সিডনি বাঙ্গালী কমিউনিটি ইনক্ এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে সিডনির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ঈদ এক্সিবিশন । গত ৩ জুলাই ২০২২ সিডনির ইঙ্গেলবার্ন কমিউনিটি হলে ঈদ এক্সিবিশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ারিয়া ফেডারেল আসনের প্রাক্তন ফেডারেল এমপি বাংলাদেশীদের প্রিয় বন্ধু লরি ফার্গাসন।লরি ফার্গাসন তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেন,” অস্ট্রেলিয়ার মাল্টিকালচারাল সোসাইটিতে আমরা মুসলমানদের সব ধরণের ধর্মীয় উৎসব সবসময় আনন্দের সাথে উৎযাপন করি। আর বিগত কয়েক বছর ধরে আমার নির্বাচনী এলাকার অন্যতম পরিচিত নারী সংগঠক, নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে ঈদের আগে মুসলমানদের ঈদ উৎসবকে আনন্দময় করে তোলার জন্য একটি আকর্ষণীয় ঈদ এক্সিবিশনের আয়োজন করে আসছে। আমি প্রতিবারই এই এক্সিবিশনে আসি এবং উপমহাদেশের নানা ধরণের সৌখিন সব জিনিস দেখে মুগ্ধ হই। অস্ট্রেলিয়ার মাল্টিকালচারাল পরিবেশে নিজ নিজ সংষ্কৃতি ,ভাষা এবং ঐতিহ্যকে ধরে রাখার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন এবং সিডনী বাঙ্গালী কমিউনিটির আয়োজিত ঈদ এক্সিবিশনের ভুয়াসী প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন নিজেদের উৎসব এবং সংষ্কৃতিকে ধরে না রাখলে তিন জেনেরেশন পর সংষ্কৃতিগুলো সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে যায়”লরি আরো বলেন, “আমি বাংলাদেশে গিয়েছিলাম ,আমি বাংলাদেশের ইতিহাস ,সংস্কৃতি ও আতিথিয়তা সম্পর্কে খুবই পরিচিত। বাসায় থেকে নারীরা কাজ করে উপার্জন করা , আর এই নারীদের একত্রিত করে তাদেরকে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে ঈদ এক্সিবিশনের আয়োজন সফল করার জন্য সেলিমা বেগম সত্যি একটি প্রশংসনীয় কাজ করে যাচ্ছে। এতে অস্ট্রেলিয়ার মাল্টি কালচারাল সমাজে বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ানদের মান আরও উন্নত করছে। “আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে সেলিমা বেগম বলেন,”মূলত নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে শুরু করেছিলাম এই ঈদ এক্সিবিশন ২০১৯ সালে, করোনা ভাইরাসের কারণে কিছুটা স্তিমিত হলেও আজ আমাদের এই ঈদ এক্সিবিশন সিডনির প্রতিটি কর্নারের মানুষের একটি প্রিয় ঈদ কেনা কাটার জায়গা। আমি মনে করি উদ্যোক্তারা ভালো ডিজাইন ,মান নিয়ন্ত্রণ এবং ক্রেতাদের সাথে সম্পৃক্ত থাকলে, মূল্য দিয়েও সঠিক দ্রব্য কিনতে কোনো দ্বিধা করে না এবং ক্রেতারা বার বার ফিরে আসে। আর এই ঈদ এক্সিবিশন তারই একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।”সিডনির নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৩৫ টি নামকরা বুটিক হাউজে ছিল হাল ফ্যাশনের বিভিন্ন ধরণের উপমহাদেশীয় গহনা , শাড়ি , কামিজ , কুর্তী ,পার্টি ড্রেস, সারারা, ঘাড়ারা, চাদর, কটি, বাহারী ডিজাইনের মেয়েদের কোট, শিশুদের পোষাক এবং ছেলেদের পাজামা-পাঞ্জাবি, কুর্তি ও জুতার প্রদর্শনী ছিল।প্রচন্ড বৃষ্টি এবং শীত থাকা সত্ত্বেও ,সারাদিন ব্যাপী এই এক্সহিবিশনে সিডনির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে শত শত বাঙালিরা। সারাদিন ব্যাপী এই আয়োজনের সর্বত্র ছিল উচ্ছাস এবং আনন্দের প্রবাহ। পুরো কমিউনিটি হলটি ছিল বেলুন, পোস্টার এবং আলপনা দিয়ে সাজানো। সারাদিন ব্যাপী প্রচুর বাংলাদেশী লোকজন শেষ ঈদ কেনাকাটার জন্য আসেন।ক্রেতা এবং বিক্রেতা সবাই ইঙ্গেলবার্ণের ঈদ এক্সিবিশনটির জন্য অত্যন্ত উৎসাহ ভরে অপেক্ষা করে।অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে গণ বসতিপূর্ণ রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলস যেখানে পৃথিবীর সব কয়টি দেশের লোকজনের বসবাস রয়েছে এবং বছরজুড়ে চলে নানা দেশীয় ও ধর্মীয় উৎসব। অস্ট্রেলিয়া সরকার এতে উৎসাহ দিয়ে আসছে বহু বছর ধরেই। মুসলমানদের ক্ষেত্রেও এর প্রতিফলন রয়েছে।ঈদ এক্সিবিশনের আয়োজকের মূল ফোকাস ছিল অস্ট্রেলিয়ার মাল্টি কালচারাল পরিবেশে বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ানরা ঈদ করুক বাংলাদেশী আমেজে, দেশীয় আনন্দে।এক্সিবিশন শেষে সিডনী বাঙ্গালী কমিউনিটির পক্ষ খেকে সেলিমা বেগম বুটিক ক্লাবের সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং আগামী বছর আরো জাকজমকপূর্ণ ভাবে ঈদ এক্সিবিশন করার ঘোষণা দেন। ঈদ এক্সিবিশনের সার্বিক পরিচলনা এবং পরিকল্পনায় ছিলেন সেলিমা বেগম এবং আবু তারিক। সার্বিক সহায়তায় ছিলেন অজয় দত্ত, অর্পিতা সোম, সাকিনা আক্তার, আফরিনা মিতা, লুৎফান হাদী, ঐহিক তারিক। স্পন্সরে সহায়তা করে লিংকার্স বিল্ডারস এবং ক্যাম্বেলটাউন ফার্মেসী।এক্সিবিশনটির সফলতা এবং পূর্ণতা বয়ে আনে সিডনী বাঙ্গালী বুটিক ক্লাবের সক্রিয় সদস্যদের পূ্র্ণ সহযোগীতায়।
Attachments area