শিশু আরিককে চিরদিনের জন্য রেখে এলাম কেমপ্স ক্রিক মেমোরিয়ালে!

শিশু আরিককে চিরদিনের জন্য রেখে এলাম কেমপ্স ক্রিক মেমোরিয়ালে!

অরিক হাসানকে আজ সিডনির লাকেম্বা মসজিদে বাদ জুম্মা জানাজা শেষ করে সিডনির কেমপ্স ক্রিক মেমোরিয়ালে নিয়ে যাওয়া হয় দাফনের জন্য। সেখানে পরিবারের লোকজন ছাড়াও শত শত কমিউনিটির লোকজন জড়ো হয়। দ্বিতীয় জানাজা শেষ করে আজ বিকেল ৪:২০ এর দিকে অরিক হাসানকে কবরে চিরদিনের জন্য শায়িত করে রেখে আসে বাবা মা সহ পরিবারের লোকজন। তিন বছরের শিশুটিকে রেখে যাবার পরে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য, শুধুই অনুভব করা যায় মাত্র।
উল্লেখ্য,গত বৃহস্পতিবার সকালে বড় সন্তান আরাফকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে বাড়ি চলে আসেন নেওয়াজ হাসান। কিন্তু গাড়িতে রয়ে যায় ছোট সন্তান আরিক। বেলা তিনটায় নেওয়াজ বড় সন্তানকে স্কুল থেকে নিয়ে ফেরার সময় গাড়ির পেছনের আসনে অচেতন অবস্থায় আরিককে দেখতে পান।
ছেলের এই অবস্থা দেখতে পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়াসহ জরুরি সেবায় কল করেন। কিন্তু প্যারামেডিক এসে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে। সেদিন সিডনির তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।উম্মাদ বাবা দৌড়ে এসে গাড়িতে হাত দিয়ে ঘুষি দিয়ে নিজের হাতকে রক্তাক্ত করেন আর কাঁদতে থাকেন।
অরিকের মৃত্যুর পরে, পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে কোনো ক্লু না পেয়ে বাবা নেওয়াজের বিরুদ্ধে কোনো চার্জশিট না দাখিল করে বাসায় পাঠিয়ে দেন সেদিন সন্ধ্যার পরই।
নিউজ জাতীয় সংবাদে আসার পরে সোশ্যাল মিডিয়াতে নানা ধরণের ট্রলে ছেলে হারানোর ব্যাথায় কাতর বাবাকে মানসিকভাবে ক্ষত বিক্ষত করে ফেলা হয়। ব্যাপক যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে, বাবা নেওয়াজ হাসান ডেইলি টেলিগ্রাফে গত দুই দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি টেলিগ্রাফে বলেন,“আমি সাধারণত ডে কেয়ারে নেবার সময় আমার ছেলের সাথে গাড়িতে কথা বলি, কিন্তু ঘটনার আগের রাতে অরিক ভালো ঘুমায়নি, তাই ঘুমে দেখে আমি ওকে জাগাইনি।”
“গাড়িতে তার নীরবতার কারণে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে গাড়িতে অরিক আছে।”
তিনি সকল বাবা মাকে সন্তানের ব্যাপারে ১২০ % নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানান।