মুক্তিযুদ্ধ গণহত্যা অস্বীকার করে পাকিস্তানি লেখকের বই “ক্রিয়েশন অব বাংলাদেশ: মিথস এক্সপ্লোডেড’”

মুক্তিযুদ্ধ গণহত্যা অস্বীকার করে পাকিস্তানি লেখকের বই “ক্রিয়েশন অব বাংলাদেশ: মিথস এক্সপ্লোডেড’”

ক্রিয়েশন অব বাংলাদেশ: মিথস এক্সপ্লোডেড’ক্রিয়েশন অব বাংলাদেশ: মিথস এক্সপ্লোডেড’

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যাকে অস্বীকারের পাশাপাশি গণহত্যার জন্য উল্টো মুক্তিবাহিনীর উপর দোষ চাপানোর মতো বিকৃত তথ্য-চিত্র সম্বলিত ‘ক্রিয়েশন অব বাংলাদেশ: মিথস এক্সপ্লোডেড’ নামে একটি বই লিখে প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের জনৈক জুনায়েদ আহমদ। বাংলাদেশের সৃষ্টি নিয়ে লেখা বিভ্রান্তিমূলক বইটি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা-আইএসআই পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে পাঠিয়ে এটি ‘মূল্যবান দলিল’ হিসাবে সংরক্ষণের জন্য রীতিমতো চিঠি লিখে অনুরোধ জানিয়েছে। এই অনুরোধ করেছেন পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অব ইন্টেলিজেন্স আমজাদ ইকবাল বাদল। এই ঘটনায় বিষ্ময় প্রকাশ ও তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘লাখো শহীদের রক্ত ও মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশ নিয়ে এই ধরনের অপপ্রচার অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের।       এই স্পর্ধা ও সাহস ওরা পেল কোথায়? পাকিস্তানের কাছে আমরা জোরালো প্রতিবাদ জানাবো।’ গতকাল বুধবার সংসদে দেওয়া অনির্ধারিত বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণার জন্য আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে। এ ব্যাপারে পাঠ্যপুস্তকেও বিস্তারিত তথ্য থাকতে হবে- যেন নতুন প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। সংসদেও প্রস্তাব আসতে পারে। এ ব্যাপারে আইনিভাবে কিছু করার থাকলে সেটিও ভেবে দেখা হবে। পাশাপাশি তথ্য-প্রমাণ পাঠিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের কাছেও আমরা দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসাবে পালনের জোর দাবি জানাব।

\শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ফের অপপ্রচার শুরু করেছে। পাকিস্তানিরা বই লিখে উল্টো মুক্তিবাহিনীর উপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের কৃতকর্ম ও গণহত্যা ঢাকা দেয়ার অপচেষ্টা করছে। গণহত্যার জন্য ওদেরই লজ্জা হওয়া উচিত। গণহত্যার দায় মুক্তিবাহিনীর উপর চাপানোর এই অপচেষ্টা গ্রহণযোগ্য নয়। একাত্তরের গণহত্যা, নির্মমতা, নির্যাতন, ধর্ষন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আমরা তাদেরকে মাফ চাইতে বলেছি। ওরা মাফ চায়নি। উল্টো এখন আমাদের উপর দোষ চাপানোর ধৃষ্টতা মেনে নেব না। আমি এই ঘটনার ধিক্কার জানাই। এই ধরনের বই লেখার ক্ষেত্রে এখান (বাংলাদেশ) থেকে কারা মদদ দিয়েছে সেটাও খুঁজে বের করা দরকার। যারা বিদেশি প্রভুদের মদদ দেয়, তাদেরও খুঁজে বের করা হবে।

 প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইয়াহিয়া কিভাবে সারাদেশে গণহত্য চালায়, মানুষকে হত্যা করে-তা নিজ চোখে দেখেছি। ঢাকার ধানমন্ডি, মিরপুর, পিলখানা, সাতমসজিদ রোডসহ বিভিন্ন স্থানে আমি নিজে লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন দেশটাকে শত্রুমুক্ত করার ঘোষণা দিলেন তখন আমাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। শুধু গণহত্যা নয়, কলাবাগান, ধানম্লিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ১৩/১৪ বছরের বাচ্চা মেয়েদের তুলে নিয়ে ধর্ষন করেছে, তাদের চিত্কার শোনা যেত। এ কাজে তাদের সহায়তা করেছিল রাজাকাররা। এদেশের সবাই নাকি হিন্দু হয়ে গেছে, এরকম কথা বলে তারা সেদিন আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। তারা মানুষ নয়, শুধু মাটিটা চেয়েছিল। (সূত্র:ইত্তেফাক)