অনলাইন ডেস্ক:টেস্টে গত পাঁচ বছরে অভিষেক ইনিংসে পাঁচ উইকেটের কৃতিত্ব দেখালেন বাংলাদেশের চার জন বোলার। এ সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটের আর কোনো দলে তিন জনের বেশি খেলোয়াড়ের এমন নজির নেই। মেহেদীর কীর্তিতে অপর অনন্য রেকর্ডেও নাম উঠলো বাংলাদেশের। গত পাঁচ বছরে ক্রিকেটের সব ফরমেট মিলিয়ে অভিষেকে পাঁচ উইকেটের কৃতিত্ব দেখালেন বাংলাদেশের ৭ জন বোলার। এ সময়ে অন্য কোনো দলে এমন কীর্তি নেই।
গতকাল চট্টগ্রামে ২৯৩ রানে থামে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। ইংল্যান্ডের শেষ উইকেটটি নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ম্যাচের প্রথম দিনেই পাঁচ উইকেট শিকার পূর্ণ হয় মিরাজের। এতে গর্বের একাধিক রেকর্ডেও নাম ওঠে মিরাজের। টেস্টে ইনিংসে পাঁচ উইকেটের কৃতিত্ব দেখানো দ্বিতীয় বয়োকনিষ্ঠ খেলোয়াড় মেহেদী হাসান মিরাজ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংস মিরাজ এমন কৃতিত্ব দেখান ১৮ বছর ২৬১ দিন বয়সে। মিরাজের চেয়ে কম বয়সে ইনিংসে পাঁচ উইকেটের নজির রয়েছে এনামুল হক জুনিয়রের। মিরাজের চেয়ে কম বয়সে তিনবার পাঁচ উইকেটের কীর্তি রয়েছে এ বাঁ-হাতি স্পিনারের।
হাজারও মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বীরের বেশে জন্মস্থান খুলনায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন যুব বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি এখন খালিশপুরের হাউজিংয়ের নর্থ জোনের বি ব্লকের ৭ নম্বর প্লটের ভাড়া বাসায় অবস্থান করছেন। এখানে টিনের চালার ঘরে তাদের বসবাস।
মিরাজের বাবা মো. জালাল হোসেন পেশায় গাড়িচালক। মা মিনারা বেগম গৃহিনী। মিরাজের একমাত্র বোন রুমানা আক্তার মিম্মা। যুব বিশ্বকাপ শেষে মঙ্গলবার বিকালে মিরাজ খুলনার এই বাড়িতে এসেছেন। এখানেই জন্ম তার। এখানের আলো বাতাসেই তার বেড়ে ওঠা।
ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট পাগল ছিলেন মিরাজ। স্কুল ফাঁকি দিয়ে খেলতেন ক্রিকেট। বিএল কলেজ মাঠ থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লার ফুটপাত, গলির ফাঁকা স্থান সবখানেই ক্রিকেটে মেতে উঠতেন তিনি।
এ নিয়ে দরিদ্র বাবা-মায়ের কাছ থেকে কত বকা খেয়েছেন তার শেষ নেই। কিন্তু থেমে যাননি তিনি। সেই মিরাজ আজ বিশ্ব ক্রিকেটে যুবাদের সেরা। তাকে নিয়ে খুলনার মানুষ এতটাই আত্মহারা, যে নিজের গর্বিত বাবা-মাকেও সময় দিতে পারছেন না তিনি।
দরিদ্র পরিবার। অভাব অনটন লেগেই থাকত। ক্রিকেট খেলায় ছিল মিরাজের আগ্রহ। কিন্তু বাবা চাইতেন খেলার চেয়ে পড়ায় মনোযোগ রাখতে। তাই স্কুলের নামে বাসা থেকে বের হয়ে বই নিয়েই বিভিন্ন মাঠে ক্রিকেট খেলা দেখতে যেত । পরে নিজেও খেলতে শুরু । কিন্তু তার বাবা বিষয়টি জেনে গেলে তাকে অনেক বকা খেতে হয়েছিল । তখন খেলার প্রতি বাঁধা আসার কারণে জেদ আরও বেড়ে যেতে থাকে। চরম আগ্রহ নিয়ে ক্রিকেট খেলা শিখতে শুরু করে বিএল কলেজ মাঠে থাকা কোচ আল মাহমুদের কাছে। অনূর্ধ্ব ১৪ দলের বাছাইয়ে অংশ নিয়ে স্থান পাওয়ার পরই বদলে যেতে থাকে সব চিত্র।
(সূত্র: বাংলাট্রিবিউন )