকল ষড়যন্ত্রকারী খুনীদের সর্বশেষ পরিনতি ইতিহাসের পূতি দুর্গন্ধময় ডাষ্টবিনে নির্ধারিত তা সর্বজনবিদিত। ইতিহাসে এমন কোন নজীর নেই যেখানে খুনীরা সমাদৃত হয়ে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছে।
৩.
১৯৭৫ সালে বংগবন্ধু হত্যাকান্ডে বাংগালী জাতী দিশেহারা ও বিভ্রান্ত হয়েছিল কেননা হত্যাকান্ডের পর বংগবন্ধু’র সহকর্মীদের অনেকেই ইচ্ছা/ অনিচ্ছা সত্ত্বে ও মন্ত্রীসভায় জোরপুর্বক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বংগবন্ধু ‘র বিশ্বস্ততম সহকর্মী মরহুম তাজউদ্দিন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানকে ভয়ভীতি ও বলপ্রয়োগ করে ও খুনী মোস্তাকের মন্ত্রী সভায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। এই বিশ্বস্থতার মুল্য তাদেরকে দিতে হয়েছে ৩রা নভেম্বরে জেলখানায় খুনীদের হাতে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে।
৪.
সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত যুদ্ববিধস্ত দেশকে গড়তে বংগবন্ধুকে সহযোগীতার পরিবর্তে কতিপয় তরুন নেতৃত্ব যুদ্ধ ফেরত মুক্তিযুদ্ধা ও হতাশাগ্রস্ত যুবকদের উদ্ভট তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে বিপথগামী করে দেশব্যপী গুপ্তহত্যা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে দেয় ।এদের হাতকে শক্তিশালী করে দেশের মধ্যে লুকায়িত স্বাধীনতা বিরুধীগোষ্ঠী যাদেরকে বংগবন্ধু ক্ষমা করেদিয়েছিলেন
( সুনির্দিষ্টভাবে হত্যাকান্ড, ধর্ষন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে অভিযুক্তদের ব্যতীত) । অন্যদিকে শক্তিশালী সম্রাজ্যবাদী আমেরিকা, চীন, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচে্যর কতিপয় মুসলীম রাষ্ট্র যেকোন মুল্যে বংগবন্ধু’র উপর ৭১’ পরাজয়ের প্রতিশোধে নিতে কৃতিমভাবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি ও মিথ্যা অপর্প্রচার বংগবন্ধু’র জনপ্রিয়তাকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সমর্থ হয়। ফলশ্রুতিতে বংগবন্ধু’র হত্যাকান্ডের পরে খুনীদের তেমন কোন তাৎক্ষনিক বাঁধা বা প্রতিরোধের সন্মুক্ষীন হতে হয়নি সত্য তবে খুনীরা বুঝতে পারেনি জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক বেশী শক্তিশালী যা তাদের একদিন ফাঁসীর কাষ্ঠে ঝুলাবে।
৫.
বংগবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রধান সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধার লেবাসধারী জিয়াউর রহমান, পাকিস্তান ফেরত সামরিক কর্মকর্তা এরশাদ ও বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে বংগবন্ধু ও স্বাধীনতার যুদ্ধের নামনিশানা মুছে ফেলার চক্রান্তে আমাদের বিজয়ের ইতিহাসকে বিকৃত করার সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও আধুনিক তথ্যপ্রবাহের যুগে নুতন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস পর্যায়ক্রমে দিনের আলোর ন্যায় পর্যায়ক্রমে পরিস্কার হতে থাকে। যার ফলে স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরুধী অপরাধের জন্য রাজাকার আলবদরদের বিচার ও জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে জাতী ঐক্যবদ্ধ হয়। এই বিচার প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যে কয়েকজন অপরাধী মৃতু্যদন্ডে দন্ডিত হয়েছে এবং দুই জনের ফাঁসি ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছে। এই শাস্তি কার্যকরের মাধ্যমে অনেক হারানোর বেদনায় ও দেশের জনগন ফিরে পেয়েছে আত্মবিশ্বাস ও প্রশান্তি। জনগনের দাবীতে সাড়া দিয়ে শেখ হাসিনা সরকার অন্যান্য অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর করে দেশকে জামাত-শিবির মুক্ত অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।৬. রাজনৈতিক স্বাধীনতার সাথে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও আজ আমাদের দ্বারপ্রান্তে। বর্তমান সরকারের কৃষিনীতির সাফল্যে দেশ আজ খাদ্যে উদ্বৃত্ত, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন সারা বিশ্বে প্রসংষিত যার সুফল দেশের প্রতিটি মানুষ ভোগ করছে। পরাধীনতার আমলের দৈন্যদশা থেকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে চলছে, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর ন্যায় বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে চলছে। রপ্তানী বানিজ্য ও বিদেশের কর্মসংস্থান থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ঈর্ষনীয় পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের কুটনৈতিক সফলতায় প্রায় ভারতের সাথে অর্ধশতক বছরের অমিমাংষিত সীমান্ত চুক্তির সমাধান হযেছে, মায়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্র সীমানা নির্ধারনে ও আশাতীত বিজয় অর্জিত হয়েছে।
৭.
প্রাগঐতিহাসিক কাল থেকে বাংলার মানুষ শাসিত এ শোষিত হয়েছে পালবংশ, মোগল, ইংরেজ ও সর্বশেষ পাকিস্তানীদের দ্বারা। বাংলার মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়েছে বর্গী, মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের দ্বারা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে হয়েছে লন্ডভন্ড। জীর্নদশা বাংগালী জাতীকে বংগবন্ধু স্বাধীন ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তাঁর তেইশ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম, আন্দোলন সংগ্রাম, জেলজুলুম নির্যাতন উপেক্ষা করার কারনে সর্বশেষে ৭১ ‘এর মুক্তিযুদ্ধ ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে মহান বিজয় এনে দেয় আমাদেশ অনেক আকাংক্ষিত স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। পৃথিবীর মানচিত্রে ঠাঁই করে নেয় সবুজ লাল পতাকার একটি দেশ যা আমাদের গর্বিত ঠিকানা।এই স্বাধীনদেশের সকল সুযোগ সুবিধা আমরা দলমত নির্বিশেষে ভোগ করছি এমনকি যারা এ দেশের স্বাধীনতায় বিরুধীতাকারীরা করেছিল।
৮.
বংগবন্ধুর আজীবন ত্যাগ ও তীতিক্ষার সোনালী ফসল শান্তি, সুখে ভরপুর সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ যা আপামর জনসাধারণের একান্তই কাম্য। সে কারনেই বংগবন্ধু ধর্মবর্ন, ধনী, গরীব নির্বিশেষে আমাদের সকলের, সারা বাংলার আপামর জনসাধারণের, নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক দলের নহেন। রাজনীতিতে মত পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক গনত্রান্তিক উপপাদ্য হলেও সকল মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে জাতীয় শোক দিবসে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও পরম করুনাময়ের কাছে দোয়া করা আমাদের সকলের একান্ত কর্তব্য।
( মোঃ রফিক উদ্দিন, সাধারন সম্মাদক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া)