পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) কর্মকর্তারা ঘুষ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে ভালো প্রতিবেদন জমা দেন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি আরও বলেছেন, ‘আপনারা ঘুষ খান, কিন্তু সহনীয় মাত্রায় খান।’
রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) শিক্ষাভবনে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) সম্মেলনকক্ষে অধিদফতেরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ল্যাপটপ ও প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
এক উদাহরণ দিতে গিয়ে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) কর্মকর্তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে ঘুষের বিনিময়ে তারা ওই প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে ভালো প্রতিবেদন দেন। স্কুল পরিদর্শনে গেলে খাম রেডি করাই থাকে। তবে আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা ঘুষ খান, কিন্তু সহনীয় হয়ে খান। কেননা, আমার এটা বলার সাহসই নেই যে, ঘুষ খাবেন না। তা অর্থহীন হবে।’
প্রায় সবখানেই ঘুষ লেনদেন হচ্ছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘খালি যে অফিসাররা চোর, তা না। মন্ত্রীরাও চোর। আমিও চোর। এ জগতে এমনই চলে আসছে। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।’ বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতি কমেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের এমন বক্তব্যের ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি রবিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘যারা ওইসব রিপোর্ট করেন, তারা কথাই বোঝেন না। আমি বলেছি, কর্মকর্তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গিয়ে একসময় মাত্রাতিরিক্ত ঘুষ খেতেন। স্কুলে গেলেই খাম ধরিয়ে দিতেন। তখন থেকে তাদেরকে হুঁশিয়ারি দিয়েছি, জিরো টলারেন্স নিয়েছি। আমরা তখন বলেছিলাম, ঘুষ খেলেও সহনশীল মাত্রায় নামিয়ে আনেন। কিন্তু এখন আমরা আরও কঠোর হয়েছি। তাদের ঘুষ খাওয়াসহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছি। এই কথাটিই আমি উদাহরণ হিসেবে বলেছি। তারপর তাদের হাতে ল্যাপটপ তুলে দিলাম। এখন যদি এটা নিয়ে আবার রিপোর্ট করা হয়, তাহলে তো কথাই বলা যাবে না দেখছি।’
ডিআইএ’র পরিচালক অধ্যাপক আহমদ সাজ্জাদ রশিদ এ বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মন্ত্রী আগের একটি বিষয়কে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি তো মজা করে অনেক সময় অনেক কথাই বলেন। তিনি আসলে ঘুষ খাওয়ার কথা বলেননি। তিনি উদাহরণ দিয়েছেন মাত্র।’
ডিআইএ’র পরিচালক অধ্যাপক আহমদ সাজ্জাদ রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব আহমেদ শামীম আল-রাজী এবং ডিআইএ’র যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ২৭ জন কর্মকর্তার মধ্যে ল্যাপটপ বিতরণ করেন। পরিদর্শন ও নিরীক্ষা এবং ই-ফাইলিং শীর্ষক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের সনদও বিতরণ করেন মন্ত্রী।
(বাংলা ট্রিবিউন)