অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনারের সাথে মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময়

অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনারের সাথে মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময়

গত ১৯ নভেম্বর ২০১৫ বৃহস্পতিবার, দুপুর ১২.৩০ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশন অফিসে বিভিন্ন মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময়ের আয়োজন করেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনার জনাব কাজী ইমতিয়াজ হোসাইন। অস্ট্রেলিয়ার দায়িত্বভার গ্রহণের পর এটাই ছিল তার মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সাথে প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময়ের আয়োজন।

এই সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময়ের শুরুতে কাজী ইমতিয়াজ হোসাইন উপস্থিত সকল মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সাপ্তাহিক কার্যদিবসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের জন্য তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। মাননীয় হাইকমিশনার প্রথমেই বলেন বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রবাসে বাংলাদেশকে কিভাবে তুলে ধরছে এবং বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া’ সম্পর্ক কিভাবে আরো জোরদার করা যায় এ ব্যাপারে আলোচনা ও পরামর্শের জন্য মিডিয়ার গুরত্ত অপরিসীম। তিনি মিডিয়াকে অতান্ত শক্তিশালী গণমাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশীদের সার্বিক উন্নয়নে কি ধরণের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে এবং এ পর্যন্ত যে সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার বিস্তারিত কার্যকলাপ তুলে ধরার জন্য তিনি সকল মিডিয়ার সর্বাত্মক সহযোগিতা আশা করেন। তিনি আরও জানান প্রবাসে বিভিন্ন সময়ে হাইকমিশনের কার্যক্রম যথার্থভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অনেক সময়ই বিভিন্ন তথ্য প্রচারের প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে মিডিয়ার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার বিষয়টিকে অতান্ত গুরত্তপুর্ন বলে মনে করেন। তিনি বলেন, ফলপ্রসু প্রচারের মাধ্যমে মিডিয়াই একমাত্র বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে প্রশংসনীয় ভাবে তুলে ধরতে পারে।

প্রসঙ্গত উল্লখ্য যে, যদিও এটা ছিল তার প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ তারপরও বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া বিষয়ক অনেক গুরত্তপুর্ন ব্যাপারে তিনি সকল মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সাথে মত বিনিময় ও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। আলোচনার মধ্যে টেলিফোন বিষয়ক আইনগত জটিলতা, অভিবাসন-প্রক্রিয়া, শ্রম-ভিসা, রপ্তানি-বাণিজ্য ও ভোটাধিকার প্রসঙ্গ সহ আরো অনেক গুরত্তপুর্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। শ্রম-ভিসা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত বয়স ৩০ বছরের নীচে এবং বাংলাদেশে কর্মরত আছেন এমন ক্যাটাগরিতে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১০০ জন শ্রমিক অস্ট্রেলিয়ায় আসতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের সঠিক নির্দেশনা দেয়া ও কর্ম-সংস্থানের সুযোগ সৃষ্ঠি করে দেয়া আমাদের মিশনের একটি পদক্ষেপ হতে পারে। তিনি বাংলাদেশ হাই কমিশন অফিসের জন্য একটি স্হায়ী আবাস এবং ভবিষ্যতে সিডনী, মেলবোর্ন ও এডেলাইডে পর্যায়ক্রমে কনস্যুলেট অফিস খোলার আশ্বাস দেন।

রিটায়ার-ভাতা প্রসঙ্গে উপস্থিত সদস্যদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় যারা রিটায়ার করেছেন তারা বাংলাদেশে বসে রিটায়ার-ভাতা ও সোশ্যাল বেনিফিট গুলো পেতে পারেন কিনা এ বিষয়ে একটি পলিসি-ডিশিসান’ হবে আগামী বছরের মার্চ মাসে একটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বৈঠকে। এখনো পর্যন্ত ১৪/১৫ টি দেশের সাথে এ ধরনের একটি চুক্তি আছে এবং আমাদের কাছাকাছি দেশ ভারতে যেহেতু এ ধরণের একটি বাবস্থা চালু হয়েছে সুতরাং আমরাও এ ধরণের একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। তাই আগামী বছরের বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া’ দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় রিটায়ারমেন্ট-ভাতা’ ইস্যুটি একটি গুরত্তপুর্ন এজেন্ডা হিসেবে থাকবে।

উল্লেখ্য যে, ক্যানবেরাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মত বিনিময় সভায় অন্যান্য সকল মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মূলধারার মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এসবিএস এর এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার আবু রেজা আরেফিন, বাংলা সিডনি ডট কম এর সম্পাদক আনিসুর রহমান, ভয়েস অফ বাংলাদেশ এর পরিচালিকা ডঃ নার্গিস বানু, মুক্তমঞ্চের সম্পাদক আল নোমান শামীম, বিদেশ বাংলা টেলিভিশনের পরিচালক রহমত উল্লাহ্‌, বিদেশ বাংলা টুয়ান্টিফোর ডট কম এর সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, নবধারার সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং সুপ্রভাত সিডনির প্রতিবেদক ফজলে রাব্বী ও আব্দুল আউয়াল খান। দুপরের প্রীতি-ভোজে আপ্যায়ন শেষে আয়োজনের সমাপ্তি হয়।  ( সিডনি  প্রতিবেদক)