গত ৮ই নভেম্বর, রবিবার, বিকেল চারটায় সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. খায়রুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে টেলিফোনের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। আরো বক্তব্য রাখেন এমদাদ হক, নির্মাল্য তালুকদার, ফয়সাল মতিন, মুনীর হোসেন, আইভি রহমান, সৈয়দা তাজমিরা আক্তার, নোমান শামীম, সানজিদা আফরিন সাদিয়া, মহীউদ্দীন কাদের প্রমুখ, বঙ্গবন্ধুর উপর কবিতা আবৃত্তি করে শোনান আবৃত্তিকার আরিফুর রহমান।
আলোচনা সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এস এম কামাল হোসেন বলেন, পচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনী মোস্তাক, সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ও তাদের দোসররা রাতের আঁধারে নিষ্ঠুরভাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে। সে সময়ে দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করে, রাতের পর রাত কার্ফ্যু জারী করে ঘাতক জিয়া দেশে সামরিকতন্ত্র কায়েম করে। জাতির সেই দুর্দিনে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু কন্যা , আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তারপর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে মানুষের ভোট-ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন। তিনি বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন। এস এম কামাল হোসেন তার বক্তৃতায় করোনা মোকাবেলায় মাননীয় প্রধান শেখ হাসিনার সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, সারা পৃথিবী যেখানে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় হিমশিম খেয়েছেন, সেখানে বাংলাদেশে জননেত্রী শেখ হাসিনার সফলভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন এবং করছেন। প্রবাসীদের কাছে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে, শেখ হাসিনা হাসলে বাংলাদেশ হাসবে।
সভায় অন্য বক্তারা বলেন, রাজনীতিতে আদর্শ ও নেতার প্রতি আনুগত্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। পচাত্তরের ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতা সর্বশ্রদ্ধেয় সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, তাজউদ্দিন আহমেদ এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামান জীবন দিয়ে দেশ, দল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রমান করেছেন। পচাত্তরের পনেরোই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে জেলখানায় হত্যার মূল উদ্দেশ্যই ছিল, যাতে আওয়ামী লীগ আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। বাংলাদেশের বুক থেকে যেন স্বাধীনতার চেতনা মুছে যায়। আজ প্রমাণিত হয়েছে, ঘাতকদের সেই লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। প্রবাসে অবস্থান করে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে স্ব স্ব অবস্থান থেকে আমরাও দেশের জন্য কাজ করে যাবো। আলোচনায় বক্তারা জাতীয় চার নেতার জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সভায় অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেশন পার্টির পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জেলহত্যাকাণ্ডের নিন্দা জ্ঞাপন করে নিহত জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
আলোচনা সভার শেষে ল্যাকেম্বায় অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের নতুন অফিসের উদ্বোধন করা হয়।